ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের (সিএএ) পক্ষের ও বিরোধীদের সংঘাতের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। একই সঙ্গে তিনি সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সমগ্র দেশের মানুষের কাছে শান্তি বজায় রাখার জন্য আবেদন জানাচ্ছি।
নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতাকে ঘিরে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছে দিল্লি। সেখানে মুসলিমদের খুঁজে খুজে হামলা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এমনকি মঙ্গলবার দিল্লির একাধিক মসজিদে উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন।
মুসলিমদের ওপর হামলা ও দোকানপাট লুট ও অগ্নিসংযোগের খবর সংগ্রহ করতে প্রচণ্ড আক্রমণের শিকার হয়েছেন দেশটির সাংবাদিকরাও। সাংবাদিকদের ধর্মীয় পরিচয় জানতে প্যান্ট খুলে দেখার অভিযোগ উঠেছে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে।
দেশটির একটি দৈনিক বলছে, সহিংসতায় বিধ্বস্ত দিল্লি এখন আতঙ্কের নগরীতে রূপ নিয়েছে। দিল্লির বিভিন্ন অংশে উন্মত্ত জনতার আক্রমণ থেকে বাঁচতে বাড়িতে বাড়িতে গেরুয়া পতাকা ঝুলিয়ে নিজেদের হিন্দু হিসেবে পরিচয় দেয়া হচ্ছে।
দিল্লির এমন অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি নিয়ে মমতা, ‘যা চলছে, তা নিয়ে আমরা গভীর ভাবে উদ্বিগ্ন। কেন এসব চলছে আমি জানি না। আমরা ঘটনার ওপর নজর রাখছি। আমি মনে করি, সবার শান্তি বজায় রাখা উচিত। আমাদের দেশ শান্তির দেশ, মানবতার দেশ, ধর্মনিরপেক্ষ দেশ। সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে চলার দেশ। এখানে হিংসার কোনও স্থান নেই।’
দিল্লির সহিংসতায় এখন পর্যন্ত ২০ জনের প্রাণ গেলেও বিজেপির পশ্চিমবঙ্গ শাখার সভাপতি দিলীপ ঘোষ আরও কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, দিল্লিতে যারা পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ছুঁড়েছেন, পিস্তল তাক করে এগিয়ে যাচ্ছেন; তাদের কি ডেকে চা খাওয়ানো হবে? আমার মনে হয়, আরও কড়াভাবে পরিস্থিতির মোকাবিলা করা উচিত। এখন বিরোধীরা বলছেন, প্রশাসন কোথায়? আর যখন জামিয়া মিলিয়ায় প্রশাসন ব্যবস্থা নিয়েছিল তখন তারা বলেছিলেন, গণতন্ত্র কোথায়?
দিল্লির এই অশান্তির কথা আগাম জানতে না পারাটা কি গোয়েন্দাদের ব্যর্থতা? দিলীপের জবাব, ‘আগে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চলছিল। সেটা হঠাৎ হিংসাত্মক হয়ে উঠবে, তা কী করে বোঝা যাবে? কার ব্যর্থতা আমি জানি না। তবে সব সত্য বের করার ক্ষমতা কেন্দ্রীয় সরকারের রয়েছে। সেই সত্য সামনেও আসবে।’