সুদে টাকা নিয়ে চলছে পা হারানো সুমাইয়ার চিকিৎসা

লেখক:
প্রকাশ: ৬ years ago

‘আমি বাড়ি যাব মা, এখানে থাকতে আর ভালো লাগে না। তোমরা আমাকে বাড়ি নিয়ে চলো। আমি আবার মাঠে খেলতে যাব’- কথাগুলো ট্রাকচাপায় পা হারানো রংপুরের মাহিগঞ্জ এলাকার শিশু সুমাইয়া আক্তার মেঘলার। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২২ এপ্রিল দুর্ঘটনার পর থেকে চিকিৎসাধীন সুমাইয়ার দিনমজুর বাবা-মা সুদে টাকা নিয়ে চিকিৎসা করাচ্ছেন। ভর্তির পরদিন তার ডান পা হাঁটু থেকে কেটে ফেলা হয়েছে। এখন চিকিৎসকরা বলেছেন, আবারও শিশুটির অপারেশন করতে হবে। এদিকে ঘাতক ট্রাকটি আটক করা হলেও পুলিশ ১৪ দিনেও চালককে গ্রেফতার করতে পারেনি। অথচ চালক প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে বলে সুমাইয়ার বাবা অভিযোগ করেন।

মেঘলার বাবা শফিকুল ইসলাম ও মা কাজলী আক্তার জানান, তার মেয়ে সুমাইয়া আক্তারের প্রতিদিন ওষুধ বাবদ খরচ হয় প্রায় দেড় থেকে ২ হাজার টাকা। হাসপাতাল থেকে সকালে ও রাতে দুটি ইনজেকশন দেওয়া হয়। বাকি ওষুধ আমাদের কিনতে হচ্ছে। তারা জানান, ‘আমরা গরিব মানুষ, লেবারি করে খাই। প্রতিদিন দুই হাজার টাকা জোগাড় করা আমাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। সুদে টাকা নিয়ে মেয়ের ওষুধ কিনছি। এভাবে আর ক’দিন চালানো যায়। হাসপাতালে আর কতদিন থাকতে হবে তাও জানি না।’

চিকিৎসকরা বলেছেন, সুমাইয়ার পায়ের আবারও অপারেশন করতে হবে। প্রথম অপারেশনের সময় হাঁটুর হাড় সমান করে কাটা হয়নি। তাই সেটি সমান করে কাটার জন্য অপারেশন করতে হবে। এ জন্য রক্তের প্রয়োজন হবে। তারা আরও জানান, সরকারি বা বেসরকারি কোনো প্রতিষ্ঠান সহায়তা করেনি। তবে পত্রিকায় খবর প্রকাশের পর এক ব্যক্তি ১৫ হাজার টাকা দিয়েছে ওষুধ কেনার জন্য। তারা সরকারি-বেসরকারিসহ সমাজের দানশীল বক্তিদের আর্থিক সহায়তার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। এদিকে দুর্ঘটনায় দায়ী ঘাতক ট্রাকচালক টিটু মিয়া কোনো সাহায্য-সহযোগিতা করেনি। পুলিশও তাকে গ্রেফতার করেনি। সে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

এ ব্যাপারে কোতোয়ালি থানার ওসি বাবুল মিয়া জানান, সুমাইয়ার পায়ের ওপর দিয়ে চলে যাওয়া ট্রাকটি আটক করা হয়েছে। সেটি এখন মাহিগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়িতে রয়েছে। এ বিষয়ে কোনো মামলা হয়নি। তবে চালককে আটকের চেষ্টা চলছে।