রাজধানীসহ সারা দেশের গির্জাগুলোতে উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপিত হয়েছে খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ উৎসব বড়দিন। বড়দিনে বিশেষ আয়োজন করেছে ঢাকায় অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসও। এ বছর বড়দিনের অনুষ্ঠানের অন্যতম অনুষঙ্গ কিংবদন্তী চরিত্র সান্তাক্লজ এসেছে রিকশায় চড়ে।
রোববার (২৫ ডিসেম্বর) বড়দিনে মার্কিন দূতাবাসের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
দূতাবাসের পক্ষ থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বড়দিনের আয়োজনের বেশ কয়েকটি ছবি প্রকাশ করা হয়। এতে দেখা যায়, ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস বড়দিন উদযাপনের অংশ হিসেবে নিজে রিকশা চালান। রিকশায় যাত্রীর আসনে লাল টুপি, পোশাক ও সাদা দাড়িতে সান্তাক্লজ।
প্রকাশিত একাধিক ছবিতে সান্তাক্লজকে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের পতাকাসহ দূতাবাসের সদস্যদের দেখা গেছে।
খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শুভ বড়দিন (ক্রিসমাস) ছিল ২৫ ডিসেম্বর (রোববার)। গির্জায় গির্জায় প্রার্থনা আর মানবতার কল্যাণে যিশু খ্রিষ্টের শান্তির বাণী ছড়িয়ে যায় মানুষে মানুষে। আলোকসজ্জা, ক্রিসমাস ট্রি আর সান্তাক্লজের উপহারে মেতে ওঠে শিশুরা।
২ হাজার বছর আগে এ শুভ দিনেই জন্মগ্রহণ করেন খ্রিষ্ট ধর্মের প্রবর্তক যিশু খ্রিষ্ট। বেথেলহেমের এক গোয়ালঘরে কুমারী মাতা মেরির কোলে জন্ম হয়েছিল তার। খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীরা বিশ্বাস করেন, মানবজাতিকে সত্য, সুন্দর ও ন্যায়ের পথে পরিচালিত করতে যিশুর জন্ম হয়। ‘ঈশ্বরের আগ্রহে ও অলৌকিক ক্ষমতা’য় মা মেরি কুমারী হওয়া সত্বেও গর্ভ ধারণ করেন।
ঈশ্বরের দূতের কথামতো শিশুটির নাম রাখা হয় যিশাস, বাংলায় বলা হয় ‘যিশু’। শিশুটি কোনো সাধারণ শিশু ছিল না। ঈশ্বর যাকে পাঠানোর কথা বলেছিলেন মানবজাতির মুক্তির জন্য। যিশু নামের সেই শিশুটি বড় হয়ে পাপের শৃঙ্খলে আবদ্ধ মানুষকে মুক্তির বাণী শোনান। তাই, তার জন্মদিনটিকে ধর্মীয় নানা আচার ও উৎসবের মধ্য দিয়ে উদযাপন করেন খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীরা। এটি তাদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব।
বিশ্বের নানা দেশের মতো আজ বাংলাদেশের খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ও উদযাপন করছে এ উৎসব। বড়দিন উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
বড়দিন উপলক্ষে গির্জাগুলো সাজানো হয়েছে রঙিন বাতিতে। সকালে সেখানে বিশেষ প্রার্থনা দিয়ে দিনের শুরু হয়। এছাড়া, নানা আয়োজন করেছেন যিশুভক্তরা। ঘরে ঘরে জ্বালানো হয়েছে রঙিন আলো। সাজানো হয়েছে ক্রিসমাস ট্রি। যিশু গোয়ালঘরে জন্মেছিলেন বলে তার অনুসারীরা ঘরে ঘরে প্রতীকী গোশালা তৈরি করেন। পারিবারিক, সামাজিক ও ধর্মীয় মেলবন্ধনের এই দিনে অনেকে বেড়াতে যাচ্ছেন আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে।
দিবসটি উপলক্ষে রোববার ছিল সরকারি ছুটি। সংবাদপত্রগুলো দিনটিতে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করে। বাংলাদেশ বেতার, সরকারি-বেসরকারি টেলিভিশন ও রেডিওতে দিবসটির তাৎপর্য তুলে ধরে বিভিন্ন অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা হয়।