দুই বেসরকারি মেডিকেল ও এক ডেন্টাল কলেজসহ তিন প্রতিষ্ঠানে চলতি শিক্ষাবর্ষে (২০১৭-২০১৮) এমবিবিএস প্রথম বর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তির ওপর স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। মেডিকেল কলেজগুলো হলো, বসুন্ধরা আদ-দ্বীন মেডিকেল কলেজ, কেরানীগঞ্জ ও সিটি মেডিকেল কলেজ, গাজীপুর এবং সাফেনা ডেন্টাল কলেজ, ঢাকা।
অপরদিকে চার বেসরকারি মেডিকেল কলেজে স্থগিতাদেশ বহাল রাখা হয়েছে। মেডিকেল কলেজগুলো হলো আশিয়ান মেডিকেল কলেজ, খিলক্ষেত, নর্দান ইন্টারন্যাশনাল কলেজ ধানমন্ডি, আইচি মেডিকেল কলেজ, ঢাকা ও কেয়ার মেডিকেল কলেজ, মোহাম্মদপুর। সম্প্রতি স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক সভায় এ সাতটি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার ও বহালের সিদ্ধান্ত হয়। শর্তসাপেক্ষে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারকৃত কলেজগুলোকে আগামী ৩০ জুনের মধ্যে শর্ত পূরণের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেয়া হয়।
বসুন্ধরা আদ-দ্বীন মেডিকেল কলেজ
রাজধানীর উপকণ্ঠে কেরানীগঞ্জের এ কলেজকে চারটি শর্ত পূরণ সাপেক্ষে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করা হয়। শর্তগুলো হলো, মেডিকেল কলেজের নিজস্ব নামে নীতিমালা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় চার একর জমি ‘বসুন্ধরা আদ-দ্বীন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল’এর নামে রেজিষ্ট্রিমূলে নাম জারি করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা, হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা ২৫০ এ উন্নীত ও প্রত্যেক ওয়ার্ডে শতকরা ১০টি শয্যা বিনামূল্যে সংরক্ষণ করে মার্কিং, বিএমডিসির শর্তানুযায়ী প্রয়োজনীয় শিক্ষক নিয়োগ এবং গ্যালারির আধুনিকায়ন ও বেড অকুপেন্সি বৃদ্ধি করতে হবে।
গাজীপুর মেডিকেল কলেজ, গাজীপুর
এক ডজন শর্ত পূরণের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়ে গাজীপুর সিটি মেডিকেল কলেজের ওপর থেকে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করা হয়। শর্তসমূহের মধ্যে রয়েছে স্থানীয় আমানতের এক কোটি টাকা তফসিলি ব্যাংকে জমা প্রদান করে মন্ত্রণালয়কে অবহিত এবং গচ্ছিত টাকা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ছাড়া উত্তোলন করা যাবে না এই মর্মে ব্যাংক হিসেবে বিশেষ নির্দেশাবলী প্রদান করতে হবে। গাজীপুর এলাকায় মেডিকেল কলেজের নিজস্ব নামে নীতিমালা অনুযায়ী, প্রয়োজনীয় চার একর জমি ‘বসুন্ধরা আদ-দ্বীন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল’এর নামে রেজিষ্ট্রিমূলে নাম জারি করে ৩০ জুনের মধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে অবহিত করতে হবে।
মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের প্রয়োজনীয় সুবিধা সম্বলিত ৩ লাখ ২০ হাজার বর্গফুটের ব্যবস্থা আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে করতে হবে। এ বিষয়ের অগ্রগতি তিন মাস পরপর মন্ত্রণালয়কে অবহিত করতে হবে। আগামী ৩০ মার্চের মধ্যে ৪শ’শয্যার হাসপাতালের লাইসেন্স স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে সংগ্রহ করে মন্ত্রণালয়কে অবহিত করতে হবে। ৩০ নভেম্বরের মধ্যে হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা ৪শ’তে উন্নীত ও প্রত্যেক ওয়ার্ডে শতকরা ১০টি শয্যা বিনামূল্যে সংরক্ষণ করে মার্কিং করতে হবে। আগামী ৩০ মার্চের মধ্যে নীতিমালা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে।
প্রতি তিনমাসে একবার গর্ভনিং বডির সভা করে তা মন্ত্রণালয়কে অবহিত করতে হবে। সুষ্ঠুভাবে পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সুসজ্জিত ল্যাব ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতিসহ অন্যান্য শিক্ষা উপকরণ ও লাইব্রেরিতে প্রয়োজনীয় বই রাখতে হবে। আগামী ৩০ জুনের মধ্যে জেনারেটরসহ লিফট স্থাপন করতে হবে। শিক্ষার্থীদের আবাসিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। তাত্ত্বিক ও প্রায়োগিক শিক্ষার মানোন্নয়নের জন্য শিক্ষকরা ছাত্রছাত্রীদের মনিটরিং করবেন এবং পরামর্শকরা মন্ত্রণালয়কে অবহিত করবেন। হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের যাবতীয় তথ্য রেজিষ্ট্রারে সংরক্ষণ করবেন। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সব শর্ত পূরণ না হলে অনুমোদন বাতিল হবে।
সাফেনা ডেন্টাল কলেজ, মালিবাগ
ডেন্টাল কলেজের নিজস্ব নামে নীতিমালা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় জমি বেসরকারি ‘সাফেনা ডেন্টাল কলেজ ও হাসপাতাল’ এর নামে রেজিষ্ট্রিমূলে নাম জারি করে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগকে অবহিত করতে হবে। ডেন্টাল শিক্ষার জন্য কলেজ ও হাসপাতালে প্রয়োজনীয় সুযোগ সুবিধা সম্বলিত নীতিমালা অনুসারে ফ্লোর স্পেসের ব্যবস্থা করতে হবে। এ বিষয়ে অগ্রগতি তিনমাস পর মন্ত্রণালয়কে অবহিত করতে হবে। হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা বাড়াতে হবে ও প্রত্যেক ওয়ার্ডে শতকরা ১০টি শয্যা বিনামূল্যে সংরক্ষণ করে মার্কিং করে রাখতে হবে। বিএমডিসির নীতিমালা অনুসারে শিক্ষক নিয়োগ দেয়ার শর্তারোপ করা হয়।