বাসায় ডেকে এনে নারী দিয়ে শারীরিক মিলনের দৃশ্য গোপনে ধারণসহ আটকে রেখে ব্লাকমেইলিং করে মুক্তিপণ আদায়কারী চক্রের এক নারী সদস্যসহ দুইজনকে গ্রেফতার করেছে ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশ। এ সময় মুক্তিপণ আদায়কারী চক্রের কবল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে আটক করে রাখা যুবক মোক্তার সর্দারকে (৩০)।
শুক্রবার বিকেলে ফতুল্লা থানার শিয়াচর এলাকা থেকে মুক্তিপণ আদায়কারী চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতারসহ উদ্ধার করা হয়েছে যুবককে। এর আগে ঘটনার শিকার যুবক মোক্তার সর্দারের স্ত্রী নাজমা তার স্বামীকে আটকে রেখে টাকা চাওয়ার অভিযোগ এনে ফতুল্লা মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।
মোক্তার সর্দার বরিশাল জেলার বরিশাল জেলার হিজলা থানার লক্ষিপুরের সেকান্দার সর্দারের ছেলে ও ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার খলামুড়া জিয়ানগরীর আলী আহমেদের ভাড়াটিয়া। তিনি পাগলা ভাসমান রেস্তোরা মেরি এন্ডারসনের কর্মচারী।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি থানার জামালপুর ইউনিয়নের রহমতপুর গ্রামের মৃত কাদের শেখের ছেলে রিয়াজ (৩৫) এবং ফতুল্লার শিয়াচর এলাকার রোকসানা সুলতানার ভাড়াটিয়া এবং মুক্তিপণ আদায়কারী চক্রের নারী সদস্য রুমা বেগম (৩০)।
ভুক্তভোগীদের সূত্র জানায়, মোক্তার সর্দার বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে নিজ কর্মস্থল থেকে বাসা থেকে বের হন। তিনি তখন তার স্ত্রীকে বাসায় ফোন করে জানান কিছুক্ষণের মধ্যে বাসায় ফিরে আসবেন।
কিন্ত তিনি বাসা না ফিরে তার পূর্বপরিচিত ব্লাকমেইলিং গ্রুপের সদস্য রুমা বেগমের সাথে শিয়াচর এলকায় গ্রেফতারকৃত রিয়াজের ভাড়া বাসায় যান। সেখানে তারা শারীরিক মিলন বা যৌন মিলনে লিপ্ত হন। তাদের যৌন মিলনের দৃশ্য জানালার ফুটো দিয়ে মোবাইল ফোনে ধারণ করেন গ্রেফতারকৃত রিয়াজসহ তার সহোযোগিরা।
এক পর্যায়ে রিয়াজ ও তার সহোযোগিরা মুক্তার সর্দারকে ব্লাকমেইলিং করতে শুরু করেন। তারা তার মোবাইল নাম্বার দিয়ে মোক্তারের স্ত্রীকে ফোন করে এক লাখ টাকা মুক্তিপণ হিসেবে দাবি করেন।
অপরদিকে মোক্তারকে বলে টাকা না দিলে ধারণকৃত ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেবে। এমনকি মোক্তারকে শারীরিকভাবে নির্যাতনও করা হয়। পরে অনেকটাই বাধ্য হয়ে তার স্ত্রীর কাছে ফোন করে ব্লাকমেইলিং চক্রের দাবিকৃত টাকা পরিশোধ করে তাকে ছাড়িয়ে নেয়ার অনুরোধ করেন।
মোক্তারের স্ত্রী বিষয়টি থানা পুলিশকে জানালে পুলিশ মোবাইল ট্যাকিং ও একটি বিকাশ নাম্বারের সূত্র ধরে শিয়াচর এলাকা থেকে মোক্তারকে উদ্ধারসহ গ্রেফতার করে রিয়াজ ও রুমাকে। এ সময় পুলিশ যৌন মিলনের দৃশ্য ধারণ করা মোবাইল ফোনটি জব্দ করে। তবে জাকির নামক অপর এক যুবকের জড়িত থাকার বিষটি জানতে পেরেছে পুলিশ।
অভিযানে নেতৃত্বদানকারী ফতুল্লা মডেল থানার উপ-পরিদর্শক সাইফুল ইসলাম জানান, গ্রেফতারকৃতরা পেশাদার অপরাধী। অভিযানের সময় মাদকসেবনের বেশ কিছু আলামত পাওয়া গেছে।
নারী দিয়ে ফাঁদ পেতে অর্থ আদায়ের বিষয়টি তারা দীর্ঘ দিন করে আসছে। এই চক্রের সাথে কারা কারা জড়িত রয়েছে তাদেরকে গ্রেফতারের চেষ্টা করছে পুলিশ।