আগামী বছরের বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব হবে ১২ থেকে ১৪ জানুয়ারি আর দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমা ১৯ থেকে ২১ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
নিরাপত্তার জন্য যা যা প্রয়োজন বিশ্ব ইজতেমা মাঠে তা রাখা হবে বলে জানান মন্ত্রী। টঙ্গীতে বিশ্ব এজতেমার নিরাপত্তা ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে সোমবার সচিবালয়ে আয়োজিত বৈঠক শেষে মন্ত্রী এ কথা জানান।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিবারের মতো এবারও যাতে সুন্দর ও নিরাপদভাবে ইজতেমা শেষ করতে পারি এজন্য আরও কিছু করার প্রয়োজন আছে কি না এ জন্য সবার সঙ্গে আলোচনা করেছি। ইজতেমাস্থলে প্রতিবারের মতো এবারও ইউনিফর্মধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে পুলিশ, রর্যাব, আনসার ও প্রয়োজনীয়সংখ্যক নিরাপত্তা বাহিনী থাকবে। নিরাপত্তার জন্য যা যা প্রয়োজন সবকিছুই সেই মাঠে আমরা রাখব।’
তিনি বলেন, ‘তাবলিগ জামায়াতের এই আয়োজনটা সারা বিশ্বের নজর কেড়েছে। এটা যাতে সুন্দর ও নিরাপত্তার সাথে সম্পন্ন হয় সেজন্য আমরা বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
ইজতেমার নিরাপত্তার জন্য কোনো হুমকি আছে কি না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘এখন পর্যন্ত কোনো থ্রেটের কথা আমরা জানি না। আমরা মনে করি, যে কোনো সময় যে কোনো কিছু হতে পারে। সেজন্য গোয়েন্দা থেকে আরম্ভ করে আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী সবসময় সজাগ থাকবে এবং রয়েছে।’
ভিভিআইপি-ভিআইপিদের ইজতেমা স্থলে যাতায়াত ও অবস্থানের সময় বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘বিদেশি মেহমানদের নিরাপত্তার জন্য আর্চওয়ে ও বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হবে। আখেরি মোনাজাতের সময় মুসল্লীদের যাতায়াত ব্যবস্থা সুগম করার জন্য বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হবে।’
‘ডিআইজি ঢাকা রেঞ্জ একটি কেন্দ্রীয় কন্ট্রোল রুম স্থাপন করবেন। বিভিন্ন বাহিনীর কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে কেন্দ্রীয় কন্ট্রোল রুমের লিঁয়াজো থাকবে। ইজতেমা স্থানে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ, পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশনের ব্যবস্থা থাকবে।’
ইজতেমা স্থলে ফায়ার সার্ভিসের একটি কন্ট্রোল রুম থাকবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘জরুরি প্রয়োজনে অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার পাম্প, রেসকিউ বোর্ড ও ডুবুরি টিম থাকবে। জরুরি স্বাস্থ্য সেবা দিতে আটটি মেডিকেল সেখানে (ইজতেমা মাঠে) থাকবে। এছাড়া রেড ক্রিসেন্টের একটি মেডিকেল টিম সেখানে থাকবে।’
ইজতেমা শুরুর সাতদিন আগে যাতায়াত ব্যবস্থা জানিয়ে দেওয়া হবে এবং প্রতি বিভাগের জন্য আলাদা গাড়ি পার্কিং এরিয়া থাকবে বলেও জানান আসাদুজ্জামান খান।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বিদেশি মেহমানদের জন্য গতবার যেটা ছিল, তাদের দেশ থেকে তাবলিগ-জামায়াতের স্পেশাল ভিসা দেওয়া হয় তা নিয়ে আসবেন। যেখানে আমাদের মিশন নেই সেসব দেশের অধিবাসীদের অন-অ্যারাইভ্যাল ভিসা আমরা দেব। আমাদের এখানকার তাবলিগের লোকজন যাদের রিকমান্ড করবেন, তাদেরই আমরা ৩০ দিনের জন্য ভিসা দেব।’
রোহিঙ্গারা ইজতেমায় অংশ নিতে পারবেন কিনা- জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘রোহিঙ্গারা হল বিদেশি, এরা আমাদের দেশি নয়। বিদেশিরা যে রকমভাবে এখানে আসবেন, রোহিঙ্গাদের বেলায়ও সেই আইনটি প্রচলিত থাকবে।’
বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দীন, সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব ফরিদ উদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী, পুলিশের মহাপরিদর্শক একেএম শহীদুল হক, বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবুল হোসেন, র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়াসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।