১০০ বছরে চরমোনাইয়ের বার্ষিক মাহফিল। এবারের মাহফিলে আগত দেশি-বিদেশি শ্রোতাদের জন্য ইতোমধ্যে ২টি মাঠ প্রস্তুত করা হয়েছে। শ্রোতাদের যাতে মাহফিল শুনতে সমস্যা না হয় সে জন্য টানানো হয়েছে শামিয়ানা, লাগানো হয়েছে প্রয়োজনীয় লাইট ও মাইক। ব্যবস্থা করা হয়েছে পর্যাপ্ত বাথরুমেরও।
লাখো মুসল্লির অংশগ্রহণে আগামী ২২ নভেম্বর (বুধবার) বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটি ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ’র আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাইর উদ্বোধনী বয়ানের মাধ্যমে ৩ দিনব্যাপী বার্ষিক এই মাহফিলের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে।
সড়কপথে গাড়ি রিজার্ভ করে যারা আসবেন তাদের গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য নির্ধারিত জায়গা প্রস্তুত করা হয়েছে। ১০ নভেম্বর থেকে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের শ্রোতারা রিজার্ভ ও ব্যাক্তিগত গাড়ি নিয়ে মাহফিল মাঠে উপস্থিত হতে শুরু করেছেন। লঞ্চ ও ট্রলারে করে মানুষের আগমন শুরু হয়েছে ১৮ নভেম্বর থেকে। গতকাল ২০ নভেম্বর ও আজ ২১ নভেম্বর ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন নদীবন্দর থেকে রিজার্ভ লঞ্চে এ শ্রোতাদের উল্লেখযোগ্য অংশ মাহফিলস্থলে উপস্থিত হবেন।
চরমোনাই বার্ষিক মাহফিল বিশ্বের অন্যতম ইসলামী জমায়েত। নিজের আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে নেককার ও আদর্শ মানুষ হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে ১৯২৪ সাল থেকে চরমোনাই মাহফিলে মুসল্লিদের আগমন শুরু হয়।
৩ দিনের মাহফিলে মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই ও নায়েবে আমীরুল মুজাহিদিন মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাইর ৭টি বয়ান শ্রোতাদেরকে দ্বীনের পথে পরিপূর্ণভাবে চলার জন্য উদ্বুদ্ধ করে। এ ছাড়া দেশ-বিদেশের উল্লেখযোগ্য ওলামা মাশায়েখদের বয়ান শ্রোতাদেরকে দ্বীনের পথে চলতে উৎসাহ জোগায়।
মাহফিলের ২য় দিন বেলা সাড়ে ১০টায় চরমোনাই মাহফিলে আগত ওলামা মাশায়েখ ও বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে ওলামা মাশায়েখ বুদ্ধিজীবী সম্মেলন, তৃতীয় দিন বেলা সাড়ে ১০টায় আগত ছাত্রদের নিয়ে ছাত্র সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এ ছাড়া মঞ্চের বাইরে সুবিধাজনক স্থান ও সময়ে মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম সমাবেশ, শিক্ষকদের নিয়ে শিক্ষক সমাবেশ, যুবকদের নিয়ে যুব সমাবেশ, শ্রমজীবী মানুষের অংশগ্রহণে শ্রমিক সমাবেশ ও মুয়াল্লালিমদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়।
মাহফিলে আগত শ্রোতাদেরকে তিন দিনে হাতে কলমে নামাজসহ জরুরি মাসায়ালা মাসায়েল প্রশিক্ষণ, সুরা ক্বেরাত প্রশিক্ষণসহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। কয়েক হাজার ভাগে ভাগ করে বাংলাদেশ কোরআন শিক্ষা বোর্ড এর নিয়ন্ত্রণাধীন মাদ্রাসা সমূহের মোয়াল্লিমদের মাধ্যমে হাতে কলমে এই প্রশিক্ষণের কাজ করা হয়। এ ছাড়া মাহফিলে শ্রোতাদের জরুরি চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য ১০০ বেডের অস্থায়ী হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা ও রোগীদের ফ্রি ওষুধ দেওয়া হয়।
আগামী ২৫ নভেম্বর, সকাল ৮-৯টার দিকে আখেরি বয়ানের আনুষ্ঠানিকতা শেষে পীর সাহেব চরমোনাই মোনাজাতের মাধ্যমে ৩ দিনব্যাপী মাহফিলের কার্যক্রম সমাপ্ত করবেন।