সৌদিকে থাকেন সাদ্দাম হোসেন। ছুটিতে এসেছিলেন বাড়িতে স্বজনদের কাছে। ছুটি শেষে ফিরে যাচ্ছিলেন প্রবাসে। সোমবার (২৩ অক্টোবর) রাত ৯টার বিমানে সাদ্দামের সৌদি যাওয়ার কথা। তাই বড় ভাইকে বিদায় জানাতে তার সঙ্গী হয়েছিলেন ছোট ভাই আফজাল হোসেন (২৪)। কিন্তু চোখের পলকে কয়েক মিনিটে সব যেন তছনছ হয়ে গেলো। বড় ভাইকে বিদায় জানাতে গিয়ে চিরবিদায় নিলেন ছোট ভাই। অন্যদিকে সৌদিতে ফিরে যাওয়া তো দূরে কথা গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে বড় ভাই। আর ছেলেকে হারিয়ে পরিবারে চলছে মাতম।
সোমবার (২৩ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৩টায় কিশোরগঞ্জের ভৈরব জংশনের কাছাকাছি গাইনাহাটি এলাকায় যাত্রীবাহী ট্রেন এগারসিন্ধুর গোধূলী ও একটি মালবাহী ট্রেন দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান আফজাল। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন বড় ভাই সাদ্দাম। দুর্ঘটনায় ১৭ জনের লাশ উদ্ধার করা হয় এবং আহত হয় অর্ধশতাধিক।
নিহত আফজাল হোসেন ভৈরব উপজেলার আগানগর ইউনিয়নের রাধানগর গ্রামের কৃষক আবদুল মান্নানের ছেলে। তিনি ঢাকা কলেজের মাস্টার্সে পড়াশোনা করছিলেন।
নিহত আফজালের প্রতিবেশী সৌরভ অপু জানান, আফজাল পড়াশোনায় খুব ভালো ছিল। তাই তার পরিবারের অনেক স্বপ্নও ছিলে তাকে নিয়ে। তার বাবা ও ভাইয়ের অনেক আশা ছিল পড়াশোনা শেষে সে একদিন সরকারি চাকরি করবে। তাদের চার ভাইয়ের মধ্যে দুই ভাই সাদ্দাম ও আরিফ সৌদি প্রবাসী। আফজালের পড়াশোনায় যেন কোন ঘাটতি না থাকে তাই নিয়মিত বিদেশ থেকে তার জন্য টাকা পাঠাতেন। ওদের ভাইয়ের মাঝে অনেক মিল ছিল।
তিনি আরও জানান, সাদ্দাম কিছুদিনের জন্য ছুটি নিয়ে বাড়িতে এসেছিল। ছুটি শেষ তাই সৌদি ফিরতে সোমবার এগারসিন্দুর ট্রেনে বিমানবন্দর যাচ্ছিলেন। রাত ৯টায় তার ফ্লাইট ছিল। বড় ভাইকে বিদায় দিতে গিয়েছিলেন আফজাল। অথচ ট্রেন দুর্ঘটনায় তারই চিরবিদায় নিতে হলো। বড় ভাইয়েরও বিদেশ যাওয়া হলো না, আর ছোট ভাইটাও চলে গেল পরপারে। সাদ্দামও মুমূর্ষু অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল চিকিৎসাধীন।