শোক সভায় বক্তারা:-প্রকৌশলী শহীদুল আলমের জীবনী থেকে শিক্ষা নেয়া উচিৎ

লেখক:
প্রকাশ: ৭ years ago

সৎ, সজ্জল, সদালাপি ও সর্বজনপ্রিয় প্রকৌশলী শহীদুল আলমের জীবনী থেকে আমাদের শিক্ষা নেয়া উচিৎ। তার মৃত্যুতে আমরা হারিয়েছি এক অকৃত্রিম বন্ধু আর বড় ভাইকে। তার এ শূন্যতা পূরনীয় নয়। অত্ম মানবতায় উদার, পরিমার্জিত ও সর্বজনপ্রিয় এই ব্যক্তিকে হারানোর মানেই বরিশালবাসীর বড় ক্ষতি হলো। গতকাল বরিশাল নগরীর বান্দ রোডস্থ রাহাত আনোয়ার হাসপাতাল পরিবারের অন্যতম সদস্য, বরিশাল ক্লাবের সাবেক সভাপতি, সাউথ এ্যাপোলো ডায়াগনস্টিক লিমিটেড’র সাবেক চেয়ারম্যান সমাজ সেবক প্রকৌশলী শহীদুল আলম শহীদ স্মরণে রাহাত আনোয়ার হাসপাতালের উদ্যেগে শোক সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে বিশিষ্টজনরা প্রয়াতের সম্পর্কে এমন মন্তব্য করেন। তারা প্রয়াতের ৬৩ বছরের জীবন বিভিন্ন গুনাবলি তুলে ধরেন। 
রাহাত আনোয়ার হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডাঃ মোঃ আনোয়ার হোসেন’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত স্মরণ সভায় প্রয়তের ছোট ভাই মনিরুল আলম মামুন উপস্থিত সকলের কাছে প্রকৌশলী শহীদুল আলম শহীদ’র জন্য দোয়া কামনা করে বলেন, তিনি যেমনি পরিবারের মধ্যে প্রিয় ছিলেন তেমনি বাহিরেও ছিলেন সবার প্রিয়। আমাদের পিতা মারা যান অনেক আগে। পিতার মৃত্যুর পর শহীদ ভাই কখনই বড় ভাই হিসেবে পিতার শূন্যতা আমাদের বুঝতে দেন নি। বিশিষ্ট আইনজীবী ও রাহাত আনোয়ার হাসপাতাল পরিবারের অন্যতম সদস্য এ্যাভোকেট লস্কর নূরুল হক’র পরিচালনায় অনুষ্ঠিত শোক সভায় বরিশাল বিএম কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর স ম ইমানুল হাকিম বলেন, বরিশাল জিলা স্কুল থেকেই শহীদ ভাইয়ের সাথে আমাদের পরিচয়। ভাইয়ের সাথে আমাদের চেনা-জানা বহু দিনের। তিনি শত কর্মব্যস্ততার মাঝেও আমার পাশে ছিলেন। তিনি ছিলেন সৎ, সজ্জল, সদালাপি। তার মধ্যে ছিলো মানবতা বোধ। ডাঃ মোঃ আবদুল হামিদ শেখ বলেন, পরিমার্জিত, সর্বজনপ্রিয় ছিলেন শহীদ। একজন ভাল মানুষের যতটা গুনাবলি থাকার কথা তার সবকিছু ছিলো তার মধ্যে।

তার জীবনী থেকে আমাদের শিক্ষা নেয়া উচিৎ। আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এ্যাড. কেবিএস আহম্মেদ কবির বলেন, আইনজীবীদের সাথে শহীদের পরিচয় দীর্ঘ দিনের। নিরাহংকার মানুষ ছিলেন শহীদ। তার মৃত্যুতে আমারা একজন ভাল বন্ধু হারিয়েছি। শোক সভায় আলহাজ্ব শওকত হোসেন হিরন’র বড় ভাই মোঃ আলতাফ হোসেন বলেন, হিরন-শহীদ ছিলো একই সুতায় গাথা। ওদের জীবন আর মৃত্যুতে খুবই মিল। বরিশাল আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. আনিচ উদ্দিন আহম্মেদ শহীদ বলেন, প্রকৌশলী শহীদ দেখতে সুন্দর ছিলেন না। কিন্তু ওর মন ছিলো সুন্দর। সব সময় মানুষের প্রতি ওর আন্তরিকতা ছিলো। সাউথ এ্যাপোলো ডায়াগনস্টিক লিমিটেড’র এমডি হালিম রেজা মোফাজ্জেল বলেন, খুব অল্প সময়ের মধ্যে শহীদ ভাই রাহাত আনোয়ার হাসপাতালের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের আপন করে নিতে সক্ষম হয়েছেন। তার অন্যতম উদাহরণ আজকে এখানে উপস্থিত সকলের চোখের জল। আমাদের সাথে তার ১৭ বছরের সম্পর্ক। কিন্তু এ সম্পর্কের মধ্যে একটিবারও তিনি তার শারিরিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন নি। তিনি ছিলেন সর্বদা পরউপকারী। তার মধ্যে কোন বিদ্দ্যেশ ছিলো না। তিনি মানুষকে ভালবাসতেন। শোক সভায় কবি রফিক চৌধুরী (কূজন) প্রকৌশলী শহীদুল আলম শহীদ (খোকন) স্মরণে রচিত কবিতা আবৃত্তি করেন সরকারি শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা পাপিয়া জেসমিন।

শোক সভায় উপস্থিত ছিলেন বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকের কলেজ সাবেক অধ্যক্ষ ডাঃ গোলাম মাহমুদ সেলিম, প্রফেসর ডাঃ আবুল কালাম আজাদ, শিশু বিশেষজ্ঞ ডাঃ মজিবুর রহমান, রাহাত আনোয়ার হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শারমিন আক্তার ও নির্বাহী পরিচালক মোঃ দেলোয়ার হোসেনসহ সকল চিকিৎসক ও কর্মকর্তা এবং কর্মচারীবৃন্দ।

এর আগে রাহাত আনোয়ার হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শিবলু সাদিক’র উপস্থপনায় শোক সভায় আরো বক্তব্য রাখেন রাহাত আনোয়ার হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ পারভেজ মাহমুদ রেজা, নার্স সুপার ভাইজার হোসনেয়ারা খানম, হিসাব শাখার হিসাব রক্ষক শফিকুল ইসলাম শফিক, রিসিভশনিষ্ট আফরোজা কলি, ওয়ার্ড বয় কাওছার সিকদার, নিরাপত্তা রক্ষি মইদুল ইসলাম প্রমুখ। শোক সভা শেষে হাফেজ মোঃ রুহুল আমিন’র পরিচালনায় দোয়া মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।