বিক্ষোভকারীদের তোপের মুখে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন শ্রীলঙ্কার সদ্যসাবেক প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে। তবে সেই সুযোগ আপাতত পাচ্ছেন না তার দুই ভাই মাহিন্দা রাজাপাকসে ও বাসিল রাজাপাকসে। এ দুই নেতার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে শ্রীলঙ্কার সুপ্রিম কোর্ট। খবর ডেইল মিররের।
শুক্রবার (১৫ জুলাই) লঙ্কান সুপ্রিম কোর্ট এক অভ্যন্তরীণ আদেশে শ্রীলঙ্কার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা ও সাবেক অর্থমন্ত্রী বাসিল রাজাপাকসের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। আদালতের অনুমতি ছাড়া আগামী ২৮ জুলাই পর্যন্ত শ্রীলঙ্কা থেকে বের হতে পারবেন না তারা।
এদিন শ্রীলঙ্কার সাবেক প্রধানমন্ত্রী, সাবেক অর্থমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর অজিথ নিভার্ড ক্যাবরাল, ডব্লিউডি লক্ষ্মণ ও সাবেক অর্থসচিব এসআর অ্যাটগালের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে একটি আবেদনের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এতে সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ সদস্যের বেঞ্চের সংখ্যাগরিষ্ঠ বিচারপতি আবেদনের পক্ষে মত দেন।
আবেদনে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতিতে ব্যাপক অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়। নির্ভরযোগ্য সূত্রের বরাতে আবেদনকারীদের দাবি, অভিযুক্তদের মধ্যে কেউ কেউ দেশ ছেড়ে চলে যেতে পারেন এবং এর ফলে সঠিক তদন্ত বাধাগ্রস্ত হতে পারে। একারণে তাদের ওপর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা প্রয়োজন বলে মনে করে বাদী পক্ষ।
নজিরবিহীন অর্থনৈতিক সংকট ও গণ-আন্দোলনের মুখে গত মঙ্গলবার (১২ জুলাই) রাতে একটি সামরিক প্লেনে সপরিবারে দেশ ছেড়ে মালদ্বীপে পালিয়ে যান লঙ্কান প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে। কিন্তু এ নিয়ে মালদ্বীপে বসবাসরত লঙ্কানরা বিক্ষোভ শুরু করেন। তাকে মালদ্বীপে আশ্রয় না দেওয়ার দাবি জানান বিক্ষুব্ধরা।
এর পরিপ্রেক্ষিতে সিঙ্গাপুরে পালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন গোতাবায়া। সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে তাদের মালদ্বীপ থেকে সিঙ্গাপুরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নিরাপত্তা সংক্রান্ত উদ্বেগের কারণে থেকে তারা সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের ফ্লাইটে ওঠা থেকে বিরত থাকেন। গোতাবায়া, তার স্ত্রী ও দুই দেহরক্ষী ব্যক্তিগত উড়োজাহাজে সিঙ্গাপুরে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন বলে খবর বের হয়। তবে শেষ পর্যন্ত সৌদি এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে মালদ্বীপ ছাড়েন এ নেতা। পরে সিঙ্গাপুর থেকেই স্পিকার মাহিন্দা ইয়াপা আবেবর্ধনেওয়ের কাছে ইমেইলে পদত্যাগপত্র পাঠান প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে।