ব্যাংকঋণের সুদহার আরও বেড়ে সাড়ে ১৩ শতাংশ ছাড়িয়েছে। নতুন এ সুদহার ১ এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে এবং এপ্রিল মাসের জন্য তা বহাল থাকবে। গত জুলাই মাসের পর ব্যাংকঋণের ওপর সর্বোচ্চ সুদহার এটি।
ফলে ব্যাংকঋণের পাশাপাশি ভোক্তা ঋণে আরও বেশি সুদ দিতে হবে। এপ্রিল মাস থেকে ব্যাংকঋণের সুদহার বাড়িয়ে ১৩ দশমিক ৫৫ শতাংশ করা হয়েছে। আর ভোক্তায় গুনতে হবে ১৪ দশমিক ৫৫ শতাংশ সুদ, যা মার্চে ব্যাংকঋণে ছিল ১৩ দশমিক ১১ শতাংশ এবং ভোক্তা ঋণে ছিল ১৪ দশমিক ১১ শতাংশ। তার আগে ফেব্রুয়ারিতে ছিল যথাক্রমে ১২ দশমিক ৪৩ শতাংশ এবং ১৩ দশমিক ৪৩ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংক এখন সুদহার নির্ধারণে নতুন পদ্ধতি অনুসরণ করছে। ফলে ঋণের সুদহার প্রতি মাসেই বাড়ছে। গত ফেব্রুয়ারি মাসে ব্যাংকঋণের সুদহার ছিল ১২ দশমিক ৪৩ শতাংশ। যা তার পরের মাস মার্চে বেড়ে ১৩ দশমিক ১১ শতাংশ হয়।
গত জানুয়ারির শেষে স্মার্ট রেট বেড়ে হয়েছিল ৮ দশমিক ৬৮ শতাংশ, ফেব্রুয়ারিতে আরও বেড়ে হয় ৯ দশমিক ৬১ শতাংশ, মার্চে এসে আরও বাড়ে।
শিল্প উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, নতুন পদ্ধতি অনুসরণ করায় প্রতি মাসেই ব্যাংকঋণের সুদহার বাড়ছে। বাড়তি সুদ গুনতে গিয়ে বিপাকে পড়তে হচ্ছে তাদের। এতে ব্যবসার খরচও বেড়ে যাচ্ছে তাদের।
এর আগে এক অঙ্ক বা ব্যাংকঋণের সর্বোচ্চ সুদের হার নির্ধারিত ছিল ৯ শতাংশ। কেন্দ্রীয় ব্যাংক গত জুলাই থেকে সুদের হার নির্ধারণ করে দেওয়ার ওই পদ্ধতি থেকে সরে আসে। বর্তমানে স্মার্ট পদ্ধতি বা সিক্স মান্থস মুভিং অ্যাভারেজ রেট অব ট্রেজারি বিল পদ্ধতিতে ঋণের সুদের ভিত্তি হার নির্ধারিত হয়ে থাকে। ভিত্তি হারের সঙ্গে আগে বাড়তি সাড়ে ৩ শতাংশ সুদ যুক্ত হলেও এবারে বাংলাদেশ ব্যাংক ৩ শতাংশ সুদ যোগ করার জন্য বলেছে। ভিত্তি হার ও বাড়তি সুদ এই দুই মিলিয়ে ঋণের চূড়ান্ত সুদহার নির্ধারণ করে বাণিজ্যিক ব্যাংক।
মার্চ মাস শেষে স্মার্ট হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক ৫৫ শতাংশে। স্মার্টের সঙ্গে ৩ শতাংশ সুদ যুক্ত করলে ব্যাংকঋণের সুদহাট দাঁড়ায় ১৩ দশমিক ৫৫ শতাংশ।
২০২০ সালের এপ্রিলে ব্যাংকঋণের সর্বোচ্চ সুদ ৯ শতাংশে নির্ধারণ করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। এর পরপরই অর্থনীতিতে সংকট শুরু হলে গত বছরের জুন থেকে ব্যাংকঋণের সুদহার নির্ধারণে নতুন পদ্ধতি স্মার্ট চালু করা হয়। সরকারি ট্রেজারি বিলের ছয় মাসের গড় সুদহারের ভিত্তিতে ব্যাংকঋণের এ সুদহার নির্ধারিত হচ্ছে। প্রতি মাসের শুরুতে স্মার্ট সুদহার প্রকাশ করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
ঋণের ওপর সর্বোচ্চ সুদহার নির্ধারণ করা হয়েছিল ৯ শতাংশ, আর আমানতের ওপর সর্বোচ্চ সুদ হার ছিল ৬ শতাংশ। ‘৯-৬ সুদহার’ উঠিয়ে নেওয়ার পর ঋণের সুদহার বেড়ে এখন সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠেছে। এখন ঋণের সুদহার বাড়ার পাশাপাশি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আমানতের ওপর সুদের হারও বেড়েছে।