গত কয়েকদিন ধরে যাত্রীর চাপ থাকলেও ঈদের পর শুক্রবার প্রথম বরিশাল নদী বন্দরে মানুষের এতোটা ভিড় দেখা গেছে। তাই যাত্রীদের চাপ সামলাতে বাড়তি লঞ্চের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
লঞ্চ মালিকরা জানান, ঈদের পর প্রথম তিনদিন বরিশাল নদী বন্দরে তেমন একটা ভিড় না থাকলেও, গতকাল বৃহস্পতিবার রাত থেকে যাত্রীর চাপ বেড়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে ১৫টি লঞ্চ বরিশাল নদী বন্দর থেকে বিপুল সংখ্যক যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেয়। আজ সপ্তাহের শেষ দিন হওয়ায় যাত্রীর চাপ আরও বাড়বে বলে আগে থেকেই শঙ্কা ছিলো। তাই শুক্রবার শুধু বরিশাল নদী বন্দর থেকে সরাসরি ১৬টি লঞ্চ যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেবে। আর দক্ষিণাঞ্চল থেকে সবমিলিয়ে অর্ধশতাধিক সরকারি বেসরকারি নৌযান যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেবে।
লঞ্চ স্টাফদের ধারণা মতে, শনিবারও যাত্রীর চাপ থাকবে, তবে ঈদের পর শুক্রবারই সর্বোচ্চ ভিড় হয়েছে নৌপথে।
বরিশাল নদী বন্দর সূত্রে জানা গেছে, বেসরকারি লঞ্চের পাশাপাশি সরকারি স্টিমার ও ভায়া রুটের আরও বেশ কয়েকটি লঞ্চ বরিশাল নদী বন্দর হয়ে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করবে।
বরিশাল নদী বন্দর ঘুরে দেখা গেছে, শুক্রবার (২২ জুন) জুমার নামাযের পর থেকেই লঞ্চগুলোতে যাত্রীদের আনাগোনা শুরু হয়ে যায়। বিকেল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে লঞ্চগুলোর ডেকে যাত্রীরা অবস্থান নিয়ে নেয়ায় তা পরিপূর্ণ হয়ে যায়। এমনকি দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলার কেবিনের সামনের বারান্দা পর্যন্ত ডেকের যাত্রীরা দখল করে নেয়।
লঞ্চগুলোতে ধারণ সংখ্যার অতিরিক্ত যাত্রী ওঠানো হলেও চাপ সামলাতে লোড লাইন নির্ভর করে যাত্রী বহনের নির্দেশ দিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ। এক্ষেত্রে ঝুঁকি ছাড়াই প্রতিটি লঞ্চ নির্ধারিত সংখ্যার কয়েকগুণ বেশি যাত্রী বহন করতে পারছে।
তবে লোড লাইন ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে বরিশাল নদী বন্দর থেকে কোনো লঞ্চ ছাড়তে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন বরিশাল বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের উপ-পরিচালক আজমল হুদা সরকার মিঠু্।
অপরদিকে, স্পেশাল সার্ভিসের আওতায় আজকের দিনের লঞ্চের কেবিন আগে থেকেই বুকিং
হয়ে যাওয়ায় কোনো কেবিন খালি নেই। তাই যারা এ মুহূর্তে কেবিনের জন্য ঘাটে আসছেন তারা কেউ তা পাচ্ছেন না বলে ডেকেই যেতে হচ্ছে তাদের।
তবে যাত্রীদের অভিযোগ, লঞ্চের সামনে দাঁড়িয়ে অনেকেই কেবিন খালি রয়েছে জানিয়ে কৌশলে বাড়তি ভাড়ার পাঁয়তারা করছে।
এদিকে যাত্রীদের ভিড় বাড়ার পাশাপাশি পুরো বন্দর এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে। বন্দর এলাকার নিরাপত্তায় নৌ-পুলিশের ৫০ সদস্য ছাড়াও কোতোয়ালি থানা পুলিশ, ট্রাফিক পুলিশ, র্যাব, কোস্টগার্ড, ফায়ার সার্ভিস ও আনসারের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।
যাত্রীদের বিভিন্ন ধরনের সেবার মধ্যে মেরিন ক্যাডেট ও স্কাউটদের সহায়তায় বন্দর এলাকায় শৃঙ্খলা রক্ষার কাজ করা হচ্ছে। তবে পন্টুন এলাকায় হকারদের দৌরত্ম্য কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হচ্ছে না।
বরিশাল থেকে আজ ঢাকার উদ্দেশে সুরভী, সুন্দরবন, পারাবত, কীর্তনখোলা, এ্যাডভেন্সার, টিপু, ফারহাসসহ বেশ কয়েকটি কোম্পানির ১৬টি লঞ্চ সরাসরি ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাবে।
এদিকে লোড সাইন অতিক্রম করার আগেই লঞ্চগুলোকে নৌ-বন্দর ত্যাগ করতে বাধ্য করায় স্পেশাল সার্ভিসের লঞ্চের টাইম-টেবিল অনুযায়ী যাত্রী পরিবহনের জন্য নির্দিষ্ট সময় দেয়া সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন লঞ্চ মালিকরা।