#

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে এক ছাত্রলীগ নেতাকে মেরে রক্তাক্ত করার অভিযোগ উঠেছে একই সংগঠনের নেত্রী বেনজীর হোসেন নিশির বিরুদ্ধে।

একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে এই ঘটনা ঘটে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বেনজীর হোসেন নিশি।

অভিযুক্ত নিশি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক। আর আহত মো. এহসানুল হক ইয়াসির ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সাবেক ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সম্পাদক। বর্তমানে সলিমুল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ শাখা ছাত্রলীগের শীর্ষ পদপ্রত্যাশী তিনি।

ইয়াসির বলেন, একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে শহীদ মিনারে আমরা মহানগর দক্ষিণ শাখা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে ফুল দিতে যাই। সেখানে যাওয়ার সময় আমাদের পেছনে ধাক্কাধাক্কি হয়। এসময় হঠাৎ করে বেনজীর হোসেন নিশি এসে তার মোবাইল দিয়ে আমার মাথায় এলোপাতাড়ি আঘাত করতে থাকেন। এতে মাথা ফেটে রক্ত বের হয়। তাৎক্ষণিকভাবে সঙ্গে থাকা পরিচিতরা আমাকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যায়। সেখানে দেওয়া হয় চিকিৎসা। তিন-চারটি সেলাই লেগেছে আমার।

তিনি বলেন, এখন আমি বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছি। কথা বলতে কষ্ট হচ্ছে আমার। এ ঘটনার বিচার দাবি করছি।

তবে ইয়াসিরকে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বেনজীর হোসেন নিশি। তিনি বলেন, শহীদ মিনারে কারো সঙ্গে আমার বিবাদ হয়নি। মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া হচ্ছে আমার নামে। আমি শুধু জেনেছি, শহীদ মিনারে ফুল দিতে যাওয়া কয়েকজন নারী শিক্ষার্থীকে কে বা কারা শ্লীলতাহানি করছিল।

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি মাজহারুল ইসলাম শামীম বলেন, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কোনো নেতা অপরাধ করলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে পারে কেন্দ্রীয় সংসদের সভা। কিন্তু শহীদ মিনারে ছাত্রলীগের নেতাকে পিটিয়ে রক্তাক্তের ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি আগেও আরেক নারী নেত্রীকে মারধর করেন। তার বিরুদ্ধে যদি আগে ব্যবস্থা নেওয়া হতো তাহলে আজকে এ ঘটনা ঘটতো না। ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের ঘনিষ্ঠজন হওয়ায় তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

মারধরের কথা শুনে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ইয়াজ আল রিয়াদ বলেন, এ ধরনের ঘটনা খুবই দুঃখজনক। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কেউ যদি এটার সঙ্গে জড়িত থাকে, তাহলে তা আরও বড় দুঃখের বিষয়। এর আগেও একজন ছাত্রলীগ নেত্রীকে মারধরের ঘটনা সাংগঠনিকভাবে সুরাহা হয়নি। পরে এটি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। যারা এসব সংগঠনবিরোধী কাজ করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

ছাত্রলীগের উপ-প্রশিক্ষণ সম্পাদক মেশকাত হোসেন বলেন, অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেত্রীর বিরুদ্ধে এর আগেও কয়েকজনকে মারধর ও অসদাচরণের অভিযোগ রয়েছে। শাস্তি না হওয়ায় তিনি বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। তার এসব কর্মকাণ্ড প্রমাণ করে সংগঠনে শৃঙ্খলা নেই।

এসব বিষয়ে জানতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় এবং সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তাদের সাড়া পাওয়া যায়নি।

এর আগে ২০২০ সালের ২০ ডিসেম্বর রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদ প্রাঙ্গণে ফাল্গুনী দাস তন্বী নামে এক ছাত্রলীগ নেত্রীকে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ রয়েছে বেনজীর হোসেন নিশির বিরুদ্ধে। এ অভিযোগে আদলতে মামলাও হয়েছে।

পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তদন্ত করে সেই মামলার। তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে আদালত এই ছাত্রলীগ নেত্রীসহ তার পাঁচ সহযোগীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। পরে তারা আদালতে হাজির হয়ে জামিন প্রার্থনা করলে তা মঞ্জুর হয়। সেই মামলা এখনো চলমান।

উত্তর দিন

Please enter your comment!
এখানে আপনার নাম লিখুন