তল্লাশীর ফাঁদে ফেলে কিশোরকে বলাৎকার, পুলিশ সদস্য গ্রেফতার

লেখক:
প্রকাশ: ৩ years ago

ফেনীতে দেহ তল্লাশীর ফাঁদে ফেলে এক কিশোরকে বলাৎকারের করে ইউনুস আলি নামে একজন পুলিশ সদস্য। বলাৎকারের সময় ভিডিও চিত্র ধারণ করেন তিনি।

এরপর সেটি ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তিনি টানা তিন মাস ধরে বলাৎকার করেছেন আবির হোসেন আকাশ নামে ওই কিশোরকে। অভিযোগের ভিত্তিতে ইতোমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে ইউনুস আলিকে।

বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) ওই কিশোরের মা বাদী হয়ে ইউনুসকে আসামি করে ফেনী মডেল থানায় মামলা করেন। পরে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়।

জানা গেছে, ফেনী মডেল থানার সামনের একটি নির্জন স্থানকে নিজের বিকৃত যৌনাচারের নিরাপদ জায়গা হিসেবে বেছে নেয় খোদ ওই থানার পুলিশ সদস্য ইউনুস। ধারণকৃত বলাৎকারের ভিডিও ভাইরালের ভয় দেখিয়ে ওই কিশোরকে রাতে যখন-তখন ওই স্থানে আসতে বাধ্য করা হতো। প্রায় রাতেই চালানো হতো নির্যাতন।

নির্যাতিত আকাশ জানান, প্রথমে মামলার ভয় দেখিয়ে তাকে বলাৎকার করা হয়। এরপর সেই বলাৎকারের ভিডিও ইমোতে পাঠায় এবং ভাইরাল করার হুমকি দিয়ে তাকে গত কয়েকমাস ক্রমাগত বলাৎকার করে আসছে ওই পুলিশ কর্মকর্তা। উপায় না দেখে শেষ পর্যন্ত মামলা করতে হলো।

২০২১ সালের ২৩ ডিসেম্বর ফেনীর শহরের মহিপালে দেহ তল্লাশীর নামে ওই কিশোরকে আটক করে ইউনুস আলি। একপর্যায়ে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় একটি হোটেলে। সেখানে মামলার ভয় দেখিয়ে প্রথম দফায় শারীরিক সম্পর্ক করে ইউনুস এবং সেই ঘটনা মোবাইল ফোনে ধারণ করে।

পরে সেই ভিডিও ভাইরালের ভয় দেখিয়ে প্রায়ই বলাৎকার করা হতো তাকে। এছাড়া ওই কিশোরের কাছ থেকে নগদ টাকাও হাতিয়ে নেয় ইউনুস আলি। একপর্যায় বিকৃত রুচির ইউনুস তার কিছু সহযোগীদেরও এই কিশোরের পেছনে লেলিয়ে দেয়। তারাও তাকে অনৈতিক কাজে বাধ্য করতে চাপ দেয়। এতে বেঁকে বসে সে।

এদিকে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য ইউনুস নতুন মোবাইল সেট উপহার দেওয়ার লোভ দেখিয়ে তার নিজ বাড়িতে নিয়ে ওই কিশোরের সঙ্গে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক করেন। পরে কিশোরটি তাকে দেওয়া সেই মোবাইল অন্যত্র বিক্রি করে দেয়। এতে রেগে যান ওই পুলিশ সদস্য। পরে এ ঘটনায় মোবাইল উদ্ধারে পুলিশ মাঠে নামলে ঘটনা ফাঁস হয়ে যায়।

এর আগে, সুযোগ পেয়ে ওই কিশোর নিজেকে রক্ষা করতে কৌশলে ইউনুস আলির মোবাইল ফোনটি নিয়ে সব ভিডিও মুছে ফেলে।

ওই কিশোরের পরিবার বিষয়টি জানার পর তার মা বাদি হয়ে বৃহস্পতিবার ফেনী মডেল থানার পুলিশ সদস্য ইউনুস আলিকে আসামি করে মামলা করে। অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ইউনুসকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়।

ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিজাম উদ্দিন বলেন, যেহেতু অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে, তাই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কারও ব্যক্তিগত দায়ভার ডিপার্টমেন্ট নেবে না।

এদিকে ইউনুস আলিকে গ্রেফতারের পরপরই ফেনীর পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল মামুন এক আদেশে তাকে চাকুরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করেছেন।