পরীক্ষা শেষে বাড়ী ফেরার পথে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান ও বিএম কলেজের (অনার্স) সম্মান শ্রেনীর মেধাবী ছাত্রীকে কুপিয়ে জখম করেছে বখাটে।
শনিবার (১৪ অক্টোবর) উজিরপুর উপজেলার ধামুড়া স্কুলের সামনে এই ঘটনা ঘটেছে। আহত কলেজ ছাত্রী শান্ত খানমকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সে আগৈলঝাড়া উপজেলার রত্মপুর গ্রামের মৃত মোস্তফা হাওলাদারের মেয়ে এবং বিএম কলেজের রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের সম্মান প্রথম বর্ষের ছাত্রী। তাকে জখম করা বখাটে হলো-উপজেলার শোলক ইউনিয়নের কাংশি গ্রামের ফজলুল সরদারের বখাটে ছেলে আলাল সরদার।
ছাত্রীর মা নিলুফা বেগম জানান, মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান শান্তার বাবা ছিল প্রতিবন্ধি। শান্তা মেধাবী হওয়ায় এলাকাবাসীর সহায়তায় তাকে পড়াশুনা করানো হচ্ছে। সে যখন ধামুড়া কলেজে পড়তো, তখন থেকে তাকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে উত্যক্ত করতো আলাল।
প্রস্তাবে সাড়া না দেয়ায় সব সময় কন্যাকে উত্যক্ত করতো সে। তখন বাধ্য হয়ে কন্যাকে উত্যক্ত না করার জন্য আলালসহ তার অভিভাবকদের কাছে অনুনয় বিনয় করেন মা। এরপরেও কন্যাকে উত্যক্ত করা থামেনি। কলেজে আসা যাওয়ার পথে উত্যক্ত করতো আলাল। তবুও বখাটে আলালের প্রেমের প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি শান্তা। তাই শান্তার উপর ক্ষিপ্ত হয় বখাটে আলাল।
তিনি আরো জানান, ১৪ অক্টোবর বিএম কলেজে পরীক্ষা দিয়ে বান্ধবী টুম্পা ও পাপিয়ার সাথে বাড়ি ফিরতে ধামুড়া এসে ভ্যানে উঠে। তখন আলাল দুই সহযোগি নিয়ে এসে কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই হামলা করে। বখাটে আলাল সাথে থাকা ধারালো ক্ষুর দিয়ে কপাল থেকে গলা পর্যন্ত আঘাত করে পালিয়ে যায়।
আকস্মিক হামলা ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে ক্ষত জখম হওয়া শান্তা অজ্ঞান হয়ে পড়ে। তখন স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়। কিন্তু জ্ঞান না ফেরায় দ্রুত তাকে শেবাচিম হাসপাতালে পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় ধামুড়া ফাড়িতে তাৎক্ষনিকভাবে অভিযোগ দিয়েছে তার মা।
রত্নপুর ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা সরদার জানিয়েছেন বখাটে আলাল সব সময় শান্তাকে উত্যক্ত করতো। মেধাবী ছাত্রী শান্তা এলাকাবাসীর সহায়তায় পড়াশুনা করতো। এই ঘটনাকে জঘন্য হিসেবে অভিহিত করে বখাটের কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন তিনি।
উজিরপুর থানার ওসি তদন্ত হেলাল উদ্দিন ঘটনা সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বখাটেকে গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। তাছাড়া শেবাচিম হাসপাতালের জরুরী বিভাগে দায়িত্বে থাকা ইমারজেন্সি মেডিকেল অফিসার ডা. শুভ্রত পাল জানান, ছাত্রীর কপাল থেকে ঠোট এবং দাড়ি পর্যন্ত মোট ১২টি সেলাই রয়েছে। তাকে শেবাচিমের মহিলা সার্জারী ইউনিট-১ এর অধিনে ভতি করা হয়েছে।
তিনি বলেন, শান্তা নামের ওই ছাত্রী তেমন আশংকাজনক নন। তার পাল্স, ভিপি ভালো আছে। তার পরেও তাকে হাসপাতালে ভর্তি রেখে পর্যবেক্ষনে রাখা হয়েছে। পরীক্ষা নিরীক্ষা না করিয়ে এর বেশি কিছু বলা সম্ভব নয় বলে জানান তিনি।