#

ওক গাছ। ৫০০ বছরের বেশি বয়সের বৃক্ষটি অনেক রমণীদের মনের বাসনা পূরণ করে আসছে। জার্মানির হ্যামবার্গ শহর থেকে উত্তর-পশ্চিমে প্রায় ১০০ কিমি দূরে দ্যদওর বনের এ বৃক্ষটি গত ১ শতাব্দী ধরে নরনারীর সঙ্গী খুঁজে দিচ্ছে। পাশাপাশি শতোর্ধ্ব বিবাহ সম্পন্ন করেছে প্রাচীন বৃক্ষটি।

জানা যায়, প্রিয় মানুষটিকে পাওয়ার জন্য অথবা ভালো বন্ধু সন্ধানের জন্য নারীরা এই গাছকে পত্র লিখে পাঠায়। তাদের না-বলা কথাগুলো লিখে। সেখানে যদি পত্র পড়ে কোনও পুরুষের কাছে ভালো লাগে বা পত্রপ্রেরকের স্বপ্নের সঙ্গে পুরুষের স্বপ্ন মিলে যায় তবেই তাদের মিল হয়। তবে যার ব্যক্তিত্বের সঙ্গে অসমতা থাকে, সে উত্তর দিতে না চাইলে পত্রটি পড়ে আবার সেখানে রেখে দেয়। এতে অন্যজন পড়ার সুযোগ পায়। আর এভাবেই যুগ যুগ ধরে সম্পর্কের অটুট বন্ধনে আবদ্ধ হচ্ছে অসংখ্য নিঃসঙ্গ নর-নারী।

প্রকাণ্ড ওক গাছটিতে রয়েছে অদ্ভুত রকমের একটি বড় ছিদ্র, যেটি পেতে ৩ মিটার উঁচু কাঠের মই বেয়ে উঠতে হয়। তাতে হলুদ রং দিয়ে চিহ্নিত করা গর্তে রয়েছে। প্রতিদিন পৃথিবীর নানা দেশ থেকে বেগুনি রঙের চিঠির খাম নিয়ে ডাক পিয়ন হাজির হয় সেখানে। সেখানে ১৯৮৪ সাল থেকে ২০ বছর ধরে চিঠি বিতরণ কাজে নিয়োজিত ছিলেন কার্ল হেইঞ্জ মার্টিন্স নামের এক ডাক পিয়ন।

বর্তামানে তিনি অবসরে আছেন। ৭২ বছরের এই প্রবীণ জানান, এ বিষয়টি জাদুর মতো ও অনেক কল্পনাসমৃদ্ধ। উপমহাদেশের অনেক স্থান থেকেই সেখানে পত্র পাঠানো হয় বলে জানান তিনি।

মার্টিন্স জানান, এটির আবিষ্কারের গল্প। ১৮৯০ সালের ঘটনা। একবার স্থানীয় একটি মেয়ে এক চকলেট প্রস্তুতকারক যুবককে পছন্দ করে। বাবা ছেলেটিকে দেখে অপছন্দ ও অসম্মতি করে। তাই তারা দু’জনে আর তেমন দেখা করতে পারে না। এর পরে অনেক দিন তারা গোপনে গোপনে চিঠি লেখে। সেই ওক গাছটির কাছে চিঠি লিখে রেখে যায়। এভাবে এক বছর পরই মেয়েটির বাবা ছেলেটিকে মেনে নেয় এবং মেয়ের সঙ্গে বিয়ে দেয়। বিয়েটি সম্পন্ন হয় চির প্রাচীন শাখা ছড়ানো ওক গাছটির নিচে। এ ঘটনায় বিষয়টি খুবই আলোড়ন সৃষ্টি করে। পরে জার্মান ডাক বিভাগ ১৯২৭ সালে গাছটিতে নিজস্ব পোস্টকোড নম্বর ও একজন ডাক পিয়ন নিযুক্ত করে। আজ পর্যন্ত পোস্টকোড নম্বর ও ডাক পিয়ন রয়েছে।

তিনি আরও জানান, সময় পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ঘটক গাছটির কাছে এখন বছরে প্রায় ১ হাজার চিঠি আসে।

সূত্র: বিবিসি

উত্তর দিন

Please enter your comment!
এখানে আপনার নাম লিখুন