#

স্কয়ার গ্রুপের স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজ বিদেশে সুগন্ধি চাল রপ্তানির ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আবেদন জানিয়েছে। এ বিষয়ে সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে একটি চিঠি দিয়েছে। চিঠিতে দাবি করেছে, তাদের কাছে বর্তমানে ১০ লাখ ডলার মূল্যের সুগন্ধি চালের চাহিদা রয়েছে।

সূত্র জানায়, স্কয়ার গ্রুপ গত সপ্তাহে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব তপন কান্তি ঘোষকে এ বিষয়ে চিঠি দিয়েছে।

 

চলমান রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ এবং অভ্যন্তরীণ চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৯ জুন প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় চালের স্থানীয় প্রাপ্যতা বাড়াতে এবং এর দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাংলাদেশ থেকে চাল রপ্তানির ওপর স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়।

বেশ কয়েকটি খাদ্য ও পানীয় কোম্পানির মালিক স্কয়ার গ্রুপ তাদের ‘চাষি’ ব্র্যান্ডের প্রায় ৩ হাজার টন সুগন্ধি চাল রপ্তানির জন্য গত বছর ১২ আগস্ট একটি অনুমতি পেয়েছিল। কিন্তু সরকারের সিদ্ধান্তের কারণে কোম্পানিটি মাত্র ৬৫০ টন সুগন্ধি চাল রপ্তানি করতে পেরেছিল। বাকি চাল নিষেধাজ্ঞার কারণে রপ্তানি বন্ধ রপ্তানি করতে পারেনি।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এর আগে স্কয়ার, প্রাণ, এসিআই, ইস্পাহানী এবং সিটি গ্রুপের মতো ৪১টি কোম্পানিকে ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্দিষ্ট পরিমাণ সুগন্ধি চাল রপ্তানির অনুমতি দিয়েছিল।

 

এ বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তারা বলেন, নিষেধাজ্ঞার পর যেসব কোম্পানি এখনও রপ্তানি করতে পারেনি তারা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার না হলে আর এ সুযোগ পাবেন না। বাংলাদেশের সর্বশেষ রপ্তানি নীতি আদেশ অনুযায়ী চাল রপ্তানি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পূর্বানুমোদন নিয়ে সুগন্ধি চাল রপ্তানির সুযোগ ছিল।

এ প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন করপোরেট গ্রুপ ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই), ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ব্রুনাই এবং দক্ষিণ কোরিয়াসহ প্রায় ১৩৬টি দেশে সুগন্ধি চাল রপ্তানি করে আসছে। বাংলাদেশ ২০০৯-১০ অর্থবছর থেকে সুগন্ধি চাল রপ্তানি শুরু করে। সেসময় প্রায় ৬৬৩ টন সুগন্ধি চাল রপ্তানি করে। পরবর্তী বছরগুলোতে, রপ্তানির পরিমাণ দাঁড়ায় ১০ হাজার ৮৭৯ টনে।

বিশ্বজুড়ে কোভিড-১৯ মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ার কারণে গত অর্থবছরে রপ্তানি সামান্য কমে দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ৫১৭ টনে।

 

গত বছর চিনিগুড়া, কালিজিরা ও কাটারিভোগ জাতের চালের দাম স্থানীয় বাজারে প্রতি কেজি ছিল ৭০ টাকা থেকে ৮০ টাকা। এক বছরে এসব সুগন্ধি চালের দাম প্রায় ৭০ শতাংশ বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১২০-১৩০ টাকায়।

সরকার চালের বাজারমূল্য নিয়ন্ত্রণে দেশব্যাপী অভিযান পরিচালনা করে এবং স্কয়ার, আকিজ, এসিআই, সিটি এবং প্রাণ গ্রুপের মতো বেশ কয়েকটি কোম্পানির গুদামে ধানের অত্যধিক মজুত খুঁজে পায়। এরমধ্যে দিনাজপুরে স্কয়ার গ্রুপের একটি গুদামে ৫ হাজার ১৪০ টন সুগন্ধি ধান পেয়েছে প্রশাসন। তারা তা সিলগালা করে কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা করে।

 

সুগন্ধি চাল রপ্তানির সুযোগ চেয়ে স্কয়ার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অঞ্জন চৌধুরীর লেখা চিঠিতে বলা হয়েছে, দেশের সার্বিক চালের পরিস্থিতি বিবেচনা করে গত ২৯ জুলাই সাময়িকভাবে চাল রপ্তানি বন্ধ করা হয়। যার ফলে আমরা উক্ত সময়সীমার মধ্যে মাত্র ৬৫০ মেট্রিক টন সুগন্ধি চাল রপ্তানি করতে সক্ষম হই এবং ২৩৫০ মেট্রিক টন সুগন্ধি চাল রপ্তানির অবশিষ্ট আছে। বর্তমানে আমাদের কাছে ১০ লাখ ডলারের বেশি চাল রপ্তানির আদেশ আছে।

এ অবস্থায় দেশের সুগন্ধি চালের তথা আন্তর্জাতিক বাজারে টিকিয়ে রাখতে আমন মৌসুমের সুগন্ধি ধান উঠার সঙ্গে সঙ্গে রপ্তানি বন্ধের আদেশ প্রত্যাহারসহ স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের অনুকূলে অনুমোদিত রপ্তানির অবশিষ্ট ২৩৫০ মেট্রিক টনের সময়সীমা আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানোর অনুরোধ করছি।

 

সংস্থাটি দেশিয় শিল্প বিকাশে তথ্য অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক সংকটময় সময়ে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে সহায়ক ভূমিকা রাখবে বলেও তাদের চিঠিতে উল্লেখ করেছে।

উত্তর দিন

Please enter your comment!
এখানে আপনার নাম লিখুন