মার্কিন দূতাবাস ছেড়েছেন বরখাস্ত ডিএজি এমরান

লেখক:
প্রকাশ: ১০ মাস আগে

মার্কিন দূতাবাস ছেড়েছেন সদ্য বরখাস্ত হওয়া ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া। শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে তিনি সেখান থেকে বের হয়ে যান তিনি।

 

এর আগে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগার কারণ দেখিয়ে শুক্রবার বিকেলে তিন মেয়ে ও স্ত্রীসহ তিনি মার্কিন দূতাবাসে আশ্রয় নেন সদ্য বরখাস্ত হওয়া এই আইন কর্মকর্তা।

 

এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার মো. শহিদুল্লাহ গণমাধ্যমকে জানান, এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া স্ত্রী ও তিন মেয়ে নিয়ে বিকেলে মার্কিন দূতাবাসে গিয়েছিলেন বলে তারা জানতে পেরেছেন। সন্ধ্যা ৭টার দিকে তিনি সেখান থেকে বেরিয়ে গেছেন।

বরখাস্ত হওয়ায় ওই আইন কর্মকর্তা কেন দূতাবাসে গিয়েছিলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি ব্যক্তিগত কারণে সেখানে যেতে পারেন বা কারও সঙ্গে দেখা করতে যেতে পারেন।

 

এর আগে সন্ধ্যায় সংবাদমাধ্যমের পক্ষ থেকে এমরান আহম্মদ ভূঁইয়ার বিষয়ে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের মুখপাত্র ব্রায়ান শিলার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। সে সময় তিনি বলেন, ‘এ মুহূর্তে দেওয়ার মতো কোনো তথ্য আমাদের কাছে নেই।’

তার আগে শুক্রবার বিকেলে সপরিবারে মার্কিন দূতাবাসে আশ্রয় নেন এমরান আহম্মদ। এ বিষয়ে গণমাধ্যমে পাঠানো এক ক্ষুদে বার্তায় তিনি বলেন, ‘আমি মার্কিন দূতাবাসে আজকে পুরো পরিবারসহ আশ্রয়ের জন্য বসে আছি। বাইরে পুলিশ। আজকে আমাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে …। আমার ফেসবুক মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপে গত ৪-৫ দিন ধরে অনবরত হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছে। এই সরকার ভালোবাসার প্রতিদান দেয় জেল দিয়ে। আমার আমেরিকার কোনো ভিসা নেই। স্রেফ ৩টা ব্যাগে এক কাপড়ে আমার তিন মেয়েসহ কোনোক্রমে বাসা থেকে বের হয়ে এখানে বসে আছি। দোয়া করবেন আমাদের জন্য।’

গত ২৮ আগস্ট নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে বর্তমান বিচারিক কার্যক্রম স্থগিত ও সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য প্রধানমন্ত্রী বরাবর ১০০ জনেরও বেশি নোবেল বিজয়ীসহ ১৬০ জনেরও বেশি বিশ্বনেতা একটি চিঠিতে স্বাক্ষর করেন।

 

এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই চিঠির প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন সংগঠন, প্রতিষ্ঠান ও পেশাজীবীদের পক্ষ থেকে। এরই ধারাবাহিকতায় অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় থেকে প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দেওয়ার কথা রয়েছে- এমন দাবি করে গত ৪ সেপ্টেম্বর এমরান।

 

সে সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘যে বিবৃতি দিয়েছেন ১৬০ জন নোবেল বিজয়ী এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন, আমি ওনাদের বিবৃতির সঙ্গে একমত। আমি মনে করি, অধ্যাপক ড. ইউনূস একজন সম্মানিত ব্যক্তি। তার সম্মানহানি করা হচ্ছে এবং এটা বিচারিক হয়রানি। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এ বিবৃতিতে সই করব না।’

পরদিন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, চিঠিতে সই না করার বক্তব্য দিয়ে এমরান শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন।

 

 

তারই ধারাবাহিকতা গত বৃহস্পতিবার এমরান আহম্মদ ভূঁইয়াকে তার পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগ।

রাষ্ট্রপতির আদেশে এ অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকালে এমরানকে বরখাস্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।