বরিশালের ইলিশে বাজার সয়লাব

লেখক:
প্রকাশ: ৫ years ago

নিষেধাজ্ঞা শেষ হতে না হতেই বরিশাল নগরের পোর্টরোডস্থ একমাত্র বৃহৎ মৎস অবতরণ কেন্দ্রটি (বেসরকারি) সরগরম হয়ে উঠেছে।

বৃহষ্পতিবার (৩১ অক্টোবর) সকাল ৯ টার মধ্যে ইলিশে সয়লাব হয়ে গেছে বরিশাল নগরের পোর্টরোডস্থ এ অবতরণ কেন্দ্র বা পাইকারি বাজারটি। এরআগে ভোর থেকে বরিশালের বিভিন্ন স্থান থেকে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও জেলেরা পাইকারি বাজারটিতে ইলিশ নিয়ে আসতে শুরু করে।

ফলে বেলা বাড়ার সাথে সাথে ব্যবসায়ীদের হাক-ডাক, শ্রমিকদের কর্মব্যবস্থায় মুখরিত হয়ে ওঠে পাইকারি এ বাজারটি। আর একসাথে প্রচুর মাছের দেখা পেয়ে খুশি জেলে থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা।

পাইকার ব্যবসায়ীরা জানান, ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমকে ঘিরে নদী ও সাগরে ইলিশ শিকারে টানা ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা ছিলো। যে নিষেধাজ্ঞা শেষে ৩০ অক্টোবর রাত ১২ টার থেকেই জেলেরা মাছ শিকারের উদ্দেশ্যে নদী ও সাগরে নেমে পড়েন। যদিও এখনো সাগরের মাছ অবতরণ কেন্দ্রগুলোতে আসেনি, তবে নদীর ইলিশেই সকাল থেকে বাজার দখল করে ফেলেছে।

মৎস ব্যবসায়ী শাহাবুদ্দিন জানান, একসাথে প্রথম দিনে এতো মাছ ধরা পড়ায় জেলেরা যেমন খুশি, তেমন বাজারেও মাছের দেখা মেলায় ব্যবসায়ীরা খুশি। এভাবে ইলিশের আমদানি থাকলে সামনের দিনগুলো জেলে-ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের ভালো কাটবে। পাশাপাশি ক্ষতিও পুষিয়ে ওঠা যাবে।

তবে অন্য ব্যবসায়ীরা বলছেন, সাগর থেকে মাছ আসতে কয়েকদিন সময় লাগবে। সেক্ষেত্রে নদী থেকে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়তে থাকলে এবং সাগরের মাছও আসতে শুরু করলে বাজারগুলো পুরো ইলিশে আরো সয়লাব হয়ে যাবে। ফলে ইলিশের দামও কমে যাবে।

এদিকে বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সকাল থেকেই নগরের পোর্টরোডস্থ একমাত্র বৃহৎ মৎস অবতরণ কেন্দ্রটিতে ক্রেতা-বিক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ করা গেছে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে পাইকারি এ বাজারটিতে ইলিশের চাপও বাড়তে থাকে। বিভিন্ন স্থান থেকে নৌকা ও ট্রলার করে ইলিশ নিয়ে আসতে দেখা গেছে ব্যবসায়ী ও জেলেদের। সকাল থেকেই ইলিশের আমদানি বাড়তে থাকায় শ্রমিকদের কাজের চাপও টানা ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞার পর বেড়ে গেছে। বরফকল, বরফভাঙ্গা, মাছ প্যাকিংসহ সর্বোত্র তারা কর্মব্যস্ত সময় পাড় করছে।

এদিকে বাজারে এখন পর্যন্ত যে ইলিশ এসেছে, তাতে পূরাতন বা আগে ধরে রেখে সংরক্ষন করা মাছ নেই বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। আর এখন পর্যন্ত এ বাজারে আশা প্রতিটি ইলিশ আকার দেশে খুশি তারা। তবে স্থানীয় বিভিন্ন সূত্র বলছে, নিষেধাজ্ঞার সময় যে অসাধু জেলেরা ইলিশ শিকার করেছেন তাও নতুন মাছের সাথে বাজারে নিয়ে আসা হচ্ছে। আর হিজলাসহ অনেক স্থানে গতকাল দুপুরেই মাছ শিকারে নামেন জেলেরা, ফলে বাজারে মাছের চাপ আজ রয়েছে। যে চাপ সামনে কমার সম্ভাবনা রয়েছে।

ব্যবসায়ীরা জানান, আজ ৬-৯ শত গ্রামের ইলিশের পাইকারি দর মনপ্রতি ২৪-২৫ হাজার টাকা, ১ কেজি ওজনের ইলিশের মন ৩০ হাজার টাকা, ১২ শত গ্রামের ওপরে ইলিশের মন ৩৫-৪০ হাজার টাকা।

এদিকে বরিশাল জেলা মৎস অফিসের কর্মকর্তা (হিলসা) মৎস বিমল চন্দ্র দাস জানান, নদীতে প্রচুর মাছ থাকার কারনে জেলেদের জালে প্রচুর মাছ উঠছে। যে কারনে অল্প সময়ের মধ্যে তারা মাছ ধরে বাজারে নিয়ে আসতে পেরেছে।

ইলিশের পেটে ডিম রয়েছে এমন অভিযোগের বিষয়ে ইলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ইলিশের পেটে সারাবছর ডিম থাকে। শুধু প্রধান প্রজনন মৌসুমে ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ করা হয়। বাকী সময় ইলিশের পেটে ডিম থাকলে এটা স্বাভাবিক ঘটনা।