বলিউডের সিনেমা মুক্তির পক্ষে চঞ্চল,

লেখক:
প্রকাশ: ৪ years ago

দেশীয় সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে না বলে সিনেমা সংকটে দেশের প্রেক্ষাগৃহগুলো। ঠিক এই সময়ে আবারো বলিউডের সিনেমা দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তির পথে হাঁটছেন হলমালিকরা। আগামী তিন মাসের মধ্যে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রেক্ষাগৃহেও বলিউডের সিনেমা মুক্তির সম্ভাবনা রয়েছে বলে  জানান হলমালিক সমিতির সহ-সভাপতি মিয়া আলাউদ্দিন। তাদের সঙ্গে এবার সুর মিলিয়েছেন কিছু চলচ্চিত্র পরিচালক ও প্রযোজকও। এমন সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন জনপ্রিয় অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী। কিন্তু বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন দেশ সেরা চিত্রনায়ক শাকিব খান।

শাকিব খান বলেন, বলিউডের সিনেমা আমাদের এখানে মুক্তি পেলে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বলিউডের দেড়শ কোটি রুপি বাজেটের চলচ্চিত্রের সঙ্গে বাংলাদেশের এত কম বাজেটের সিনেমা টিকতে পারবে না। একটি বড় ধরনের প্রতিযোগিতার মুখে পড়বে দেশের চলচ্চিত্র। এইভাবে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা অসম্ভব। উপমহাদেশের সংস্কৃতির মধ্যে কিন্তু অনেক সাদৃশ্য রয়েছে। সাংস্কৃতিক মিল থাকলেও বলিউডের সিনেমার বাজেট অনেক বেশি। আমরা এর ধারে কাছেও নেই। হিন্দি সিনেমার প্রভাবে শ্রীলংকার চলচ্চিত্র হারিয়ে গেছে। নেপালের চলচ্চিত্রও ধ্বংস হয়ে গেছে।

বলিউডের সিনেমা দেশে মুক্তির পক্ষে মত প্রকাশ করেছেন চঞ্চল চৌধুরী। তিনি মনে করছেন, বর্তমান সময়ে প্রতিযোগিতা করে টিকে থাকতে হবে। বিষয়টি উল্লেখ করে এই অভিনেতা বলেন, আমাদের দীর্ঘদিনের ব্যর্থতার কারণেই এমনটি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে যেমন মনখারাপ হচ্ছে, তেমনি আবার বাস্তবতাকে অস্বীকারও করতে পারি না। সিনেমা হলগুলো যদি ভালো-মানসম্মত সিনেমা না পায়, তাহলে কী করবে। বলিউডের সিনেমা কিন্তু আমরা দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্নভাবে দেখি, দেখে আসছি। একসময় ডিশের মাধ্যমে দেখেছি। এখন হিন্দি সিনেমা মুক্তির পরের দিনই বা দুদিনের মধ্যে আমরা পাইরেটেড কপি দেখছি। বলিউডের সিনেমা দেখা কিন্তু আমাদের থেমে নেই। নেটফ্লিক্স, হইচই প্ল্যাটফর্মে আমরা দেখছি। এখন আমাদের প্রতিযোগিতা করে টিকে থাকতে হবে। যারা ব্যর্থ হবে তারা টিকতে পারবে না। আন্তর্জাতিক মানের বিষয়ে মনোযোগী হতে হবে। মানসম্মত কাজ করতে হবে, না হলে আগামীতে আরো কিছু আসবে। বিগত কয়েক বছরে কয়টি ব্যবসাসফল সিনেমা দিয়েছি আমরা? এইগুলো আমাদের ব্যর্থতার ফসল।

মিয়া আলাউদ্দিন  বলেন, হল বাঁচাতে হলে বিদেশের সিনেমা প্রয়োজন। বলিউডের সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে বিষয়টি এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আমরা চাচ্ছি মুক্তি পাক। এ বিষয়ে পরিচালক ও প্রযোজকরাও সম্মতি দিয়েছেন। আমরা মন্ত্রী মহোদয়ের সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলেছি। আশা করছি, আগামী তিন মাসের মধ্যে আমরা সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারব।

২০১৫-২০১৬ সালে উপমহাদেশীয় ভাষার চলচ্চিত্র প্রদর্শন বন্ধের দাবিতে উত্তাল ছিল চলচ্চিত্রাঙ্গনসহ রাজপথ। বিদেশি সিনেমার পোস্টারও পুড়িয়েছিলেন তারা। ২০১৫ সালের ২৩ জানুয়ারি রাজধানীর কয়েকটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ভারতীয় সিনেমা ‘ওয়ান্টেড’। উপমহাদেশীয় ভাষার চলচ্চিত্র বাংলাদেশে প্রদর্শন বন্ধের দাবিতে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ঐক্যজোটের ব্যানারে ঢাকাই সিনেমার নির্মাতা, শিল্পী ও কলাকুশলীরা মানববন্ধন করেন।

পাশাপাশি দেশীয় চলচ্চিত্রের সব ধরনের কাজ বন্ধ রাখাসহ বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রাম করেন চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা। বিষয়টি নিয়ে মামলাও হয়। তোপের মুখে পড়ে পরবর্তীতে সিনেমা মুক্তি বন্ধ হয়। তারপর কেটে গেছে দীর্ঘ সময়। এবার বলিউডের সিনেমা দেশের চলচ্চিত্রের সঙ্গে একই দিনে মুক্তির কথা ভাবছেন হলমালিকরা। তাদের এই সিদ্ধান্তের পক্ষে সম্মতিও দিয়েছেন সেদিন কাফনের কাপড় পরে রাস্তায় নামা অনেকেই। তবে জুড়ে দিয়েছেন কিছু শর্ত।