বরগুনায় মুরগি জবাই করার ওপর খাজনা!

লেখক:
প্রকাশ: ২ years ago

বরগুনার পাথরঘাটায় সব ধরনের মুরগি বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছে ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি পাথরঘাটা পৌরসভার মেয়র আনোয়ার হোসেন আকন খামখেয়ালিভাবে মুরগি জবাই করার ওপর খাজনা নির্ধারণ করেছেন।

জেলা প্রশাসক কর্তৃক হাটবাজারে সরকারি টোলে তালিকা না থাকায় ব্যবসায়ী জবাই করা মুরগির ড্রেসিং এর ওপর খাজনা না দেওয়ায় তাদের মেশিনসহ অন্যান্য মালামাল ভাংচুর করেছে ইজারাদাররা।

এ কারণে মঙ্গলবার সকাল থেকেই পাথরঘাটা বাজারে মুরগি বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছে ব্যবসায়ীরা। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষরা।

পাথরঘাটা মুরগির বাজারের ব্যবসায়ী কামাল হোসেন জানান, আমরা মুরগি ক্রয়-বিক্রয়ের জন্য খাজনা আদায় করে আসছি বিগত দিনগুলোতে।

 

কিন্তু হঠাৎ চলতি বছর পৌরসভার মেয়র জবাইকৃত মুরগি প্রতি ৭ টাকা খাজনা নির্ধারণ করে দেয়। কিন্তু জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের কোনো ধরনের অনুমতি নেই। শুধুমাত্র গরু-মহিষ, ছাগল ও ভেড়া জবাইয়ের ওপর খাজনা নির্ধারণ করা আছে।

 

মুরগি ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নাসির উদ্দিন জানান, আমারা নিজেরাই দুইজন ক্লিনার রেখে ক্রেতাদের সুবিধার জন্য ১০ টাকার বিনিময়ে ড্রেসিং করে দিচ্ছি। এর থেকে যদি সাত টাকা অতিরিক্ত খাজনা পরিশোধ করতে হয় তাহলে তো ড্রেসিং বন্ধ করে দিতে হবে।

 

ব্যবসায়ীরা জানান, এর সুষ্ঠু সমাধান না করা পর্যন্ত মুরগি বিক্রি বন্ধ রাখবেন তারা। এদিকে মুরগি বিক্রি বন্ধ থাকায় অতিরিক্ত গরমে প্রায় অর্ধশত মুরগি মার গেছে।

 

উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি ফয়েজ হোসেন জানান, এমনিতেই নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেশি। এর মধ্যে যদি পৌরসভা থেকে জবেহ করা মুরগির ওপর খামখেয়ালিভাবে খাজনা আদায় করে সাধারণ মানুষের গলাকাটার ব্যবস্থা করছে।

 

বাজারে মুরগি কিনতে আসা হাসন আলী, আহমেদ সুজন, হাবিবুর রহমানসহ শতাধিক ক্রেতা জানান, ইজারাদার ও ব্যবসায়ীদের ঝামেলায় সকাল থেকে মুরগি কিনতে এসে দাঁড়িয়ে আছি।

 

রমজানের মধ্যে ঈদের আগে মুরগি বাজারের এমন অবস্থা তাদের জন্য চরম ভোগান্তি বলে জানান তারা।

 

ইজারাদার বেলাল, শাওন, খায়রুল জানান আমরা পৌরসভা থেকে সাত লাখ টাকায় ইজারা নিয়েছি। মুরগি ব্যবসায়ীরা জবাই করা মুরগির ওপর খাজনা দিতে না চাওয়ায় বিষয়টি বার বার পৌর মেয়রকে জানিয়েছি। কিন্তু তিনি এর কোনো সমাধান না দিয়ে আজ না কাল বলে ঘোরাচ্ছে।

 

ইজারাদারদের দাবি, পৌর মেয়রের কারণেই মুরগি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আমাদের অযথা ঝামেলা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে পাথরঘাটা পৌরসভার মেয়র আনোয়ার হোসেন আকন বলেন, মুরগি বাজারের ব্যবসায়ীদের দোষ দিয়ে বলেন- টোলঘরে যারা মুরগি বিক্রি করে তাদের শতকরা ৫ টাকা হিসাবে টোল আদায় করার নিয়ম রয়েছে।

 

কিন্তু আমরা ৪ টাকা আদায় করতে গেলে ওই এক টাকা দিতে ও রাজি নন। খাজনা আদায়কারীদের সঙ্গে যে ঘটনা ঘটেছে এ নিয়ে বুধবার পৌরসভায় দুই পক্ষের বৈঠক ডাকা হয়েছে।