ঝালকাঠির রাজাপুরে লিমন হত্যাচেষ্টা মামলায় র্যাব-৮-এর ৬ সদস্যের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ পেয়েছে বরিশাল পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। রোববার (২২ এপ্রিল) দুপুরে ঝালকাঠির সিনিয়র বিচারিক হাকিম আদালতের বিচারক মো. সেলিম রেজা এ আদেশ দেন।
২০১৩ সালের ১৮ মার্চ লিমনের মা হেনোয়ারা বেগম ঝালকাঠির জেলা ও দায়রা জজ আদালতে একটি রিভিশন দায়ের করেছিলেন। পাঁচজন জেলা ও দায়রা জজ এবং দুজন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এই রিভিশনের শুনানি গ্রহণ করেন।
সপ্তম বিচারক এস কে এম তোফায়েল হাসান গত ১ এপ্রিল রিভিশনের সর্বশেষ শুনানি শেষে রিভিশন মঞ্জুর করেন। মামলার নথি জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে আসার পরে রোববার দুপুরে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন বিচারক।
তদন্তের আদেশে বরিশাল র্যাব-৮-এর তৎকালীন উপসহকারী পরিচালক (ডিএডি) লুৎফর রহমানসহ ছয় র্যাব সদস্যের বিরুদ্ধে লিমন হত্যাচেষ্টা মামলাটি আবারও শুরু হয়।
লিমনকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ২০১১ সালের ১০ এপ্রিল ঝালকাঠির জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম নুসরাত জাহানের আদালতে একটি নালিশি মামলা করা হয়।
এর ১৬ দিন পর ২৬ এপ্রিল আদালতের নির্দেশে রাজাপুর থানায় র্যাবের ডিএডি লুৎফর রহমানসহ ৬জনের নামে মামলাটি রেকর্ড করা হয়।
পুলিশ ওই মামলায় ২০১২ সালের ১৪ আগস্ট র্যাব সদস্যদের নির্দোষ বলে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। পরে ৩০ আগস্ট লিমনের মা হেনোয়ারা বেগম পুলিশের এই চূড়ান্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে আবারও নারাজি দেন।
দীর্ঘ শুনানি শেষে ২০১৩ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি লিমনের মায়ের এই নারাজি আবেদনও খারিজ করে দেন বিচারক মো. শাহীদুল ইসলাম।
পরে এই আদেশের বিরুদ্ধে ২০১৩ সালের ১৮ মার্চ ঝালকাঠি জেলা ও দায়রা জজ আদালতে রিভিশন আবেদন করেন হেনোয়ারা বেগম।
২০১১ সালের ২৩ মার্চ ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার সাতুরয়া গ্রামে বাড়ির কাছের মাঠে গরু আনতে গেলে কলেজছাত্র লিমন হোসেনকে র্যাব সদস্যরা গুলি করেন। গুলিতে পা হারান লিমন।
গুলিবিদ্ধ লিমনের একটি পা কেটে ফেলার পরে ২০১১ সালের ৯ মে হাইকোর্ট লিমনের জামিন মঞ্জুর করেন। লিমন জামিনে মুক্ত হওয়ার পর তার উন্নত চিকিৎসার জন্য সাধারণ মানুষ আর্থিক সাহায়তা করে। ঢাকার সাভারের সিডিডি নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান লিমনকে একটি কৃত্রিম পা সংযোজন করে দেয়। এই নকল পায়ে ভর করে ২০১৩ সালে লিমন উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন।
একই বছর তিনি ডা. জাফরুল্লাহর সহযোগিতায় সাভারের গণবিশ্ববিদ্যালয়ে এলএলবি অনার্সে ভর্তি হন এবং ২০১৭ সালে ডিগ্রি লাভ করেন। বর্তমানে তিনি কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে এলএলএম কোর্সে ভর্তি রয়েছেন।