বরিশালের বাজারে সয়াবিন তেলের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। বেশ কিছুদিন ধরে বাজারজাতকারী কোম্পানিগুলো চাহিদামতো সরবরাহ না করায় সয়াবিন তেলের এ সংকট তৈরি হয়েছে বলে পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতারা দাবি করছেন।
নগরীর পুরান বাজারের নিউ আজাদ স্টোরের মালিক সৈয়দ আজাদ আহম্মেদ বুধবার (২ মার্চ) বিকেলে বলেন, ‘ভোজ্যতেল কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিরা আগেই আভাস দিয়েছিলেন সয়াবিন তেলের দাম বাড়বে। এরপর কয়েকদিন থেকে তারা দোকানে চাহিদামতো তেল সরবরাহ করছেন না। এ কারণে দোকানে সয়াবিন তেলের সংকট তৈরি হয়েছে।’
তিনি বলেন, তার দোকানে মাত্র তিন বোতল সয়াবিন তেল আছে। তেলের চাহিদা জানিয়ে সরবরাহের জন্য ভোজ্যতেল কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিদের অনুরোধ করা হয়েছে। তবে তারা সরবরাহ করছেন না।
দোকানদারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজাদ আহাম্মেদের মতো বাজারের অনেক দোকানেই সয়াবিন তেল ফুরিয়ে আসছে। তারাও কোম্পানির লোকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তারপরও তেল পাচ্ছেন না।
কথা হয় নগরীর চৌমাথা বাজারের খুচরা মুদিদোকানি ভাই ভাই স্টোরের মালিক হুমায়ুন কবিরের সঙ্গে। তিনি বলেন, সয়াবিন তেল বাজারজাতকারী কোম্পানিগুলো গত এক সপ্তাহে তার দোকানে তেল সরবরাহ করেনি। এজন্য দোকানে তেল ফুরিয়ে আসছিল। বিক্রয় প্রতিনিধিদের অনেক অনুরোধের পর আজ দুপুরে মাত্র ৫ কার্টন তেল দিয়ে গেছেন। তাও চুক্তিসাপেক্ষে।
হুমায়ুন কবির বলেন, ‘চুক্তিমতো একটি কোম্পানির তেলের সঙ্গে মরিচের গুঁড়ার প্যাকেট নিতে হয়েছে। আরেকটি কোম্পানির তেলের সঙ্গে বাধ্যতামূলক চা পাতার প্যাকেট নিতে হয়েছে।’
নগরীর বাংলা বাজারের তোতা স্টোরের মালিক জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘আজ বিক্রয় প্রতিনিধিদের অনেক বলার পর মাত্র ৩ কার্টন তেল সরবরাহ করেছেন। তার সঙ্গে শর্ত অনুযায়ী তাদের কোম্পানির চা পাতার দুটি প্যাকেট নিতে হয়েছে।’
নগরীর পুরান বাজারের ভোজ্যতেলের কয়েকজন পাইকারি বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০০ লিটার খোলা সয়াবিন তেলের ব্যারেলের দাম এক সপ্তাহ আগে ছিল ২৮ হাজার টাকা। এখন তা ৩৩ হাজার টাকা। এরপরও কোম্পানিকে অগ্রিম টাকা পাঠিয়েও তারা চাহিদামতো তেল পাচ্ছেন না। খোলা ও বোতলজাত সয়াবিন তেল সরবরাহ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি ভোজ্যতেল কোম্পানির এক বিক্রয় প্রতিনিধি বলেন, তিনি একজন সাধারণ কর্মচারী। কেন তেল কম সরবরাহ করা হচ্ছে, তা ডিস্ট্রিবিউটর ও কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ভালো বলতে পারবেন। এ বিষয় তিনি কিছুই বলতে পারবেন না।
চা পাতা প্যাকেট ছাড়া তেল দেওয়া হচ্ছে না, এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটা বিক্রির একটি কৌশল। কিন্তু কাউকে জোর করা হচ্ছে না।’