‘যদি বল ব্যাটে না লাগে তাও দৌড়াবি’-শরিফুলকে হৃদয়

:
: ১২ মাস আগে

৫ বলে প্রয়োজন ছিল ২ রান। হাতে ৫ উইকেট। শেষ পর্যন্ত করিম জানাতের হ্যাটট্রিকে এবং লাল সবুজের ব্যাটসম্যানদের আসা যাওয়ার মিছিলে সমীকরণ দাঁড়ায় ২ বলে ২ রান। তখন হাতে ২ উইকেট।

সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের গগণ বিদারি গর্জন রূপ নিলো শ্মশানে। আবার তীরে এসে ডুববে না-তো তরী? এক প্রান্তে দাঁড়িয়ে আসা-যাওয়ার মিছিল দেখছিলেন ষোলো কোটির বাঙালির ভরসা হয়ে থাকা হৃদয়।

 

কিন্তু লাভ কি? হৃদয় যে নন স্ট্রাইক প্রান্তে। জয়ের ভিত গড়ে দেওয়া হৃদয়ের ভাগ্যে বিধাতা হয়তো উইনিং শট লিখে রাখেননি। তাইতো শেষ ওভারজুড়ে ছিল হ্যাটট্রিক নাটকীয়তা। তখন ক্রিজে আসেন নতুন ব্যাটসম্যান শরিফুল ইসলাম।  শেষে এসে শোকের শংকা কাটিয়ে শেষ পর্যন্ত পয়েন্টে শরিফুলের কাটে দারুণ চারে আসে শ্বাসরুদ্ধকর, রোমাঞ্চকর জয়।

ম্যাচ শেষে বাংলাদেশ দলের প্রতিনিধি হয়ে আসা হৃদয়ের কাছে প্রথম  প্রশ্নই ছিল শরিফুলকে কি বলেছেন? তার উত্তর, ‘শরিফুলকে বলছিলাম বল যদি ব্যাটে না লাগে তুই দৌড় দিস। পরে লাস্ট বার বলেছি, ম্যাচটা তুই জেতাবি’-এভাবে বলেন হৃদয়।

১৫৫ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে বাংলাদেশ ১ বল হাতে রেখে ৮ উইকেটে লক্ষ্যে পৌঁছে। হৃদয় ৩টি চার ও ২টি ছয়ে ৩২ বলে ৪৭ রান করে অপরাজিত ছিলেন। তার হাতে উঠে ম্যাচে সেরার পুরস্কার। ১ বলে ৪ রান করে অপরাজিত ছিলেন শরিফুল।

শুধু তাই নয়, হৃদয়ের অগাধ বিশ্বাস ছিল শরিফুলের উপর। দুজনে ছিলেন যুববিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য। দীর্ঘ দিনের চেনা জানা ছিল। ‘শরিফুলের ওপর বিশ্বাস আমার ছিল আগে থেকেই, কারণ ওর সম্ভাবনা আমি জানি। আমরা একসঙ্গে অনূর্ধ্ব-১৯ দল থেকে খেলছি এবং সে বড় বড় ছয় মারতে পারে। শরিফুল আসা পর্যন্ত আমার তাই বিশ্বাস ছিল’-বলছিলেন হৃদয়।

২ ম্যাচের সিরিজে বাংলাদেশ এগিয়ে গেলো ১-০ ব্যবধানে। সিরিজের শেষ ম্যাচ হবে একদিন বাদে ১৬ জুলাই, একই মাঠে। দলের জয়ে হৃদয় কৃতিত্ব দিচ্ছেন সবাইকে। তারুণ্যের আড়ালে তার কণ্ঠে পেশাদারিত্বের স্পষ্ট চাপ।

 

‘আমার মনে হয়, আজকের ম্যাচটিতে সবাই অবদান রেখেছি। শুধু আমি, শরিফুল, শামীম, আমরা নই। আমরা তিনজন একসঙ্গে বিশ্বকাপ (যুব) খেলেছি, এজন্যই নয়। শুরু থেকে যদি দেখেন, তাসকিন ভাই…প্রতিটি বোলার, সাকিব ভাই থেকে শুরু করে সবাই খুব ভালো শুরু এনে দিয়েছে। সবার অবদান ছিল। ফিল্ডিংয়ে হোক বা সব দিক থেকে অবদান রেখেছে।’

‘বিশেষ ভাবে যদি আমাদের কথা বলেন, আমরা সবসময় চেষ্টা করি দলে অবদান রাখতে এবং প্রতিটি খেলোয়াড় সেটিই কের। আমরা দেশের জন্য খেলছি। সবসময় এটাই মাথায় থাকে যে দেশের জন্য খেলব, দেশকে ভালো ফল এনে দেব’-আরও যোগ করেন হৃদয়।