সারিকার ৭ পর্বের ধারাবাহিক ‘কড়িওয়ালা’

:
: ২ years ago

এবারের ঈদে বেসরকারি স্যাটেলাইট চ্যানেল নাগরিক টিভিতে থাকছে সাত দিনব্যাপি বর্ণাঢ্য আয়োজন। এই আয়োজনে থাকছে একাধিক ধারাবাকি নাটক। এগুলোর মধ্যে অন্যতম ‘কড়িওয়ালা’।

ব্যতিক্রমী নামের এই নাটকটি রচনা করেছেন মাহবুব হাসান জ্যোতি, পরিচালনা করেছেন আশরাফী মিঠু। নাটকটির সার্বিক তত্বাবধানে মিন্টু আলম, নির্বাহী প্রযোজক এম এ আউয়াল।

নাটকটিতে অভিনয় করেছেন জাহের আলভী, সারিকা সাবরিন, আব্দুল্লাহ রানা, হিমে হাফিজ, লাবণী মিম। নাটকটি প্রচার হবে ঈদের দিন থেকে ৭ম দিন পর্যন্ত প্রতিদিন রাত ৮টা ৫৫ মিনিটে।

নাটকের গল্পে দেখা যাবে, কাগুজে নোটের আধিপত্যে অস্থিরর চারপাশ। টাকার হিসাব মেলাতে গিয়ে হাসির ঘটনাও ঘটছে। আবার কখনো সম্মান, মর্যাদা রক্ষা করা বড়ো দায় হয়ে যায় এই টাকার জন্য।

গল্পের প্রধান চরিত্র মোফাক্কার তার বাবার সঙ্গে বাজারে গিয়ে টের পায় ক্রেতার টাকা আছে তাকে পছন্দ চিনে রাখে দোকানিরা। দুনিয়ার সবাই এখন টাকার পেছনে ঘুরছে! টাকা নিয়ে অদ্ভুত আর মজার কেচ্ছা কাহিনি বলে বেড়ান এই অস্থির সময়ের কিছু বুদ্ধিজীবি। কিন্তু আলোচনা শেষে তার হাতে আসা খামটির ভেতরে কতো আছে- সেই তথ্যটিও যাচাই করে নেন!

মোফাক্কার শহরে আসে পিতার বকুনিতে। পাশের বাড়ির হাসমত মিয়ার ছেলে মধ্যপ্রাচ্যে গিয়ে দোতলা বাড়ি বানিয়েছে। বাড়ি পাহারা দেবার দারোয়ান নিয়োগ দিয়েছে আর তুই মোফাক্কার বাবার ঘাড়ে বসে বসে এখনো খাচ্ছিস! এক রোখা মোফাক্কার হজম করতে পারেনি পিতার সেই বকুনি।

সোজা চলে আসে ঢাকায়। ফুটপাতের একটা টং দোকানে চা খেতে খেতে টেলিভিশনের মুদ্রাস্ফীতি নিয়ে রসালো আলোচনা তার নজর কাড়ে।

একজন কড়ি বিক্রেতার সঙ্গে তার পরিচয় হয়। যে কিনা এই শহরে পথেঘাটে কড়িবিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে। যারা বলে, বাস্তব জীবনের ঠেলায় পড়লে অবাস্তব সব পালায়, তাদের এই কথা মানতে নারাজ মোফাক্কার। আর অন্যের চিন্তাই বা সে গ্রহণ করবে কেন, সে তো কোনো অংশে কম বোঝে না! পড়তে পারে। লিখতে পারে। ফেসবুক চালাতে পারে! ফলে দেশ বিদেশের অর্থনীতি, সমাজনীতি, রাষ্ট্রব্যবস্থা এমন কোনো তথ্য উপাত্তও নেই যে যা তার অজানা। সে সব জান্তা!

যাই হোক, সন্তানের জন্য অস্থির মা। ছেলে কোথায় খাবে, কোথায় থাকবে সেই চিন্তা থেকে পরামর্শ দেন তার বড় ভাইয়ের বাড়িতে যেতে। সদ্য টিনএজ পার হওয়া আদুরি তার দূর সম্পর্কের মামাতো বোন। তার মামা তরিকুল বিশাল জায়গার মধ্যে টিনের একটা ঘরে মামি আর আদুরিকে নিয়ে বসবাস করছিল।

মামা বসতঘরের সামনে পড়ে থাকা খালি জায়গাতে লাল শাক, পুঁই শাকসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করত। তরতাজা সবজি নিজেরা খাওয়ার পাশাপাশি আশপাশের রাস্তায় দাঁড়িয়ে বিক্রিও করত। সঙ্গে লালন-পালন করত একঝাঁক মুরগিও।

বলা যায়, বাড়ির প্রতিটি ইঞ্চি মাটির তিনি যত্ন নিতেন পরম আবেগে। মোফাক্কার ভেবেছিল এই জায়গাটি তার মামারই। কিš‘ একদিন বুঝতে পারল এ জায়গা মামা তরিকুলের নয়। এত দিন ধরে সে যে ধারণা করে আসছে, সেটা ভুল। তার মামা শুধু এই জায়গার পাহারাদার। আর জায়গার মালিকের আগমনটাও তার মস্তিষ্কে গেঁথে থাকবে।

তুমুল আষাঢ়ে বৃষ্টি। সঙ্গে আকাশে থেমে থেমে বজ্রপাত। এর মাঝে মামা তরিকুলকে কেউ একজন ফোন দিয়ে জানায়, ছাতা নিয়ে সামনে এগোতে। মামা অনেকটা অস্থিরতার মধ্য দিয়ে ছাতা নিয়ে সামনে যান। নাদুস-নুদুস স্বাস্থ্যের আধাপাকা চুলওয়ালা একজন লোক সাদা রঙের দামি একটা গাড়ি থেকে বের হয়। মামা বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে ঘরে নিয়ে আসেন আগত সেই মানুষটাকে। আদুরি তখন বৃষ্টি স্নানে। আকাশে বজ্রপাতের বিকট আওয়াজ। মোফাক্কার খেয়াল করে ভেজা শরীরে মুহূর্তেই আদুরি তাকে এসে জাপটে ধরেছে। ভয়ে আবার থরথর করে লিকলিকে ফর্সা শরীরটা কাঁপছেও। মোফাক্কার অভয় দেয়। আদুরির বাহু থেকে নিজেকে মুক্ত করে। কিন্তু যুক্ত থেকে যায় সেই আবেশ, সেই শিহরণ।

মোফাক্কারের মামা যে জায়গার পাহারাদার শুধু এই জায়গাটাই না, পাঠানের আরও আছে ধানমন্ডি, বনশ্রী, বাড্ডাসহ এই শহরে আনাচ-কানাচে অনেক জায়গা-জমিন। ফ্ল্যাট। তবে পাঠান সাহেব তার অন্য জায়গাতে না গেলেও মামার এই বাড়িতে নিয়ম করে আসেন। সপ্তাহের প্রতি শুক্রবার বিকালে এখানে আসাটা যেন রুটিন হয়ে গেছে। অন্য দিন এলে তো তিনি আদুরিকে দেখতে পাবেন না।

ঘটতে থাকে যতসব আজগুবি ঘটনা। অনেকটা স্যাটায়ার, আর মজার ঘটনাপ্রবাহের মাধ্যমে আবেগি গল্প বলা হবে সাত পর্বের ‘কড়িওয়ালা’তে।