কর্মকর্তাদের সঙ্গে অসাদাচরণের দায়ে রূপালী ব্যাংকের বহিষ্কৃত সিবিএ নেতাদের চাকরিচ্যুতসহ বিভিন্ন শাস্তি প্রত্যাহারে ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে হুমকি দিয়েছেন নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান। রোববার রূপালী ব্যাংকের চাকরিচ্যুত সিবিএ নেতাদের আয়োজিত অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এ হুমকি দেন।
শাজাহান খান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ট্রেড ইউনিয়নের পক্ষে। শ্রমিক নেতাদের দোষ দিয়ে আদমজী জুট মিল বন্ধ করে বিএনপি। অফিসারদের লুটপাটের কথা কিন্তু বলা হয়নি। গোড়ায় হাত দিলে অনেক কিছু বেরিয়ে যায়। এতটুকু বলবো, প্রধান বিচারপতি সিনহার ইতিহাস সবার জানা। সুতরাং গোড়ায় হাত দিলে অনেকের অনেক কিছু বেরিয়ে আসবে। আমরা চাই না প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পর্যায়ে যারা আছেন তাদের অনেক কিছু বেরিয়ে যাক। সুতরাং বিষয়টির সম্মানজনক সমাধান করুন।
মন্ত্রী বলেন, আমার অনুরোধ একটা সম্মানজনক সমাধান আপনারা করুন। সেক্ষেত্রে আমাদের কী করতে হবে সেটা বলুন। আমরা রাজি আছি এবং শ্রমিক নেতাদের উচিত হবে ঐক্যবদ্ধভাবে বিষয়টি কিভাবে সমাধান করা যাবে সেটি ভাবুন। আমি এ বিষয়ে এতদিন কথা বলি নাই। ম্যানেজমেন্টের আচরণ পর্যবেক্ষণ করেছি। তাদের আচরণ সম্পর্কে কিছু বলতে চাই না।
সূত্রে জানা গেছে, মন্ত্রীর এটি পূর্ব নির্ধারিত কোনো কর্মসূচি ছিল না। ব্যাংকের কাছ থেকে কর্মসূচি পালনের জন্য অনুমতিও গ্রহণ করা হয়নি। তবে নৌমন্ত্রী শাজাহান খান ব্যাংকে গেলেও ব্যাংকটির ঊর্ধ্বতন কোনো কর্মকর্তার সঙ্গে দেখা করেননি। ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আতাউর রহমান প্রধান এ সময় ব্যাংকে ছিলেন না।
চাকরিচ্যুত সিবিএ নেতা মোস্তাক আহমেদ জানান, সমবেদনা জানানোর জন্য মন্ত্রী মহোদয় এসেছিলেন। ট্রেড ইউনিয়ন রক্ষা করতে, ব্যাংক বাঁচাতে সমঝোতা করতে বলেছেন তিনি।
এ সময় সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট সোহরাব উদ্দিনসহ শ্রমিক লীগ ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সিবিএ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
রূপালী ব্যাংক সূত্র জানায়, গত বছরের ৫ ডিসেম্বর স্থানীয় কার্যালয়ের মহাব্যবস্থাপক (জিএম), উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) ও সহকারী মহাব্যবস্থাপককে লাঞ্ছিত করেন সিবিএ নেতারা। সিবিএ অপর পক্ষের নেতা মহিউদ্দিন স্থানীয় শাখায় যোগ দিতে গেলে তাদের লাঞ্ছিত করে মোস্তাক-কাবিল নেতৃত্বাধীন গ্রুপ। নিজ কক্ষ থেকে টেনেহিঁচড়ে বের করে তাদের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদকের নাম হাজিরা তালিকা থেকে মুছে ফেলে ও অনুস্বাক্ষর করতে বাধ্য করা হয়।
ওই ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি সিবিএ সভাপতি খন্দকার মোস্তাক আহাম্মেদ, সাধারণ সম্পাদক কাবিল হোসেন কাজী ও কাপ্তান বাজার শাখার অফিস সহকারী আরমান মোল্লাকে বরখাস্তের সুপারিশ করে। তাদের এ সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়ে সাতদিনের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে। জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় তাদের বরখাস্ত করা হয়। এ ছাড়া বাধ্যতামূলক অবসর প্রদান করা হয় প্রধান কার্যালয়ের সংস্থাপন ও কল্যাণ বিভাগের গাড়িচালক আবুল কালাম আজাদকে।
একই সঙ্গে স্থানীয় কার্যালয়ের অফিস সহকারী আনোয়ার হোসেন, ভিজিল্যান্স অ্যান্ড ইন্টেলিজেন্স বিভাগের অফিস সহকারী মনিরুল ইসলাম, শিল্প ঋণ বিভাগের অফিস সহকারী সাব্বির আহমেদ ভূঁইয়াকে পদাবনতিসহ রাজধানীর বাইরে বদলি করা হয়।