‘বঙ্গবন্ধুকে রাষ্ট্র ও জনগণের মন থেকে মোছার অপচেষ্টাকারীরাই মুছে যাচ্ছে’-তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ

লেখক:
প্রকাশ: ৬ years ago

তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান এবং খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি সরকার জাতীয় জীবন থেকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নির্বাসিত করার অপচেষ্টা চালিয়েছিল, সেই চেষ্টা সফল হয়নি। যারা বঙ্গবন্ধুকে রাষ্ট্রীয় জীবন ও মানুষের মানসপট থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা করেছিল তারাই ধীরে ধীরে মানুষের মানসপট থেকে মুছে যাচ্ছে।’

রোববার দুপুরে রাজধানীতে জাতীয় প্রেসকাবে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত ‘১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’র জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় তিনি এ সব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি। বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করতে পারতো না। বাঙালি বহুবার স্বাধীনতার জন্য চেষ্টা করেছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হাজার বছরের ঘুমন্ত বাঙালিকে শ্লোগান শিখিয়েছিলেন; ‘বীর বাঙালি অস্ত্র ধর, বাংলাদেশ স্বাধীন কর, তোমার আমার ঠিকানা পদ্মা, মেঘনা, যমুনা।’ এই শ্লোগানে উজ্জীবিত করে এক সাগর রক্ত পাড়ি দিয়ে জাতির পিতা স্বাধীন রাষ্ট্র রচনা করার জন্যেই একটি নিরস্ত্র জাতিকে সশস্ত্র জাতিতে রুপান্তর করেছিলেন। সেই বঙ্গবন্ধুকেই রাষ্ট্রের মানসপট থেকে যারা মোছার অপচেষ্টা করেছিলো, তারাই মুছে যাচ্ছে।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু একটি উন্নত রাষ্ট্র রচনার যে স্বপ্ন এঁকেছিলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজ,সেই স্বপ্ন পূরণের পথে বাংলাদেশ অদ্যম গতিতে উন্নয়নের মহাসড়কে এগিয়ে চলছে, এই উন্নয়ন অগ্রগতির যারা প্রতিবন্ধক, তাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলুন’।

সমসাময়িক রাজনীতি নিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি সম্মান এবং শ্রদ্ধা রেখেই বলতে চাই, বেগম খালেদা জিয়া এই হাঁটুর ব্যথা হয়েছিল আরো ১৫ থেকে ২০ বছর আগে। এই হাঁটুর ব্যথা নিয়েই তিনি দুইবার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি দুইবার বিরোধী দলীয় নেত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। এবং তিনি বিএনপির মতো একটি দলের চেয়ারপার্সনের দায়িত্ব পালন করেছেন। এটি কোনো নতুন অসুখ নয়, এরপরও খালেদা জিয়ার পরিপূর্ণ সুস্থতার জন্য সরকার অত্যন্ত আন্তরিক। বেগম খালেদা জিয়ার ইচ্ছে অনুযায়ী তাকে জেলে থাকার তার সাথে থাকার তার সাথে থাকার সুযোগ করে দিয়েছে বিশেষ বিবেচনায়।’

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমি বিএনপিকে অনুরোধ জানাবো বেগম খালেদা জিয়ার পুরনো শারীরিক সমস্যাকে বড় করে দেখিয়ে আপনারা জনগণকে বিভ্রান্ত করবেন না’।

বিএনপি মহাসচিবের সংবাদ সম্মেলন প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘তিনি নির্বাচন কমিশনের গঠন নিয়ে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, নির্বাচন কমিশন তো সরকার গঠন করে দেয়নি, নির্বাচন কমিশন গঠন করার সময় সার্চ কমিটির মাধ্যমে, জাতীয় সংলাপের মাধ্যমে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। বিএনপি প্রস্তাবনা ছিল, বিএনপি প্রস্তাবনা থেকে একজন কমিশনার সেখানে আছেন, অথচ আওয়ামী লীগের কমিশনার, প্রধান নির্বাচন কমিশনার থেকে কেউ এই কমিশনে স্থান পায়নি। আসলে নাচতে না জানলে উঠান বাঁকা।’

ড. হাছান বলেন, ‘বিএনপি এই নির্বাচন কমিশনের অধিনে নির্বাচনে গিয়েছেন। এর আগেও মেয়র নির্বাচনে গিয়েছেন। যখন জাতীয় নির্বাচনে জনগণ তাদের প্রচণ্ডভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে, তখন তারা প্রশ্ন তুলছে। হেরে গেলে কোনো কোনো দল রেফারিকে ধরার চেষ্টা করে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবের বক্তব্য সে রকম।’

বিএনপিকে সংসদে আসার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আমি তাদের অনুরোধ জানাবো যে নির্বাচন কমিশনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার নীতি আপনারা অনুসরণ করছে, আপনারা এই নীতি থেকে সরে আসুন। আমরা চাই একটি শক্তিশালী দল হিসেবে বিএনপি থাকুক, আমাদের গঠনমূলক সমালোচনা করুক। আমি আহ্বান জানাবো বিএনপি পার্লামেন্টে আসুক। আপনারা যেমন রাজপথে সরকারের সমালোচনা করেছেন, সেটা পার্লামেন্টে এসে করুন। আসুন গণতন্ত্রের ভিতকে শক্তিশালী করি।’

বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক সারা বেগম কবরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে ঢাকা মহানগর দণি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ ও বিশেষ অতিথি হিসেবে আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট বলরাম পোদ্দার বক্তব্য রাখেন।

আরো বক্তব্য দেন প্রখ্যাত শিল্পী রফিকুল আলম, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কালাম আজাদ, কণ্ঠশিল্পী এসডি রুবেল, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক অরুণ সরকার রানা, সাংগঠনিক সম্পাদক জেনিফার ফেরদৌস, সদস্য চিত্রনায়িকা শাহনূর, মীম প্রমূখ।