ছুটি চেয়েছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, শিক্ষার্থীদের প্রত্যাখ্যান

লেখক:
প্রকাশ: ৬ years ago

টানা ১২ দিন ছাত্র আন্দোলনের মুখে স্বেচ্ছায় ছুটিতে যাওয়ার আবেদন করেছেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এস এম ইমামুল হক। বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বিশ্ববিদ্যালয়) আবদুল্লাহ আল হাসান চৌধুরীর মাধ্যমে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিবের কাছে তিনি ১৫ দিনের ছুটির আবেদন করেছেন।

রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে করা ওই আবেদনে উপাচার্য ব্যক্তিগত কারণে ছুটি চেয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন। রেজিস্ট্রার ড. হাসিনুর রহমান এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

তবে উপাচার্যের ছুটির আবেদন প্রত্যাখ্যান করে তার পদত্যাগের এক দফা দাবিতে বৃহস্পতিবারও সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, উপাচার্য ১১ থেকে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি চেয়েছেন। তিনি ছুটিতে থাকাকালীন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক এ কে এম মাহবুব হাসান নিজ দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি উপাচার্যের রুটিন দায়িত্ব পালন করবেন বলে আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

সূত্র জানায়, উপাচার্য ছুটিতে থাকাকালীন যেহেতু পূর্বনির্ধারিত সিন্ডিকেটের কোনো সভা নেই, সেহেতু পরবর্তী সিন্ডিকেট সভায় ট্রেজারারের উপাচার্যের রুটিন দায়িত্ব পালনের বিষয়টি অবহিত করা হবে। আবেদনে সচিব বরাবর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।

এদিকে, উপাচার্য ছুটিতে যাওয়ার আবেদন করলেও তা প্রত্যাখ্যান করে তার পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা সকাল ১১টায় বরিশাল-পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করেন। বিকেল ৫টা পর্যন্ত টানা ছয় ঘণ্টা ওই মহাসড়ক অবরোধ করে রাখায় পটুয়াখালী-ভোলা ও বরগুনা জেলার কমপক্ষে ১৫ রুটের সব ধরনের যানবাহন আটকা পড়ে। এতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা সড়কে আটকে থাকায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে নারী, শিশু ও বৃদ্ধ যাত্রীদের।

বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য ও বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ইউনুস উপাচার্যের করা ছুটির আবেদনের কপি নিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পৌঁছে দিলেও ওই আবেদনে সন্তুষ্ট হননি আন্দোলনরতরা। তাদের নেতা মহিউদ্দিন সিফাত বলেন, আমরা উপাচার্যের পদত্যাগ অথবা বাধ্যতামূলক ছুটি দাবি করেছি। এ দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।

ছুটির আবেদন করার বিষয়ে জানতে উপাচার্য এস এম ইমামুল হকের মোবাইলে দুপুরে কল দেওয়া হলে তার ব্যক্তিগত সহকারী ফোন ধরে বলেন, ‘উপাচার্য ছুটি চেয়ে আবেদন করেছেন। আবেদনটি গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে। মন্ত্রণালয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষে ওই আবেদন যাবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে। পরে রাষ্ট্রপতির দপ্তরে পাঠানো হবে। তারপর আবার আসবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে।’

শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচি পালন :শিক্ষক নিয়োগ ও পদোন্নতিতে অনিয়ম বন্ধ করাসহ আট দফা দাবিতে দুই ঘণ্টা অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একাংশ। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর মিয়ার নেতৃত্বে ১২-১৫ শিক্ষক এদিন একাডেমিক ভবনের নিচতলায় সকাল ১০ থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।