যথাযোগ্য মর্যাদা এবং ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টে মহান বিজয় দিবস ২০২২ উদযাপিত হয়েছে। মহান বিজয় দিবস ২০২২ উপলক্ষে ৮৮ মতিঝিল বাণিজ্যিক এলাকায় অবস্থিত ট্রাস্টের প্রধান কার্যালয় স্বাধীনতা ভবন, মোহাম্মদপুরে অবস্থিত মুক্তিযোদ্ধা টাওয়ার-১, মিরপুরের মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সসহ অন্যান্য ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, ধানমন্ডির ৩২ নম্বর এবং ট্রাস্টের প্রধান কার্যালয় স্বাধীনতা ভবনে অবস্থিত জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, স্বাধীনতা ভবন ও অন্যান্য ভবনে আলোকসজ্জা ও ব্যানার প্রদর্শন, বীরশ্রেষ্ঠ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা, আলোচনা সভা, দোয়া মাহফিলসহ নানা কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
১৬ ডিসেম্বর ২০২২ শুক্রবার সকাল ৯:০০ এবং ১০:০০ ঘটিকায় যথাক্রমে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর এবং ট্রাস্টের প্রধান কার্যালয় স্বাধীনতা ভবনে অবস্থিত জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন হুইলচেয়ারধারী, খেতাব প্রাপ্ত ও যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা, মৃত খেতাব প্রাপ্ত, মৃত যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যগণ এবং ট্রাস্টের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ। সকাল ১১:০০ ঘটিকায় মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এসএম মাহাবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভা শুরু হয়। সভায় সূচনা বক্তব্য রাখেন ট্রাস্ট্রের সচিব (উপসচিব) তরফদার মোঃ আক্তার জামীল। এছাড়া স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডাঃ মোঃ আমজাদ হোসেন, যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: আনোয়ার হোসেন পাহাড়ী বীরপ্রতীক , যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: আব্দুল মাজেদ, যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আমির হোসেন মোল্লাসহ বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধাগণ বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: আবদুল লতিফ।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ছিলো বাংলার মানুষের নিজের একটি দেশ হবে, সৃষ্টি হবে নিজস্ব ভূখণ্ড। শোষণের যাঁতাকলে নিষ্পেষিত বাঙালি স্বাধীন দেশে মুক্তির স্বাদ নেবে। তিনি বাঙালিকে ধাপে ধাপে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য তৈরি করেছিলেন। তার নেতৃত্বেই মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল বাংলার আপামর জনসাধারণ। তাঁর স্বপ্ন সফল করতে বাঙালি ১৯৭১ সালে এক সাগর রক্ত ঢেলেছে। ৩০ লাখের বেশি প্রাণ আর লাখো নারীর সম্ভ্রমের বিনিময়ে নিজেকে মুক্ত করেছে দীর্ঘকালের নাগপাশ আর বঞ্চনা থেকে। লাখো শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার সুফল জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে এবং সরকারের উন্নয়নের গতিধারা অব্যাহত রাখতে সকলকে একযেগে কাজ করার আহবান জানান বক্তারা।
আলোচনা শেষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারবর্গ এবং মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মত্যাগকারী বীর শহীদদের আত্মার মাগফিরাত এবং দেশ ও জাতির সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। পরবর্তীতে বেলা ৩:০০ ঘটিকায় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এর সহযোগিতায় এবং বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের (বামুকট্রা) উদ্যোগে বীরশ্রেষ্ঠ পরিবারের সদস্য/উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। সন্ধ্যায় ট্রাস্ট প্রধান কার্যালয়সহ ট্রাস্টের অন্যান্য ভবনে আলোকসজ্জা করা হয়।