#

*আড়াল করতে মাছের ঘের ও পত্রিকা!

আলম রায়হান, অতিথি প্রতিবেদক: গত বুধবার বিশ হাজার পিস ইয়াবাসহ দু’জন মাদক কারবারীকে আটক করেছে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ। এরমধ্যে চরমোনাইর গাজী মাকসুদুল আলম নান্টু হচ্ছে বরিশালের ইয়াবা ডন। শধু তাই নয়। বিএম কলেজের ছাত্রী ধর্ষন মামলায় গাজী নান্টু দশ বছর সাজাও ভোগ করেছে। বনেদী পরিবার এবং ধনাঢ্য বাবার সন্তান নান্টু সব সময়ই বেপরোয়া ছিলো।

এরই ধারাবাহিকতায় গাজী মাকসুদুল আলম নান্টু জড়িয়ে যায় মাদক ব্যবসায় এবং হয়ে ওঠে ইয়াবা ডন! মূল ব্যবসা আড়াল করার জন্য গাজী নান্টু কড়াপুর ইউনিয়নে মাছের ঘের এবং বরিশাল থেকে প্রকাশিত একটি দৈনিক পত্রিকার সঙ্গেও জড়িত হয়েছে।
বরিশালের ইয়াবা ডন গাজী মাকসুদুল আলম নান্টুর পৈত্রিক বাড়ী বরিশাল সদর উপজেলার ডিঙ্গামানিক গ্রামে, বুখাইনগর স্কুলের পশ্চিম পাশে। তারা তিন ভাই ও চার বোন। তার মৃত বাবা গাজী আব্দুল মান্নান প্রথম জীবনে তহসীলদার হিসেবে চাকুরী করেছেন। এ সময় তিনি বিপুল পরিমান নগদ টাকা এবং জমির মালিক হয়েছেন। এক পর্যায়ে চাকুরী ছেড়ে তিনি ঠিকাদারী ব্যবসা শুরু করেন। সুইজ গেট নির্মানের ক্ষেত্রে গাজী আবদুল মান্নান ছিলেন নামকরা ঠিকাদার। গ্রামের বাড়ি ছাড়াও মহানগরীর নতুন বাজার এলাকায় রয়েছে তার বিশাল বাড়ি।

দুই বছর আগ পর্যন্ত শহরের এই পৈত্রিক বাড়িতেই থাকতো ইয়াবা ডন গাজী মাকসুদুল আলম নান্টু। এ সময় সে মেয়েদের উত্যক্ত করতো। এক পর্যায়ে বিএম কলেজের ছাত্রী ধর্ষণ মামলায় আসামী হয় গাজী নান্টু। চাঞ্চল্যকর এমামলায় তার দশ বছরের সাজা হয়। এবং কোন আদালতই তাকে আর রেহাই দেয়নি। ফলে তাকে দশ বছর কারাভোগ করতে হয়েছে। কলেজ ছাত্রী ধর্ষন মামলার প্রাথমিক বিচারক ছিলেন ম্যাজিষ্ট্রেট স্মৃতিরানী ঘরামী।

ইয়াবা ব্যবসা রমরমা হবার পর প্রায় দুই বছর আগে গাজী মাকসুদুল আলম নান্টু শহরের বাড়ী থেকে গ্রামের বাড়িতে চলে যায়। সেখানে সে একটি দৃষ্টিন্দন ছোট ভবনও নির্মান করে। এই ভবনেই সে থাকতো। তাকে কেউ বাড়ির বাইরে বের হতে দেখেনি। সূত্র মতে, বুখাইনগর লঞ্চঘাট থেকে মেেিহন্দিগঞ্জ, ভোলা এবং রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় মাদক সরবরাহ করা সুবিধার জন্যই সে শহর ছেড়ে গ্রামের বাড়িতে আস্তানা গেড়েছিল গাজী নান্টু। তারই এই আস্তানায় গভীর রাতে অনেকের আনাগোনা ছিলো।
সূত্রমতে, তার মাদকের প্রধান চালান আসতো নবগ্রাম সড়ক হয়ে। মাদকের চালান আসার সুবিধার জন্য সে কড়াপুর ইউনিয়নে একটি মাছের ঘেরও গড়ে তুলেছে। অনেক সময় মাছের এই ঘেরেই মাদক মজুদ করা হতো। এই মাছের ঘের দেখাশুনার দায়িত্বে রয়েছেন গাজী নান্টুর ভগ্নিপতি।

মাদক ব্যবসা আড়াল করার জন্য মাছের ঘের করা কেবল নয়, বরিশাল থেকে প্রকাশিত একটি দৈনিক পত্রিকার সঙ্গেও জড়িত হয়েছে গাজী নান্টু। আবার এ পত্রিকার মালিকেরও আলাদা মাদক ব্যবসা রয়েছে। বরিশালের পুলিশ ও প্রশাসেনের বিভিন্ন অফিসে এই পত্রিকাটি বেশ চোখে পড়ে। শুধু গাজী নান্টু নয়, এই দৈনিক পত্রিকাটির সঙ্গে কড়াপুর ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকার মাদক ব্যবসায়ীরা জড়িত। এ পত্রিকার মালিকের কুয়াকাটা এলাকায়ও অনেক বিনিয়োগ আছে বলে একটি সূত্র জানিয়েছে। সূত্রমতে, এ পত্রিকাটি কেন্দ্র করে অনেক মাদক ব্যবসায়ীর শক্ত সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে।

উত্তর দিন

Please enter your comment!
এখানে আপনার নাম লিখুন