জেলায় ৪৮ টি ও বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি) এলাকায় ৪ টি হাটে আজ থেকে শুরু হলো কোরবানির পশু বিক্রি। এই কার্যক্রম চলবে ঈদের দিন সকাল পর্যন্ত। করোনা পরিস্থিতিতে এসব হাট পরিচালনার ব্যাপারে বিশেষ নির্দেশনা জারি হয়েছে ইতোমধ্যে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে এসব হাটে কোরবানির পশু কেনা বেচার ব্যাপারে বরিশাল জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় পুলিশ বিশেষ নজরদারি রাখবে।
বিসিসি’র বাজার শাখার পরিদর্শক মোঃ রেজাউল করীম জানান, নগরীর ৬ নং ও ২৯ নং ওয়ার্ডের স্থায়ী হাটের সঙ্গে এবার অস্থায়ী ভাবে ৩নং ও ২৪ নং ওয়ার্ড দুটিতে একটি করে হাটের ইজারা দিয়েছে সিটি করপোরেশন। এর মধ্যে অস্থায়ী ভিত্তিতে ২৪ নং ওয়ার্ডের হাট বসবে শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত (দপদপিয়া) সেতুর নীচে এবং ৩ নং ওয়ার্ডের হাটটি বসবে কাউনিয়া টেক্সটাইল মিলের পার্শ্ববর্তী বটতলা বালুর মাঠে। তিনি নিশ্চিত করেন, এই চারটি হাট সহ জেলার অন্যান্য হাটগুলোয় কোরবানির পশু বিক্রি শুরু হবে আজ শনিবার থেকে।
বরিশাল জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার শাখার পরিচালক শরীফ মোঃ হেলান উদ্দিন জানান, বরিশাল জেলায় ২৩ টি স্থায়ী হাটের সঙ্গে গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ২৫ টি অস্থায়ী হাট পরিচালনার অনুমোদন দেয়া হয়েছে। তবে অস্থায়ী হাটের সংখ্যা আরো কিছু বাড়তে পারে। তিনি উল্লেখ করেন, অনুমোদিত অস্থায়ী হাটগুলো আজ শনিবার থেকে শুরু হয়ে ঈদের দিন সকাল পর্যন্ত পরিচালিত হবে।
এসব হাটে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি রক্ষায় কাজ করবে বরিশাল জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসক এস এম অজিয়র রহমান জানান, হাটগুলোতে সকল ক্রেতা- বিক্রেতাদের জন্য মাস্ক ও প্রয়োজনীয় করোনা ভাইরাস প্রতিরোধক সামগ্রী ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। একই সঙ্গে প্রতিটি হাটের সম্মুখে জীবাণু প্রতিরোধে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা রাখা হবে।
তিনি আরো উল্লেখ করেন, হাটের পশুগুলো একটি থেকে আরেকটি যেন নির্দিষ্ট দূরত্বে থাকে সেজন্য হাট পরিচালনাকারীদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে হাটগুলোতে প্রবেশপথ ও বের হবার পথ আলাদা রাখার ব্যবস্থা করা হবে। এতে করে হাটের ভিতরে গাদাগাদি কম হবে।
বরিশালের হাটগুলো যেন করোনা ভাইরাস সংক্রমণের অন্যতম স্থান হিসেবে তৈরি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখার কথা জানালো বরিশাল জেলা ও মেট্রোপলিটন পুলিশ। জেলা পুলিশ সুপার মোঃ সাইফুল ইসলাম জানান, জেলার প্রতিটি হাটে তাদের টহল টিম সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতে কাজ করবে। হাট পরিচালনার জন্য সরকার থেকে যে সকল স্বাস্থ্যবিধি ঠিক করে দেয়া হয়েছে সেগুলো যেন যথাযথ ভাবে অনুসরণ করা হয় সেটা তদারকি করবে এসব টিম।
তিনি আরো জানান, প্রতিটি হাট যেন খোলা স্থানে হয় এবং কেউ যেন মাস্ক ছাড়া হাটে প্রবেশ না করতে পারে সে বিষয়ে খেয়াল রাখবে জেলা পুলিশ।
অন্যদিকে, বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ (বিএমপি) কমিশনার শাহাবুদ্দিন খান জানান, কোরবানির ঈদ উপলক্ষে গণপরিবহন এবং হাটগুলো যেন করোনা সংক্রমণের হটস্পট না হয় সেদিকে খেয়াল রাখছেন তারা। এছাড়া কোরবানির পশু কিনতে যেন ক্রেতারা অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করেন সে বিষয়ে উৎসাহিত করবে বিএমপি।
তবে করোনা সংক্রমণ রুখতে জনসাধারণের সচেতনতা বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন এই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘করোনা ভাইরাসের ভয়াবহতা এবং এটা কিভাবে বিস্তার লাভ করে সে ব্যাপারে বর্তমানে সকলেরই কম-বেশি ধারণা আছে। তাই নিজেদের সুরক্ষার জন্য যদি নিজেরাই আগ্রহী হন তবে পুলিশের কাজ সহজ হয়ে যায়’।