ঘুষ চাওয়ার অডিও ফাঁস, এসআইকে প্রত্যাহার

লেখক:
প্রকাশ: ২ years ago

রাজশাহীতে পুলিশের এক উপপরিদর্শকের (এসআই) ঘুষ চাওয়ার অডিও ফাঁস হয়েছে। দফায় দফায় আসামিকে ফোন করে ঘুষ চেয়েছিলেন পুলিশের এই কর্মকর্তা। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা নেওয়ার কথাও ফাঁস হয়েছে আসামির সঙ্গে মোবাইল ফোনে করা ওই আলাপে।

বুধবার (৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই রেকর্ড ছড়িয়ে পড়ার পর এই এসআইকে বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) সকালে থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

 

এই এসআইয়ের নাম মো. ওয়ারেশ। তিনি রাজশাহী মহানগরীর রাজপাড়া থানায় কর্মরত ছিলেন। তাকে পুলিশ লাইনে পাঠানো হয়েছে।

ফাঁস হওয়া একাধিক অডিও ক্লিপে শোনা যায়, রাফি নামের এক ব্যক্তিকে ফোন করে এসআই ওয়ারেশ টাকা চাচ্ছেন। গ্রেপ্তার করা হবে না বলে ওসির জন্যও একটা ‘বাজেট’ রাখতে বলছেন তিনি। পরে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে তিনি আসামির কাছ থেকে ২ হাজার ৪০ টাকা নেন। কিন্তু দাবি অনুযায়ী পাঁচ হাজার টাকা না দেওয়ায় গালিগালাজ করেন এসআই। তখন ওই আসামি একদিন পর বাকি তিন হাজার টাকা দিতে চান। পরে তিনি পুলিশ ফোর্সের চা নাস্তা খাওয়ার জন্য আবার টাকা চান। আরেক অডিওতে শোনা যায়, আসামি আদালত থেকে জামিন নিয়ে এসে থানার ডিউটি অফিসারের কাছে কাগজ জমা দিয়েছেন। কিন্তু এসআই ওয়ারেশের কাছে কাগজ জমা না দেওয়ায় তিনি আসামিকে গালিগালাজ করেন।

আরেকটি অডিওতে একই মামলার আরেক আসামি কাচার সঙ্গেও এসআই ওয়ারেশের কথোপকথন ফাঁস হয়েছে। এই অডিওতে এসআই ওয়ারেশ ফোন করে টাকা চান বলে শোনা যাচ্ছে। জামিন নেওয়ার কারণে আসামি কাচা ঘুষ দিতে না চাইলে এসআই তাকেও গালিগালাজ করেন।

 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ৩ নভেম্বর নগরীর আইডিবাগান পাড়া এলাকার সম্রাট নামের এক যুবককে মারপিটের অভিযোগে চারজনের নামে একটি মামলা হয়। এসআই ওয়ারেশ মামলাটি তদন্তের ভার পান। তখনই তিনি আসামিদের সঙ্গে কথা বলে টাকা নেন। তাই তাদের গ্রেপ্তার করেননি। পরে ৭ নভেম্বর আসামিরা আদালত থেকে জামিন নেন।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য আজ (বৃহস্পতিবার) দুপুরে এসআই ওয়ারেশের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এখন তিনি ওসির সামনে আছেন। থানা থেকে ছাড়পত্র নিচ্ছেন। পরে কথা বলবেন। তবে ফাঁস হওয়া অডিওটি সঠিক নয় বলে তিনি দাবি করেন।

রাজপাড়া থানার ওসি এএসএম সিদ্দিকুর রহমান বলেন, এই থানায় তিনি নতুন এসেছেন। কোথাও যেনো তার নাম ভাঙানো না হয়, সে ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক করেছেন। তারপরও এ রকম একটা ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি পুলিশ কমিশনারের নজরে এলে ওয়ারেশকে থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তিনি এখন থানা থেকে চলে যাচ্ছেন।