#

করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ পরিস্থিতিতে দুই মাসেরও বেশি সময় সাধারণ ছুটির পর কর্মচঞ্চল হয়ে উঠেছে সচিবালয়। স্বাস্থ্যবিধি মেনে রোববার (৩১ মে) সকাল থেকে অফিস শুরু করেছেন বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

মার্চ মাসের প্রথমার্ধে দেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। পরিস্থিতির ক্রমাবনতি হলে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করে সরকার। এরপর দফায় দফায় ছুটি বাড়তে থাকে। সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী টানা ৬৬ দিনের ছুটি গতকাল শনিবার (৩০ মে) শেষ হয়েছে।

বিভিন্ন শর্ত পালন ও নির্দেশনা মানা সাপেক্ষে আজ রোববার (৩১ মে) থেকে আগামী ১৫ জুন পর্যন্ত অফিস খুলে দিয়েছে সরকার। তবে উপস্থিতি কিছুটা কম।

রোববার সকাল থেকেই কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সচিবালয়ে আসতে থাকেন। কর্মচারীরা আগের মতোই স্টাফ বাসে সচিবালয়ে আসেন। দর্শনার্থী গেট দিয়ে তাপমাত্রা মেপে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সচিবালয়ে প্রবেশ করানো হয়।

সচিবালয়ের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মুখে মাস্ক পড়তে দেখা গেছে। অনেকে গ্লাভস পড়ে অফিসে এসেছেন। অফিসে সহকর্মীদের সঙ্গে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখছেন।

সচিবালয়ে দর্শনার্থী পাস দেয়া আপাতত বন্ধ রয়েছে বলে সচিবালয়ে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

অফিস খোলা উপলক্ষে প্রায় সবগুলো ভবনের মেঝেতে জীবাণুনাশক ছিটানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। ফ্লোরে-ফ্লোরে বিভিন্ন স্থানে হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখা হয়েছে। বসানো হয়েছে জীবাণুনাশক টানেল। চার নম্বর ভবনের চতুর্থ তলায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়েও জীবাণুনাশক টানেল বসানো হয়েছে।

সচিবালয়ে গাড়ি রাখার স্থানগুলো আগের মতোই গাড়িতে পূর্ণ রয়েছে। তবে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় অন্যান্যদের মতো কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে করোনা আতঙ্ক রয়েছে। অনেকেই জানিয়েছেন, সরকারের নির্দেশনা মেনে অফিস করতে এসেছেন। তবে খুব ভয়ে আছেন তারা। অফিস করার কারণে তাদের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে গেল।

সচিবালয়ে চার নম্বর ভবনে বসেন এমন একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, অফিস বন্ধ হওয়ার পর বলতে গেলে বাইরে বেরই হইনি। অফিস খোলায় এখন আবার বাইরে বের হতে হলো। চাকরি করতে হলেও তো অফিসে আসতে হবে। সচেতন আছি তারপরেও ভয় পাচ্ছি, কারণ অনেক স্থান ও মানুষের সংস্পর্শে আসতে হবে। তাই আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে আছি।’

দীর্ঘ ছুটির কারণে ইতোমধ্যে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে স্থবিরতা নেমেছে। কষ্টে পড়েছেন নানা শ্রেণী-পেশার মানুষ। তাই করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির উন্নতি না হলেও জীবিকা ও অর্থনৈতিক কারণে ছুটির পথ থেকে সরে এসেছে সরকার।

অফিস খোলার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এক আদেশে বলেছে, ৩১ মে থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত অফিসগুলো নিজ ব্যবস্থাপনায় সীমিত পরিসরে খোলা থাকবে। ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তি, অসুস্থ কর্মচারী এবং সন্তান সম্ভবা নারীরা কর্মস্থলে উপস্থিত হওয়া থেকে বিরত থাকবেন। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতকরণের জন্য সর্বাবস্থায় মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ কর্তৃক জারিকৃত ১৩ দফা নির্দেশনা কঠোরভাবে অনুসরণ করতে হবে।

এছাড়া করোনাভাইরাস সংক্রমণ মোকাবিলায় সরকারি প্রতিষ্ঠানকে স্বাস্থ্য অধিদফতরের ১৮টি কারিগরি নির্দেশনা মানতে হবে।

উত্তর দিন

Please enter your comment!
এখানে আপনার নাম লিখুন