মেসি-রোহোর গোলে শেষ ষোলোয় আর্জেন্টিনা

লেখক:
প্রকাশ: ৬ years ago

ছবিতে রোহোর কাঁধে চড়েছেন মেসি। আর ম্যাচ শুরুর আগে মেসির কাঁধে ছিল আর্জেন্টিনার দায়িত্ব। মেসির ওপর চাপটা তো ছিল পর্বতের মতো। বরফের দেশ আইসল্যান্ড ওই খন্ড খন্ড বরফে গঠিত বিশাল পর্বতের চাপটা মেসির ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়েছিল। ক্রোয়েশিয়া ম্যাচেও সেই ভার হতে মুক্ত হতে পারেননি মেসি। মুক্ত করতে পারেননি তার দল আর্জেন্টিনাকেও। কিন্তু নাইজেরিয়ার বিপক্ষে সে চাপ বেশিক্ষণ নিজের ওপর রাখলেন না বিশ্বের অন্যতম সেরা ফুটবলার মেসি। ম্যাচের শুরুতেই সব চাপ দিয়ে দিলেন নাইজেরিয়ার ঘাড়ে।

ম্যাচের তখন ১৪ মিনিট। মাঝমাঠ থেকে লম্বা পাস দিলেন ইভার বানেগা। বলটি নিজের থাইয়ের ওপর নিয়ে চোখ ধাঁধাঁনো নিয়ন্ত্রন নিলেন  মেসি। বলও শুনল মেসির কথা। এরপর পা ছুঁইয়ে সামনে বাড়ালেন বল। তার পেছনে থাকা নাইজেরিয়া ডিফেন্ডার হয়ত লাভ হবে না জেনেও ধাওয়া করলেন মেসিকে। লাভ হলোও না। বাঁ পায়ের কোনাকুনি মেসির শট। তা থেকে গোল। আর্জেন্টিনা নিল ১-০ গোলের লিড। আর মেসি দৌড়ে গেলেন গ্যালারির কাছে। হাঁটু গেড়ে বসে ধন্যবাদ জানালেন ঈশ্বরকে।

কিন্তু মাশ্চেরানোর দৃষ্টিকটু ভুলে পেনাল্টি পেয়ে যায় নাইজেরিয়া। ম্যাচের ৫৪ মিনিটে পাওয়া পেনাল্টি থেকে গোল করে দলকে সমতায় ফেরান মোজেস। তবে ম্যাচের শেষ নায়ক হিসেবে নাম খেলা ছিল মার্কোস রোহোর। ব্রাজিল বিশ্বকাপের কথা একবার মনে করার চেষ্টা করুণ। সেবারও ম্যাচে আর্জেন্টিনা-নাইজেরিয়া সমতায় ছিল। মেসির দুই গোল আর মুসার দুই গোলে ৫৩ মিনিট পর্যন্ত সমতা। সেই ম্যাচে ৫৪ মিনিটে গোল করে ম্যাচের নায়ক বনে যান রোহো। আর নাইজেরিয়ার বিপক্ষে ‘ডি’ গ্রুপের ম্যাচে সেন্ট পিটার্সবার্গে মঙ্গলবারের গোলে তিনি ‘মহানায়ক’। তার ৮৪ মিনিটের গোলে দল আবার ২-১ গোলের লিড নেয়। ওই গোলের দ্বিতীয় রাউন্ড নিশ্চিত করে আর্জেন্টিনা।

এর আগে মেসির গোলের জন্য শুরুতেই দারুণ পাস দেওয়া বানেগার কৃতিত্ব অবশ্যই দিতে হবে। আগের দুই ম্যাচে প্রথম একাদশে জায়গা মেলেনি তার। আর্জেন্টিনা দলে বড়সহ পরিবর্তনের মধ্যে আছে বানেগার নামও। শুরুতেই মেসিকে দিয়ে গোল করিয়ে বানেগা বুঝিয়ে দিলেন কেন ম্যারাডোনাও তাকে নিয়ে কথা বলেছেন। মাঝমাঠে তার গুরুত্ব আসলে কতটুকু।

এরপর ম্যাচের ২৭ মিনিটে হিগুয়েইনকে দারুণ এক থ্রু দেন মেসি। কিন্তু তা থেকে গোল করে দলের লিড বাড়াতে পারেননি আর্জেন্টিনা স্ট্রাইকার। ম্যাচের ৩৪ মিনিটে মেসি বক্সের বাইরে ফ্রি কিক পান। তা থেকে মেসিসুলভ এক শট নেন বার্সেলোনা তারকা। কিন্তু বারে লাগায় মেসি এবং আর্জেন্টিনা গোল বঞ্চিত হয়।

দ্বিতীয়ার্ধে আবার দারুণ দুটি সুযোগ মিস করেন হিগুয়েইন। ব্রাজিল বিশ্বকাপের ফাইনাল, কোপা আমেরিকা ফাইনালের মতো আবার আর্জেন্টিনার খলনায়ক হতে চলেছিলেন জুভেন্টাস স্ট্রাইকার হিগুয়েইন। কিন্তু শেষ সময়ে মার্কোস রোহোর দারুণ গোল তাকে এ যাত্রার বাঁচিয়ে দিয়েছে। আর্জেন্টিনা দ্বিতীয় রাউন্ডে গেছে গ্রুপে দ্বিতীয় হয়ে। ক্রোয়েশিয়া ‘ডি’ গ্রুপ থেকে গ্রুপ সেরা হয়েছে। আগামী ৩০ জুন আর্জেন্টিনা দ্বিতীয় রাউন্ডের ‘সি’ গ্রুপ সেরা ফ্রান্সের মুখোমুখি হবে।‘ডি’ গ্রুপ সেরা ক্রোয়েশিয়া খেলবে ‘সি’ গ্রুপের দ্বিতীয় সেরা দল ডেনমার্কের বিপক্ষে।