চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির আমন্ত্রণে আওয়ামী লীগের ২০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল এক সপ্তাহের সফরে দেশটিতে যাচ্ছে। মঙ্গলবার রাতে প্রতিনিধি দলটির ঢাকা ত্যাগ করার কথা।
বিগত সফরগুলোতে উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল উপস্থিত থাকলেও এবারের সফরে শীর্ষপর্যায়ের উল্লেখযোগ্য কোনো আওয়ামী লীগ নেতাকে দেখা যাচ্ছে না। এ কারণে এবারের সফর নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের মাঝে ‘আগ্রহ কম’- এমনটি মনে হচ্ছে। দলটির প্রতিনিধি দলেও সেই প্রভাব লক্ষ্য করা গেছে। চীন সফর শেষে আগামী ১১ সেপ্টেম্বর প্রতিনিধি দলটির ঢাকা পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরুর নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে রয়েছেন তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আফজাল হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর, ক্রীড়া সম্পাদক হারুনুর রশীদ, উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য দীপংকর তালুকদার, অ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহ, অ্যাডভোকেট এ বি এম রিয়াজুল কবীর কাওছার, রফিকুর রহমান, আমিরুল ইসলাম মিলন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামাল চৌধুরী, উত্তরের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক নাজমুল আলম, আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ড. সেলিম মাহমুদ ও তরুণ কান্তি দাস, সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য অপরাজিতা হক, বাসন্তি চাকমা এবং চার সাংবাদিক।
আওয়ামী লীগের একাধিক সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যের সঙ্গে আলাপকালে জানা যায়, অধিকাংশ নেতাই এ সফরে যেতে আগ্রহী নন। সফরে যাওয়া নেতাদের মাঝে কেউ কেউ ইতোমধ্যে একাধিকবার চীন সফর করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সফরকারী দলের এক সদস্য বলেন, চীনা কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কোনো কর্মসূচি নেই। অধিকাংশ কর্মসূচিই চীনের বিভিন্ন প্রদেশের। তাই আমাদের দলের শীর্ষ নেতাদের কেউ এ সফরে যেতে তেমন আগ্রহী নন।
সফরকারী প্রতিনিধি দলের তালিকা থেকে দেখা যায়, অতীতের সফরগুলোতে সাধারণত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির অধিকাংশ নেতা অংশ নেন। ওই প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে দলের একজন নীতিনির্ধারণী ফোরামের নেতা ছাড়াও বাকিদের অধিকাংশই ছিলেন সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য। তবে এবারের সফরকারীদের মধ্যে সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মাত্র পাঁচজন।
সফরকারী দলের প্রধান আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুল মতিন খসরু বলেন, সফরের বিষয়ে আমি এখন কিছু বলব না, চীন থেকে ফেরার পরে আমি এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সংবাদ সম্মেলনে জানাব।
আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ বলেন, এটা আমাদের নিয়মিত সফরের অংশ। চীনের ক্ষমতাসীন দলের আমন্ত্রণে এটা হচ্ছে।
২০১৫ সালের মে মাসে আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল চীন সফরে যায়। ওই সফরের প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন কর্নেল (অব.) মো. ফারুক খান, অসীম কুমার উকিল, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, ফরিদুন নাহার লাইলী, এস এম কামাল হোসাইন ও ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া।
২০১৬ সালের অক্টোবর মাসে বাংলাদেশ সফরে আসেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। তার সফরের সময় দুই দেশের মাঝে ২৬টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।
২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কর্নেল (অব.) ফারুক খানের নেতৃত্বে চীন সফর করে আরেকটি প্রতিনিধি দল। সে দলে ছিলেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদ, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আবদুস সবুর, শিক্ষা ও মানববিষয়ক সম্পাদক শামসুন নাহার চাঁপা, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, উপ-দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য অ্যাডভোকেট এ বি এম রিয়াজুল কবীর কাওছার, পারভীন জামান কল্পনা, আনোয়ার হোসেন, মেরিনা জাহান, রেমন্ড আরেং ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য তরুণ কান্তি দাস।
সর্বশেষ চলতি বছরের জুলাইয়ে এক সপ্তাহের চীন সফরে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।