সঞ্চয়পত্র বিক্রি অর্ধেকে নেমে এসেছে। মূলত অতিরিক্ত সুদ পরিশোধ ও ঋণের পরিধি কমাসহ নানা শর্তের বেড়াজালে আটকে এ অবস্থা তৈরি হয়েছে। চলতি ২০২১-২০২২ অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে (জুলাই-মে) পুরোনো সঞ্চয়পত্রের মূল টাকা ও মুনাফা পরিশোধের পর নিট বিক্রি দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ১৫৭ কোটি টাকা।
যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের (২০২০-২১ এর প্রথম ১১ মাস) চেয়ে ১৯ হাজার ২২৯ কোটি টাকা কম, যা শতকরা হিসাবে ৫১ শতাংশ। সেই হিসেবে সঞ্চয়পত্রের বিক্রি কমেছে অর্ধেকেরও বেশি। অর্থবছরে ১১ মাসে নিট বিক্রি ছিল ৩৭ হাজার ৩৮৬ কোটি টাকা।
চলতি অর্থবছরের জুলাই মাসে বিভিন্ন স্কিমে মোট ৯৭ হাজার ৩৫০ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র জমা হয়েছে। এর মধ্যে মূল টাকা ও মুনাফার অর্থ পরিশোধ হয়েছে ৭৯ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা। আর রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে সঞ্চয়পত্রের গ্রাহকদের পরিশোধ করা হয়েছে ৩৬ হাজার ২৮ কোটি টাকা। জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের প্রতিবেদন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
খাত সংশ্লিষ্টদের মতে, সঞ্চয়পত্রে নানা শর্তজুড়ে দেওয়ায় বিক্রি কমছে। বিশেষ করে মুনাফা কমিয়ে দেওয়া, অতিমাত্রায় সুদ পরিশোধ করায় বিক্রি কমেছে।
বর্তমানে ১৫ লাখ টাকা, ৩০ লাখ টাকা এবং ৩০ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ভিন্ন সুদহার নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মুনাফার হারে সরকার হাত দেয়নি। অর্থাৎ আগের হারে সুদ পাওয়া যায়। আর ১৫ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগ রয়েছে তারা মেয়াদ শেষে ১০ দশমিক ৩ শতাংশ হারে মুনাফা পাবেন। ৩০ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগ থাকলে মুনাফা পাবেন ৯ দশমিক ৩ শতাংশ হারে।
চলতি বছরে একক মাস হিসেবে মে মাসে জমা হয়েছে ৭ হাজার ৮৬৫ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র। মূল অর্থ ও মুনাফা এসময়ে পরিশোধ করা হয়েছে ৭ হাজার ২২৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৩ হাজার ৫৭৭ কোটি টাকা গ্রাহকের মুনাফাবাবদ পরিশোধ হয়েছে। আর নিট বিক্রির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬৩৮ কোটি টাকা।
চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে ৩২ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য ঠিক করেছে সরকার। ১১ মাসে অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে সরকার ঋণ নিয়েছে ৫৬ দশমিক ৭৪ শতাংশ। আর প্রস্তাবিত ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে সঞ্চয়পত্র থেকে ৩৫ হাজার কোটি টাকার ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। গেলো ২০২০-২১ অর্থবছরে সরকার সঞ্চয়পত্র থেকে ৪২ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছিল সরকার।