#

রংপুরের কাউনিয়ায় সানজিদা আক্তার ইভা হত্যার নেপথ্যে ছিল প্রেমিকের সঙ্গে বিচ্ছেদ। আট মাস আগে প্রেমে বিচ্ছেদ ঘটানোর পর মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন প্রেমিক নাহেদুল ইসলাম সায়েম। এরই জের ধরে মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) রাতে ধারালো চাকু দিয়ে ইভাকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেন তিনি। বুধবার (১৭ আগস্ট) ভোরে তাকে আটক করে পুলিশ।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন সায়েম। এ ঘটনায় সন্ধ্যায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র এতথ্য নিশ্চিত করেছে।

সায়েম রংপুরের পীরগাছা উপজেলার কল্যাণী ইউনিয়নের তাশুক উপাশু গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য নুর হোসেনের ছেলে। তিনি রংপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এবার এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন।

মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে কাউনিয়া উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের হরিচরণ লস্কর গ্রামে (কুটিরপাড়-মধুপুর সড়ক) রাস্তার পাশ থেকে গুরুতর জখম অবস্থায় ইভাকে উদ্ধার করে পুলিশ। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ইভা কাউনিয়া উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের গোড়াই গ্রামের ইব্রাহিম মিয়ার মেয়ে। সে পার্শ্ববর্তী পীরগাছা উপজেলার বড়দরগাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী ছিল।

রংপুর জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল-সি) আশরাফুল আলম পলাশ জাগো নিউজকে জানান, প্রেমঘটিত বিষয়কে কেন্দ্র করে ইভাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার সায়েম এ হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছেন। এ ঘটনায় তার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে
কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

নিহত ইভার চাচা সোলেমান আলী বলেন, ‘ইভার দুঃসম্পর্কের মামা নাহেদুল ইসলাম সায়েম। পারিবারিকভাবে তাদের প্রেমের সম্পর্ক মেনে না নেওয়ায় এ নিয়ে অনেক ঝামেলা সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে ইভা সম্পর্কের বিচ্ছেদ ঘটায়। গত আট মাস ধরে তাদের মধ্যে কোনো সম্পর্ক ছিল না বলে জানতে পেরেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে স্কুলে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হয় ইভা। এরপর আর বাড়ি ফেরেনি। রাত সাড়ে ১১টার দিকে কাউনিয়া থানা পুলিশের মাধ্যমে খবর পেয়ে হাসপাতালে গিয়ে তার মরদেহ শনাক্ত করা হয়।’

কাউনিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সেলিমুর রহমান জানান, রাত ৯টার দিকে হরিচরণ লস্কর গ্রামের একটি গ্রামীণ রাস্তার পাশে মেয়েটিকে ছটফট করতে দেখে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে যান। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ যায়। শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের জখম অবস্থায় তাৎক্ষণিকভাবে মেয়েটিকে উদ্ধার করে কাউনিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ইভার গলায় এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে অন্তত ১৮টি জখমের চিহ্ন ছিল বলেও জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।

কাউনিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মীর হোসেন জানান, হাসপাতালে আনার আগেই মেয়েটির মৃত্যু হয়েছে।

উত্তর দিন

Please enter your comment!
এখানে আপনার নাম লিখুন