#

পাবনার গণপূর্ত ভবনে অস্ত্র হাতে মহড়া দেয়া আওয়ামী লীগের দুই নেতার অস্ত্র জব্দ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পাবনার পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম খান।

যাদের অস্ত্র জব্দ করা হয়েছে তারা হলেন- পাবনা পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এ আর খান ও জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শেখ লালু।

শনিবার (১২ জুন) রাতে তাদের অস্ত্র দুটি জব্দ করা হয়। রোববার (১৩ জুন) সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেন পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম খান।

এ বিষয়ে পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসিম আহম্মেদ বলেন, ঘটনার পর পুলিশ শনিবার তদন্তে নামে। এরপর রাত ১১টার দিকে ওই দুই নেতা থানায় উপস্থিত হয়ে তাদের লাইসেন্স করা শটগান দুটি জমা দেয়ার জন্য লিখিত আবেদন করেন। পরে আবেদন নথিভুক্ত করে শটগান দুটি জমা নেয়া হয়।

ওসি আরও বলেন, ব্যক্তিগত কাজে তারা জেলার বাইরে থাকবেন। এজন্য অস্ত্র জমা দিচ্ছেন বলে লিখিত আবেদনে উল্লেখ করা হয়।

 

পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মাসুদ আলম সাংবাদিকদের বলেন, গণপূর্ত ভবনে অস্ত্র নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় কেউ কোনো অভিযোগ করেননি। তবে বৈধ অস্ত্র হলেও অস্ত্র হাতে সরকারি অফিসে মহড়া দেয়া আইনের পরিপন্থী। কাজেই বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এছাড়া তদন্তে দোষ প্রমাণিত হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এসবি) স্নিগ্ধ আখতার বলেন, সদর থানার পক্ষ থেকে পুরো ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে। বৈধ অস্ত্র হলেও তারা এতগুলো লোক নিয়ে কেন সরকারি অফিসে গেলেন-এমন বেশ কিছু বিষয় নিয়ে তদন্ত করছে পুলিশ।

এদিকে অস্ত্র নিয়ে মহড়ার ঘটনায় রোববার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি।

এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুল আহাদ বাবু বলেন, ‘আমাদের জানা মতে নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থে দলের ওই দুই নেতার হাতে অস্ত্র ছিল। এতে কোনো খারাপ মোটিভ ছিল না। অথচ একটি চক্র বিষয়টি ঘোলা করার চেষ্টা করছে। ঘটনাটি নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তদন্ত করছে। তদন্তে তাদের বিরুদ্ধে কোনো দোষ প্রমাণ হলে দলের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

গত ৬ জুন দুপুরে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ফারুক হোসেন তার লোকজন নিয়ে জেলা গণপূর্ত ভবনে প্রবেশ করেন। তার পেছনে শটগান হাতে ছিলেন পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এ আর খান ও জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শেখ লালু।

এ ঘটনার সিসিটিভির একটি ফুটেজ শনিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে প্রশাসন ও দলের মধ্যে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।

কিছু ঠিকাদার অভিযোগ করেন, ঠিকাদারি কাজের সুবিধা পেতেই আওয়ামী লীগ নেতারা এই মহড়া দিয়েছেন।

অন্যদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে দলের একাধিক নেতা বলেন, নেতারা সরলভাবে লাইসেন্স করা অস্ত্র নিয়ে গণপূর্ত ভবনে যান। বিষয়টির সুযোগ নিয়ে অন্য একটি মহল ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে সিসিটিভির ফুটেজ দিয়ে মিডিয়াসহ সবখানে ছড়িয়ে দিয়ে ভাইরাল করেছে।

পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম খাঁন জানান, এ ঘটনায় পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উত্তর দিন

Please enter your comment!
এখানে আপনার নাম লিখুন