পরিবেশ সংক্রান্ত অভিযোগ জানানো যাবে ৩৩৩-৪-এ

লেখক:
প্রকাশ: ১০ মাস আগে

এখন থেকে ৩৩৩-৪-এ পরিবেশ সংক্রান্ত যে কোনো অভিযোগ জানানো যাবে। পরিবেশ সম্পর্কিত অভিযোগের দ্রুত প্রতিকার ও প্রয়োজনীয় সেবার জন্য এই কল সেন্টার (৩৩৩-৪) চালু করেছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। কল সেন্টারে ফোন করে যে কোনো নাগরিক পানিদূষণ, বায়ুদূষণ, গাছ কাটাসহ পরিবেশ দূষণ সংক্রান্ত যে কোনো অভিযোগ জানাতে পারবেন সাধারণ মানুষ।

 

মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এ কল সেন্টার উদ্বোধন করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী।

এ সময় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব মো. সামসুল আরেফিন এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

 

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় চালু করা কল সেন্টার ৩৩৩-৪ নম্বরে ফোন করে যে কেউ পরিবেশ সংক্রান্ত যে কোনো অভিযোগ ও সেবা নিতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে প্রথমে ৩৩৩ নম্বরে ফোন দিতে হবে। এরপর পরিবেশ সংক্রান্ত সেবা পেতে ৪-এ চাপ দিতে হবে।

পরিবেশমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, প্রত্যন্ত অঞ্চলে একটা পুকুর ভরাট হয়ে যাচ্ছে বা একটা জলাশয় ভরাট হয়ে যাচ্ছে, ওই ব্যক্তি অভিযোগ কার কাছে করবে? এখন যেটা হচ্ছে (কল সেন্টার চালু) সরাসরি মিনিস্ট্রিতে চলে আসছে। মাঝখানে যে স্তরগুলো ছিল সেগুলো আমরা সরিয়ে দিলাম। ডিজিটাল বাংলাদেশ, স্মার্ট বাংলাদেশ সব কিছুর মূল লক্ষ্য সাধারণ নাগরিক এবং সরকারের মধ্যে দূরত্ব কমিয়ে আনা।

 

‘আমরা যতই উন্নয়ন পরিকল্পনা নেই না কেন, মন্ত্রণালয় এবং মন্ত্রণালয়ের অধিনে যে লিংকগুলো আছে তাদের সক্ষমতা যদি আমরা নিশ্চিত করতে না পারি, আমরা কিন্তু যে জায়গায় পৌঁছাতে চাচ্ছি সেই জায়গায় পৌঁছাতে পারবো না।’ বলেন  পরিবেশমন্ত্রী।

এটুআই, আইসিটি বিভাগ এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমঝোতা স্মারক :

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়কে একটি স্মার্ট মন্ত্রণালয়ে পরিণত করা এবং এর সার্বিক ডিজিটাল রূপান্তরে সহযোগিতা ও সমন্বয়কে সহজতর করার জন্য এটুআই, আইসিটি বিভাগ এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।

 

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের পক্ষে মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ এবং এটুআই-এর পক্ষে প্রকল্প পরিচালক (যুগ্মসচিব) মো. মামুনুর রশীদ ভূঞা সমঝোতা স্মারকে সই করেন।

এ বিষয়ে পরিবেশমন্ত্রী বলেন, এ সমঝোতা স্মারক পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ে নাগরিকদের অভিযোগ জানানোর সুবিধা স্থাপনের পাশাপাশি সরকারি সেবা উন্নত করা, অভ্যন্তরীণ দক্ষতা বৃদ্ধি এবং নাগরিক সম্পৃক্ততা বাড়ানোর লক্ষ্যে ডিজিটাল উদ্যোগের পরিসরকে বিস্তৃত করবে।

 

তিনি বলেন, এটুআই প্রোগ্রামের সহযোগিতায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অধীন সাফারি পার্কসহ বিভিন্ন পরিদর্শন কেন্দ্রে ই-টিকিপটের ব্যবস্থা করা হবে। মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন ও এর অগ্রগতি পর্যালোচনার জন্য এডিপি ট্র্যাকারের ব্যবস্থা করা হবে। মন্ত্রণালয়ের ইনস্টিটিউশনাল মেমোরি সংরক্ষণ এবং পরিকল্পনা ও নীতি প্রণয়নে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) একীভূত করা হবে। পরিবেশগত মান এবং প্রভাব মূল্যায়নে এনফোর্সমেন্ট কার্যক্রম শক্তিশালীকরণের জন্য ডিজিটাল সমাধান করা হবে। অনলাইন পরিবেশগত ছাড়পত্র সনদ প্রদান এবং প্রক্রিয়া ট্র্যাকিং ব্যবস্থা সহজ করা হবে।

ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, সমঝোতা স্মারক সইয়ের মাধ্যমে দুই মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সেতুবন্ধন রচনা হতে যাচ্ছে। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় হবে প্রথম স্মার্ট মন্ত্রণালয়।

 

তিনি বলেন, এখন থেকে নাগরিকরা ৩৩৩ নম্বরে কল করে পরে ৪ চেপে পরিবেশ ছাড়পত্র, গবেষণাগার, বন সংরক্ষণ ইত্যাদি পরিবেশ মন্ত্রণালয় ও এর অধীন অধিদপ্তরগুলোর তথ্যসেবা ও কর্মকর্তাদের তথ্য পাবেন। পাশাপাশি পানিদূষণ, বায়ুদূষণ, শব্দদূষণ, জীববৈচিত্র্য বিনষ্ট এবং অবৈধভাবে বন/পাহাড় ধ্বংস ও গাছ কাটা ইত্যাদি বিষয়ে অভিযোগ জানাতে পারবেন। পরে অভিযোগটি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার ড্যাশবোর্ডে পাঠাতে হবে। এরপর কর্মকর্তা অভিযোগের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন এবং সুবিধাভোগীরা এসএমএস-এর মাধ্যমে আপডেট পাবেন অথবা ৩৩৩-তে কল করেও আপডেট জানতে পারবেন। সরকারি কাজে জনগণকে ডিজিটালি সম্পৃক্ত করে আগামী ৫ বছরে উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণের মাইলফলক স্থাপিত হবে।