বৃষ্টির পর পাওয়া গেল দোলার লাশও

লেখক:
প্রকাশ: ৬ years ago

পুরান ঢাকার চুড়িহাট্টায় অগ্নিকাণ্ডে অঙ্গার হওয়া আরও চারটি লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে শনাক্ত হওয়ার পর  মঙ্গলবার লাশগুলো হস্তান্তর করা হয়। এর মধ্যে ফাতেমাতুজ জোহুরা বৃষ্টির বান্ধবী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী রেনুবা তাবাসুম দোলার লাশটিও রয়েছে। এ নিয়ে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে শনাক্তের পর মোট ১৫ জনের লাশ হস্তান্তর করা হলো। এর আগে ৬ মার্চ বৃষ্টিসহ ১১ জনের লাশ হস্তান্তর করা হয়েছিল।

ডিএনএ পরীক্ষা করে লাশ শনাক্তের বিষয়ে এদিন  পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) মালিবাগে প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে। এ সময় বলা হয়, ঘটনাস্থল থেকে ৬৭টি নয়, ৬৬টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। একটি ব্যাগে দুটি মৃতদেহের খণ্ডাংশ ছিল। সেটিও একটি লাশ ধরা হয়েছিল। এ কারণে সে সময় বলা হয়েছিল ৬৭টি লাশ উদ্ধারের কথা। তবে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে ব্যাগটির মধ্যে মিঠু ও নিপু নামের দু’জনের মৃতদেহের খণ্ডাংশ পাওয়া যায়। সিআইডি প্রধান ও অতিরিক্ত আইজিপি শেখ হিমায়েত হোসেন সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।

মঙ্গলবারের তথ্য অনুযায়ী, ২০ ফেব্রুয়ারি চুড়িহাট্টার অগ্নিকাণ্ডে মৃতের সংখ্যা ৭০ জন। এর মধ্যে ঘটনাস্থল থেকে ৬৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় চারজনের। অবশ্য প্রথম থেকে বলা হচ্ছিল, ৭১ জনের মৃত্যু হয়েছে আগুনে।

এদিন শনাক্তের পর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী দোলা, রিকশাচালক গোলাম মোস্তফা, ব্যবসায়ী হাজি ইসমাইল ও ফয়সাল সারওয়ারের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। দোলার বাসা পুরান ঢাকার লালবাগ, ফয়সালের বাসা চকবাজারের হাজি বাল্লু রোডে ও ইসমাইলের বাসা মিরপুরের মধ্যপীরেরবাগে এবং গোলাম মোস্তফার গ্রামের বাড়ি রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার ডাশারপাড়ায়।

 

গত ২০ ফেব্রুয়ারি রাতে শিল্পকলা একাডেমিতে কবিতা আবৃত্তির অনুষ্ঠান শেষে রিকশায় বাসায় ফিরছিলেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের আইন বিভাগের ছাত্রী দোলা ও তার বান্ধবী গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের শিক্ষার্থী ফাতেমাতুজ জোহুরা বৃষ্টি। চুড়িহাট্টার আগুনের মধ্যে পড়েন তারা। বাসায় না ফেরায় স্বজনরা তাদের সন্ধান করতে থাকেন। দোলা ও বৃষ্টির বাবা-মা অপেক্ষায় ছিলেন, তাদের জীবিত ফেরত পাবেন। কিন্তু গত ৬ মার্চ বৃষ্টির লাশ শনাক্ত হয়। এরপর মঙ্গলবার বান্ধবী দোলার লাশ পাওয়া গেল। তার বাবা দলিলুর রহমান বলেন, ‘ভেবেছিলাম, মেয়েকে জীবিত ফেরত পাব। কিন্তু তা পেলাম না। ডিএনএ পরীক্ষা করে মর্গে পড়ে থাকা মৃতদেহের মধ্যে আমার মেয়ের লাশটিও পাওয়া গেল।’

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, মর্গে ৬৭টি মৃতদেহের ব্যাগ পায় সিআইডি। এ ছাড়া একটি ব্যাগে পোড়া হাত ছিল। সে সময় শনাক্ত হওয়ায় পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছিল ৪৮টি লাশ। শনাক্ত না হওয়ায় ১৯টি ব্যাগ মর্গে রাখা হয়। পরিবারের সদস্যের কাছ থেকে ডিএনএ নমুনা নিয়ে পরীক্ষা শুরু করা হয়। প্রথম ধাপে ১১টি লাশের পরিচয় মেলে। মঙ্গলবার পরিচয় মেলে পাঁচজনের।