বরিশালে প্রস্তুত আওয়ামী লীগ বিএনপিসহ সব দল বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নিতে আওয়ামী লীগের পূর্বপ্রস্তুতি আছে। বিএনপির নির্বাচনকেন্দ্রিক কোনো কর্মসূচি দেখা না গেলেও ভিতরে ভিতরে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য মুখিয়ে আছেন দলের একাধিক নেতা।
এ ছাড়া সংসদে বিরোধী দল জাতীয় পার্টি, বাসদ, কমিউনিস্ট পার্টিও বরিশাল সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে বলে জানিয়েছে। মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি গোলাম আব্বাস চৌধুরী দুলাল বলেন, সিটি নির্বাচনের জন্য অনেক আগে থেকেই আওয়ামী লীগের প্রস্তুতি আছে। এর অংশ হিসেবে মহানগরে ১০৪টি কমিটি গঠন করা হয়েছে। ভোটের সময় এসব কমিটি কেন্দ্র কমিটি হিসেবে কাজ করবে। মহানগর আওয়ামী লীগ তৃণমূলের মতামত নিয়ে যুগ্মসাধারণ সম্পাদক সাদিক আবদুল্লাহকে মেয়র পদে মনোনয়ন দেওয়ার জন্য সুপারিশ করে দলীয় সভানেত্রীর কাছে একটি প্রস্তাব পাঠিয়েছে। মেয়র পদে দলীয় মনোনয়নের অন্যতম দাবিদার জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি কর্নেল জাহিদ ফারুক শামীম (অব.) বলেন, নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণার পর এখন সবাই দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার দিকে তাকিয়ে আছেন। তিনি সব দিক বিবেচনা করেই বরিশাল সিটিতে মেয়র পদে মনোনয়ন দেবেন। এ ছাড়া মেয়র পদে মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি গোলাম আব্বাস চৌধুরী দুলাল, সহসভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টু, মাহবুবউদ্দিন আহমদ, আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর ছোট ভাই খোকন সেরনিয়াবাত ও যুবলীগ নেতা মাহমুদুল হক খান মামুনের নাম বিভিন্ন মহলে আলোচিত হচ্ছে। বিএনপি দেশের সব নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চায় বলে জানিয়েছেন বরিশাল সিটির প্রথম মেয়র ও বিএনপির যুগ্মমহাসচিব মজিবর রহমান সরোয়ার।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যাতে দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করতে না পারে সেজন্যই খুলনার সিটি নির্বাচনে অংশ নিয়েছে বিএনপি। কিন্তু ওই নির্বাচনে পরিকল্পিত কারচুপি করে নির্বাচন কমিশন দেশের মানুষের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। বরিশাল সিটি নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে সেনা মোতায়েনসহ নিরপেক্ষ কর্মকর্তাদের নির্বাচনসংক্রান্ত দায়িত্ব দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। এ ছাড়া মেয়র পদে মনোনয়নের দৌড়ে আছেন বিএনপির বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক এমপি বিলকিস জাহান শিরিন, দক্ষিণ জেলা বিএনপি সভাপতি এবায়েদুল হক চাঁন ও মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জিয়াউদ্দিন সিকদার জিয়া। জেলা বিএনপি সভাপতি চাঁন এবার মেয়র পদে মনোনয়ন পাবেন বলে আশা করেন। সাবেক এমপি শিরিন বলেন, বরিশালে নতুন নেতৃত্ব প্রয়োজন। নতুন প্রজন্ম পরিবর্তন চায়। জিয়াউদ্দিন সিকদার জিয়া বলেন, তৃণমূল থেকে দাবি উঠেছে মহানগর বিএনপি থেকে কাউকে মেয়র প্রার্থী করার। জাতীয় পার্টি থেকে ইকবাল হোসেন তাপস মেয়র পদে সবার দোয়া চেয়ে পোস্টার করেছেন। কয়েক দিন আগে এক ইফতার মাহফিলে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার কথা জানান জেলা জাতীয় পার্টির সদস্য তাপস। দলীয় মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার তাকে মাঠে কাজ করতে সবুজ সংকেত দিয়েছেন বলে তিনি জানান। নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার অনেক আগেই মেয়র প্রার্থী ঘোষণা করেছে বাসদ। বাসদের মেয়র প্রার্থী জেলা কমিটির সদস্যসচিব ডা. মনীষা চক্রবর্তী বলেন, খুলনা সিটি নির্বাচন তাদের হতাশ করেছে। তারা খুলনার মতো নিয়ন্ত্রিত নির্বাচন চান না। বরিশালের জনগণ একটি স্বচ্ছ-সুন্দর ভোট প্রত্যাশা করছেন। এ ছাড়া ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, কমিউনিস্ট পার্টিসহ কয়েকটি দল বরিশাল সিটি নির্বাচনে প্রার্থী দেবে বলে জানা গেছে। ২০০৩ সালে বরিশালের প্রথম সিটি নির্বাচনে বিএনপি নেতা মজিবর রহমান সরোয়ার, ২০০৮ সালে দ্বিতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতা শওকত হোসেন হিরণ এবং সবশেষ ২০১৩ সালের ১৫ জুনের নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হন বিএনপি নেতা আহসান হাবিব কামাল।