#

 মাটির নিচ দিয়ে বিদ্যুতের লাইন স্থাপনের লক্ষে বরিশালে প্রাথমিক পর্যায়ের কাজ শুরু হয়েছে।  গেলো ঈদের পর থেকে বরিশালে সার্ভের কাজ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওজোপাডিকোর কর্মকর্তারা।

জানাগেছে, বিশ্বের উন্নত শহরগুলোর আদলে বরিশাল, খুলনা ও যশোরকে বিদ্যুতের একটি মডেল শহর গড়ে তোলার জন্য এ প্রকল্প বাস্তবায়নের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সরকার। যে প্রকল্পের নাম দেয়া হয়েছে ‘আন্ডারগ্রাউন্ড প্রজেক্ট ইন ওয়েস্টজোন এরিয়া’।

ওজোপাডিকো সূত্রে জানাগেছে, সম্প্রতি টাটা পাওয়ার দিল্লি ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডকে কনসালটেন্ট হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়।  যারা এরইমধ্যে মাঠ পর্যায়ে সার্ভের কাজ শুরু করেছে।  পরবর্তীতে ফিজিবিলিটি স্ট্যাডির কাজ করা হবে। ফিজিবিলিটি স্ট্যাডির মাধ্যমে প্রকল্পটি দীর্ঘস্থায়ী হবে কি না, মাটির কনডিশন, প্রকল্পের ব্যয় নির্ধারণসহ নানা বিষয়ে তুলে ধরে ওজোপাডিকোর কাছে প্রতিবেদন সাবমিট করবে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান।

এ বিষয়ে ওজোপাডিকো বরিশালের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোঃ ইখতিয়ার উদ্দিন বলেন, ইঞ্জিনিয়ারিং যে কোন কাজ করতে হলে, প্রাথমিকভাবে তিনটি কাজ করতে হয়। প্রথমে সার্ভে ও ফিজিবিলিটি স্ট্যাডি করার পরেই অর্থায়ন ও বাস্তবায়নের লক্ষে কাজ শুরু করা হয়।  প্রাথমিক পর্যায়ে বরিশাল নগরে সার্ভে ওয়ার্ক চলছে।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর স্বদ-ইচ্ছাতেই এটির কাজ শুরু হয়েছে। যুগান্তকারী এ পদক্ষেপকে খুব গুরুত্ব সহকারে দেখছে বিদ্যুৎ বিভাগ। এখন বরিশাল, খুলনা ও যশোরে হওয়ার কথা থাকলেও পর্যায়ক্রমে সব জায়গাতেই হবে এমনটাই বলছে আমাদের বিদ্যুৎ মন্ত্রনালয়। তবে প্রথমে এ তিনটা জেলায় হবে।

এই তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর মতে, আন্ডারগ্রাউন্ড এর মাধ্যমে বিদ্যুতের লাইন স্থাপনের লাভ হচ্ছে, সার্ভিসটা নিরাপদ ও নিরবিচ্ছিন্ন হবে। বর্তমান যে সিস্টেম আছে, সেখানে বিদ্যুতের তার আমাদের মাথার ওপর দিয়ে রয়েছে।  আবার অনেক স্থানেই খোলা (ন্যাকেট) তার রয়েছে।  একটা বাতাস হলো, গাছের ঠাল ভেঙ্গে পড়লো, পাখি বসলো লাইন ফল্ট করে ফেলে। যখন আন্ডারগ্রাউন্ড বা মাটির নিচে চলে যাবে, তখন এ সমস্যাগুলো আসবে না। নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দেয়া অনেক সহজ হবে।

তিনি বলেন, আমরা সিটি করপোরেশনের মেয়রের সাথে এ বিষয়ে সাক্ষাত করে কথা বলেছি। কারণ তার শহরে এরকম একটা কাজ হবে, তাকে অবহিত করা উচিত।  আবার সিটি করপোরেশন এলাকার মাটির নীচে ড্রেনেজ ব্যবস্থা, পানির লাইন রয়েছে।  তিনি বলেন, বরিশালে মাটির নীচ থেকে পাইপ লাইনে গ্যাস সরবরাহ করা হয় না, তবে আন্ডারগ্রাউন্ডে টেলিফোনের ক্যাবল রয়েছে। এজন্য আমরা বিটিসিএল এর সাথেও কথা বলেছি।  কারণ এ কাজটি সকলের সাথে সমন্বয় করে করা হবে। যাতে বার বার খোড়াখুড়ি করতে না হয়।

আর করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা বেলায়েত হাসান বাবলু বলেন, আমরা সৌভাগ্যবান যে প্রধানমন্ত্রী এমন একটা উদ্যোগে বরিশালকে প্রথম পর্যায়ে রেখেছেন। সিটি করপোরেশনের মেয়রের সাথে এরইমধ্যে বিদ্যুৎবিভাগের কর্মকর্তারা সাক্ষাত করে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন। বরিশাল সিটি করপোরেশেনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখছেন।

আধুনিক এ কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে নগরের সকল সেবা সংস্থার মধ্যে সমন্বয় সাধন জরুরি বলে মনে করেন মেয়র।  যাতে সুষ্ঠু কর্মপরিকল্পনার মধ্য দিয়ে কাজটিকে নির্ধারিত সময় ও ব্যয়ের মধ্যে বাস্তবায়নের লক্ষে এগিয়ে নেয়া যায়।

অপরদিকে সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী ওমর ফারুক বলেন, আমাদের দেশে বিশেষ করে দক্ষিনাঞ্চলে প্রাকৃতিক দুর্যগ বার বার দেখা দেয়।  মাটির নিচ দিয়ে বিদ্যুতের লাইন স্থাপনের ফলে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা সুরক্ষিত থাকবে।

উত্তর দিন

Please enter your comment!
এখানে আপনার নাম লিখুন