বরিশালে লঞ্চ বন্ধ : ঘাটে এসে হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন মানুষ

লেখক:
প্রকাশ: ৩ years ago

ডিজেলের দাম বৃদ্ধির পর ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে সারা দেশে লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দেয়ায় বিপাকে পড়েছেন হাজারও যাত্রী। হঠাৎ লঞ্চ বন্ধের ঘোষণা জানা না থাকায় ঘাটে এসে ফিরে যেতে হচ্ছে তাদের।

জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার পর দুই দিন লঞ্চ চললেও শনিবার দুপুরে ধর্মঘটের ডাক দেয় লঞ্চ মালিক সমিতি। এর পরই বরিশালের সব রুটের লঞ্চ বন্ধ করে দেয়া হয়।

তবে লঞ্চ বন্ধের তথ্য জানা না থাকায় বিকেল থেকে ঢাকাগামী যাত্রীরা বরিশাল নদীবন্দরে গিয়ে হতাশ হয়ে ফিরেছেন।

এ সময় অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, যাত্রী জিম্মি করে ভাড়া বৃদ্ধি অনৈতিক কাজ। তবে মালিক কর্তৃপক্ষের দাবি, ডিজেলের দাম বাড়ানোয় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তারা।

শনিবার সন্ধ‌্যায় বরিশাল নদীবন্দরে গিয়ে দেখা যায়, ঘাটে থাকা দূরপাল্লার রুটে চলাচলকারী তিনটি লঞ্চ সরিয়ে নেয়া হয়েছে। বাকি তিনটি লঞ্চ ঘাটেই রয়েছে। তবে লঞ্চ ছাড়া হবে না জেনে যাত্রীরা ঘাটে এসে হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন।

সোয়েব আহম্মেদ নামে এক যাত্রী বলেন, ‘ভাড়া বৃদ্ধির জন্য যাত্রীদের জিম্মি করে হঠাৎ লঞ্চ বন্ধ করা বিবেকহীন কাজ। এ সিদ্ধান্ত বেলা ৩টায় না নিয়ে আরও আগে নিতে পারত। তা হলে আমরা ঘাটে এসে এই বিড়ম্বনায় পড়তাম না।’

রুমি নামে আরেক যাত্রী বলেন, ‘গতকাল থেকে জনপ্রতি ভাড়া বৃদ্ধি করেছে মালিকরা। লঞ্চ চলাচল অব্যাহত রেখে সরকারের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে তারা সিদ্ধান্ত নিতে পারত। তা হলে হাজার হাজার যাত্রীকে বিড়ম্বনায় পড়তে হতো না।’

লঞ্চযাত্রী রবিউল ইসলাম বলেন, ‘মালিকরা যাত্রীদের কথা বিবেচনা না করে নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য কাজ করেন।’
লঞ্চ বন্ধ: ঘাটে এসে ফিরে যাচ্ছেন হাজারও মানুষ

প্রধান ছয়টি লঞ্চ বন্ধ থাকলেও বিআইডব্লিউটিসির জাহাজ এমভি মধুমতি অবশ্য যাত্রী নিয়ে ঢাকায় আসবে।

এ ছাড়া তুষখালী থেকে ছেড়ে আসা পূবালী-৭ এবং ঝালকাঠি থেকে আসা ফারহান লঞ্চও বরিশাল থেকে ঢাকায় আসবে। তবে বেসরকারি লঞ্চ দুটি আগামীকাল থেকে বন্ধ থাকবে।

পূবালী-৭ লঞ্চের বরিশাল কাউন্টারের ব্যবস্থাপক নাসির উদ্দিন বলেন, ‘বেলা ৩টার সময় লঞ্চ না চলার সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে। আমাদের ওই লঞ্চ এর আগেই ছেড়ে এসেছে। এটা বরিশাল ঘাট দিয়ে যাত্রী নিয়ে যাবে।’

নিজাম শিপিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিজাম উদ্দিন জানান, লিটারপ্রতি ১৫ টাকা ডিজেলের দাম বৃদ্ধি করায় বরিশাল-ঢাকা রুটের ট্রিপপ্রতি ৬০ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ বেড়েছে। এ অবস্থায় ভাড়া না বাড়িয়ে লঞ্চ চালানো সম্ভব নয়।

লঞ্চ মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় সহসভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টু জানান, জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি করায় প্রতিটি লঞ্চে জ্বালানি বাবদ এক লাখ টাকা খরচ বেড়েছে। যাত্রীদের কথা বিবেচনা করে আগের ভাড়ায় এক দিন যাত্রী পরিবহন করা হয়েছে। তবে সেটা আর সম্ভব নয়।