প্রায় দেড়শ বছরের টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে ৩৭০ বা তার বেশি রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড রয়েছে মাত্র ৭টি। যা প্রমাণ করে চতুর্থ ইনিংসে ৩৭০ বা তার বেশি রান তাড়া করে জেতা কতটা কঠিন। তাই চলতি চট্টগ্রাম টেস্ট বেশ কঠিন চ্যালেঞ্জই অপেক্ষা করছে বাংলাদেশ দলের সামনে।
কেননা এরই মধ্যে দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৭৪ রানের লিড নিয়ে ফেলেছে আফগানিস্তান। তাদের ওপেনার ইবরাহিম জাদরান জানিয়ে গেছেন ৪০০ প্লাস রানের লিড দাঁড় করানোর লক্ষ্যের কথা। আর যদি ৪০০’র বেশি লক্ষ্য দেয়া হয় বাংলাদেশকে, তাহলে কাজটি হবে আরও কঠিন। কেননা ৪০০’র বেশি রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড মাত্র ৪টি।
তবু যেটা আগে কখনও হয়নি, সেটা যে পরেও কখনো হবে না- সে কথা কেউ জোর দিয়ে বলতে পারে না। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন কিছু হয় বলেই, বদলায় ক্রিকেটের সব রেকর্ড। আর এটিই যেনো আশা জাগাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে। তরুণ অলরাউন্ডার মেহেদি হাসান মিরাজও শুনিয়ে গেলেন এমনই আশার কথা।
সংবাদকর্মীদের প্রায় ২৫ মিনিট অপেক্ষায় রেখে সংবাদ সম্মেলনে এসে তিনি বলেন, ‘আসলে ক্রিকেটে সবকিছুই হতে পারে। আমরা চেষ্টা করবো যে, যেহেতু আমাদের হাতে দুই দিন সময় আছে। আমাদের প্রথমে কাজ হলো ওদের দুই উইকেট তুলে নেয়া। এরপর ব্যাটসম্যানরা সবাই তাদের দায়িত্বটা বুঝবে, তারা যদি সেটা পালন করতে পারে…, আমি মনে করি, আসলে ক্রিকেট খেলায় সবই হতে পারে। হারা ম্যাচ অনেকে জিতে যায় আবার জেতা ম্যাচও হারতে পারে। এমন অনেক অঘটন ঘটেছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখানে অবশ্যই ব্যাটসম্যানদের চ্যালেঞ্জ নিতে হবে। আমাদের প্রসেসে থাকতে হবে, আমরা চেষ্টা করবো। এমন বড় স্কোর তাড়া করতে গেলে ব্যাটসম্যানদের সবারই অবদান রাখতে হবে।’
২০০৮ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৫২০ রান তাড়ায় চতুর্থ ইনিংসে ৪১৩ রান করেছিল বাংলাদেশ। সেদিন জয় না পেলেও, সে ম্যাচটি অনুপ্রেরণা হিসেবে নিতে পারবে বাংলাদেশ? মিরাজের জবাব, ‘না, আসলে আমি আগেই বলেছি যে প্রত্যেকটা সেশন আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যদি বিশ্বাস করি, সবাই যদি এগিয়ে আসতে পারি তাহলে আমরা হয়তো ভালো কিছু করতে পারবো। একটা ইনিংস আমরা খেলেছি, তার মানে এই না যে দ্বিতীয় ইনিংসেও আমরা খারাপ খেলবো। আমরা যদি ডমিনেট করে খেলতে পারি, তাহলে আমাদের ভালো একটা সুযোগ থাকবে।’
সুযোগ-সম্ভাবনা কম থাকলেও, চেষ্টা করতে ক্ষতি নেই জানিয়ে মিরাজ বলেন, ‘আমাদের জন্য এখানে কাজটা সত্যিই কঠিন। কারণ এত রান তাড়া করে মাত্র কয়েকটা ম্যাচ জিতেছে, বেশিরভাগ ম্যাচই হেরেছে; কিন্তু আমাদের তো চেষ্টা করতে বাধা নেই। কারণ আমাদের সামনে দুইদিন সুযোগ আছে। আমাদের চেষ্টা করতে হবে। তারপর যদি হেরে যাই বা জিতে যাই, সেটা দিনশেষে দেখতে পারবো। কিন্তু আমাদের হাতে এখন যেটা আছে, আমরা চেষ্টা করতে পারি।’
আফগানিস্তানকে হালকাভাবে নেয়ার কারণেই কি তিনদিন পর ম্যাচের এমন পরিস্থিতি? কিংবা ম্যাচের আগে এমন হতে পারে ভেবেছিল কি বাংলাদেশ?
মিরাজ বলেন, ‘আমি সবসময় একটা কথা বলি যে, টেস্ট ক্রিকেটে যারা সেশন বাই সেশন ভালো খেলবে তারাই এগিয়ে থাকবে, তারাই ভালো করবে। আমরা ওদের হালকা করে দেখেছি বা গুরুত্ব দেইনি, এমন কিছুই নয়। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রতিপক্ষ যারাই হোক, আমরা সবসময়ই সিরিয়াস থাকি। কাউকে ছোট করে দেখার কিছু নেই। এ ম্যাচে ওরা অনেক ভালো খেলেছে, এটা মানতেই হবে। অনেক ধৈর্য্যের পরিচয় দিয়েছে।’