বিউটি পার্লার মালিক কান্তা হত্যা, কুয়াকাটায় হোটেল মালিক দুই ভাই গ্রেফতার

লেখক:
প্রকাশ: ৪ years ago

কুয়াকাটায় আবাসিক হোটেল আল-মদিনার বি-১ কক্ষে প্রায় দুুই বছর আগে ঢাকার সাভারের আশুলিয়ার বিউটি পার্লার মালিক নরসিংদির মেয়ে মার্জিয়া ইসলাম কান্তাকে (২৫) শ্বাস রোধ করে হত্যার ঘটনায় নরসিংদির পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) সদস্যরা হোটেল মালিক দেলোয়ার হোসেন (৪৪) ও তার ভাই আনোয়ার হোসেনকে (৩৭) গ্রেফতার করেছে। বৃহস্পতিবার রাতে এদের গ্রেফতার করে শুক্রবার আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। নিহত কান্তার লাশ হোটেল কক্ষ থেকে মোটরসাইকেলে করে পুলিশকে না জানিয়ে সাগরে ভাসিয়ে দেয়ার দায়ে এদের গ্রেফতার করা হয়।

শনিবার নরসিংদির পিবিআইএর পুলিশ সুপার মোঃ এনায়েত হোসেন এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। ইতোপূর্বে পিবিআই দল নিহত কান্তার স্বামী মূল হোতা শহিদুল ইসলাম কুড়িগ্রাম থেকে এবং ভাড়াটে কিলার মামুন মিয়া (২৬) গ্রেফতার হয়। এদের স্বীকারোক্তীমূলক জবানবন্দী অনুসারে কুয়াকাটা থেকে গ্রেফতার করা হয় হোটেল মালিকসহ তার ভাইকে।

জানা গেছে, ভারতে পার্লারের মালামাল কেনার কথা বলে ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে স্ত্রী কান্তাকে নিয়ে বের হয় শহিদুল ইসলাম। কিলিং মিশনের সদস্য মামুন মিয়াকে শরীয়তপুর থেকে সংগ্রহ করা হয়। প্রথমে শরীয়তপুরের নড়িয়া নদীতে ফেলে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। ওই মিশন ভেস্তে গেলে ২০১৮ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর কুয়াকাটার উদ্দেশ্যে চলে যায়। ২৪ সেপ্টেম্বর সকালে হোটেল আল-মদিনার (বি-১) কক্ষে অবস্থান নেয় এরা। প্রথমে সী-বিচে ঘোারাঘুরি করে।

বেলা আনুমানিক ১১-১২ টার দিকে হোটেল কক্ষে কান্তা বিশ্রাম নিচ্ছিল। এসময় স্বামী শহিদুল ইসলাম ও কিলার মামুন কান্তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে। এবং তার মরদেহ পলিথিনে পেচিয়ে বক্স খাটের পাটাতনের নিচে ঢুকিয়ে রাখে। এরপরই শহিদুল ও মামুন বরগুনার আমতলীতে গিয়ে ঢাকাগামী দোতলা লঞ্চে ওঠে। কান্তারসহ নিজেদের চারটি মোবাইল নদীতে ফেলে দেয় ঘাতকদ্বয়। এছাড়া কান্তার ব্যবহারের চারটি স্বর্ণের আংটি এবং একটি চেইন বিক্রি করে মামুনকে ২৪ হাজার টাকা দেয় শহিদুল।

এদিকে কুয়াকাটায় আল-মদিনা হোটেলের বয় কক্ষ পরিষ্কার করতে গিয়ে গেস্ট না পেয়ে পরের দিন মহিপুর পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ কান্তার একটি লাগেজ উদ্ধার করে। একটি জিডি করা হয়। কিন্তু দুইদিন পরে দুর্গন্ধ ছড়াতে থাকলে হোটেল মালিকসহ তার ভাই এক পর্যায়ে খাটের নিচে কান্তার মরদেহ পেয়ে কাউকে না জানিয়ে সাগরে ভাসিয়ে দেয়। পুলিশ এদের ভাষ্য অনুসারে কান্তাকে বহনকারী মোটরসাইকেল, শহীদুলের একটি প্যান্ট ও একটি চাপাতি উদ্ধার করেছে।

এর মধ্য দিয়ে দুই বছর আগে কুয়াকাটায় আবাসিক হোটেলের কক্ষে পার্লাার মালিক কান্তাকে শ^াস রোধ করে হত্যার ঘটনা উদঘাটিত হলো। এ ঘটনায় নরসিংদির বেলাবো থানায় ২০১৯ সালের ৩১ জানুয়ারি একটি জিডি করা হয়েছিল।