কোটা চাইলে আন্দোলন করতে হবে: প্রধানমন্ত্রী

লেখক:
প্রকাশ: ৬ years ago

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কোটা থাকলেই শুধু আন্দোলন। তাই কোটার দরকার নেই। কোটা না থাকলে আন্দোলন নেই, সংস্কারও নেই। তিনি বলেন, যদি কেউ কোটা চায়, তাহলে এখন কোটা চাই বলে আন্দোলন করতে হবে। সেই আন্দোলন যদি ভালোভাবে করতে পারে, তখন ভেবেচিন্তে দেখা হবে কী করা যায়? এরপর যদি কেউ কোনো কোটা চায়, তাহলে তাকে আন্দোলন করতে হবে। আন্দোলন ছাড়া কোটা দেওয়া হবে না।

জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের অভিজ্ঞতা জানাতে গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ মন্তব্য করেন। আজ বুধবার বিকেল চারটায় এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী নিউইয়র্কে তাঁর সফরের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, সফরের বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি তুলে ধরাই তাঁর লক্ষ্য ছিল। লিখিত বক্তব্যের পর তিনি বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।

এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধার নাতিই যখন কোটা চায় না, তখন কোটা রেখে লাভ আছে? সে জন্য আমি বলছি, কোটা থাকলে শুধু আন্দোলন। তাহলে আর কোটার দরকারই নাই, আন্দোলনও নাই, সংস্কারও নাই। যখন আমি বললাম কোটা থাকবে না, তখন বলে বাতিল না সংস্কার চাচ্ছি। আগে চাইল বাতিল, এরপর চাইল সংস্কার। কারণ কী? কোটা যদি না থাকে, তাহলে সংস্কারের প্রশ্ন উঠবে না। যদি কারও কোটা চাই, তাহলে এখন কোটা চাই বলে আন্দোলন করতে হবে। সেই আন্দোলন যদি ভালোভাবে করতে পারে, তখন ভেবেচিন্তে দেখব কী করা যায়? এপর যদি কেউ কোনো কোটা চায়, তাহলে তাকে আন্দোলন করতে হবে। আন্দোলন ছাড়া কোটা দেব না।’

প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা মুক্তিযোদ্ধা বা অনগ্রসর, তাদের জন্য জাতির জনক কোটাপদ্ধতি করে দিয়ে গিয়েছিলেন। কোটা যদি পূরণ না হয়, এর জন্য আন্দোলন লাগেনি। যখনই কোটা পূরণ হতো না, আমি প্রতিবছর কোটা রিলাক্স করে দিতাম। তারপর একবার বললাম যে বারবার না এনে এটাকে একটা স্ট্যান্ডার্ড নিয়ম দাঁড় করে ফেলো। যেখানে কোটা পূরণ না হবে, জায়গা যেন ফাঁকা না থাকে, সেখানে তালিকা থেকে পূরণ করা হবে। সেভাবে কিন্তু চলছিল। এরই মধ্যে এল আন্দোলন।’ এ সময় তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে হামলা ও ছাত্রী হল থেকে ছাত্রীদের বেরিয়ে আসার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ কারও মুখাপেক্ষী হয়ে রাজনীতি করে না। কে সমর্থন করবে আর কে সমর্থন করবে না, সেটা আওয়ামী লীগের কাছে বিবেচ্য নয়। তাঁর দলের জোর হচ্ছে দেশের জনগণ। জনগণের সমর্থন আছে কি না, জনগণ চায় কি না, ভোট দেবে কি না, সেটাই দেখার বিষয়। তিনি বলেন, ‘ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কাছে সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা অনুরোধ করেছেন বাংলাদেশকে সমর্থন না দিতে। তিনি কেন, বিএনপি যাচ্ছে, সবাই যাচ্ছে। যেয়ে তো অনুরোধ করে আসছে। এখন কে সমর্থন করবে আর কে সমর্থন করবে না, বা বাইরের দিকে মুখাপেক্ষী হয়ে আমরা রাজনীতি করি না।’

আসন্ন একাদশ সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মানুষ নির্বাচন চায় এবং তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। এখানে এত দল, কোন দল আসবে আর কোন দল আসবে না, সেটি হচ্ছে তাদের দলীয় সিদ্ধান্ত। তাদের সিদ্ধান্ত তো তিনি দিতে পারেন না। তিনি আশা করেন এবার সব দল নির্বাচনে আসবে। যদি কেউ না আসে, সেটি তাদের দলীয় সিদ্ধান্ত, সেখানে তাঁর কিছু করার নেই।

শেখ হাসিনা বলেন, গত নির্বাচনের আগে একটি চেষ্টা ছিল যে তখনকার যারা প্রধান বিরোধী দল ছিল বা অন্যান্য বিরোধী দল, তাদের আস্থার জায়গা সৃষ্টি করা। এ জন্য সবাই মিলে একটি সরকার গঠন করে নির্বাচন করার চেষ্টা হয়েছিল। তখন বিরোধী দল (বিএনপি) সংসদে ছিল। তারা তখন সাড়া দেয়নি। অন্যান্য যে দল সাড়া দিয়েছিল, তাদের নিয়ে একটি নির্বাচন অনুষ্ঠান করা হয়েছিল। তিনি বলেন, সেই নির্বাচন ঠেকানোর নামে পুড়িয়ে পুড়িয়ে মানুষ মারল। তাদের জন্য এত মায়া কেন? আর তাদের জন্য এত উদ্বেগ কেন? তাদের জন্য এত কান্নাকাটি, মায়াকান্না কেন, সেটি বোধগম্য নয়। তিনি বলেন, ‘দুঃখিত এ কথা বলার জন্য। আর এরা (বিএনপি-জামায়াত) স্বপ্ন দেখে দেশ চালাবে। এরা কী দেশ চালাবে? এতিমের সম্পদের লোভ যারা সামলাতে পারে না, তারা কী দেশ চালাবে?’

এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের পক্ষে তিনি। তিনি বলেন, ‘আমি ইভিএমের পক্ষে। আগে ইভিএমটা হোক। আমরা একনেকে প্রোজেক্ট পাস করে দিয়েছি। যেহেতু পাস করে দিয়েছি, সেহেতু আমরা ইভিএম চাই। জনগণ আমাদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে। জনগণের ভোটের অধিকার সুরক্ষিত করা আমাদের দায়িত্ব, আর সেটা মনে করেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। ইভিএমে আমার কোনো আপত্তি নেই।’

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে উদ্বেগের কিছু নেই
ডিজিটাল নিরাপত্তা বিষয়ে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি এখানে স্পষ্ট বলব, যে সাংবাদিকেরা মনে করে যে তারা কোনো অন্যায় কাজ বা কারও বিরুদ্ধে অপবাদ বা কোনো মিথ্যা তথ্য দেবে না, মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করবে না, তাদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। সেখানে আইনে যা কিছু দেওয়া আছে তা, সিআরপিসিতে যা দেওয়া আছে তা-ই দেওয়া আছে। এর বাইরে কিছু দেওয়া নেই। এসব আইন অলরেডি আমাদের দেশে আছে। সেখানে ডিজিটাল ডিভাইসগুলোর ব্যবহার সম্পর্কে উল্লেখ করা আছে।’ এ সময় তিনি জঙ্গিবাদ দমনে নেওয়া কিছু পদক্ষেপের কথা স্মরণ করিয়ে দেন।

আইন নিয়ে কারা উদ্বিগ্ন হবেন, সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘উদ্বিগ্ন তারা বেশি হবে, যারা এত দিন ধরে খুব তৈরিটৈরি হয়ে আছে যে, নির্বাচনের শিডিউলের পর নির্বাচন আসার কাছাকাছি আমাদের ভালো করে ঘায়েল করার জন্য যারা খুব বেশি ডকুমেন্ট তৈরি করে বসে আছে, অলরেডি ছাপছে কোনো কোনো পত্রিকা। আমি দেখি, হেডলাইনও পাই। বললাম না যে এই এতটুকু দোষ কী আছে সেটা খুঁজে বেড়াচ্ছে। তারা উদ্বিগ্ন হতে পারে। কারণ তারা ভাবছে যে, এ রকম একটা মিথ্যা নিউজ করব তা এটা তো মাঠে মারা যাবে।’

আইনে একটি বিষয়ের ঘাটতি আছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘একটি জিনিস ওখানে ঢোকানো উচিত বলে আমি মনে করি। সেটা হলো, যদি কেউ কারও বিরুদ্ধে কোনো মিথ্যা তথ্য দেয়, তবে মিথ্যা তথ্যটা তাকে প্রমাণ করতে হবে যে সেটা সত্য। যদি সেটি প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়, সেই সাংবাদিক যে লিখবে, যে পত্রিকা বা মিডিয়া লিখবে—ইলেকট্রনিক হোক আর ডিজিটাল ডিভাইস হোক, ব্যবহার করবে বা যে এটা ফোকাস করবে, যার বিরুদ্ধে লিখবে তার যে ক্ষতি হবে তার জন্য তাকে কমপেনসেশন দিতে হবে। তাকে (সাংবাদিককে) ফাইন করা হবে। মিথ্যা সংবাদের কারণে যার ক্ষতি হলো, সেই ক্ষতি কীভাবে পূরণ হবে?’ এ বিষয়ে তিনি যুক্তরাজ্যের একজন সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে বিবিসির একটি ‘মিথ্যা’ সংবাদের উদাহরণ দেন।

বিভিন্ন দেশের আইন দেখে আইনটি করা হয়েছে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ বিষয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের আইন আমরা দেখেছি। আইনগুলো দেখা হয়নি, তা না। তারপর অনলাইনে ছিল, সকলের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। এরপর এসে হঠাৎ এত উদ্বিগ্ন হয়ে গেলে কিসের জন্য? আমার কাছে সেটি প্রশ্ন। কারও যদি অপরাধী মন না থাকে বা ভবিষ্যতে কোনো অপরাধ করবে, এ রকম কোনো পরিকল্পনা না থাকলে তার উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ নেই। আগে কী ছিল? আগে তো সমন জারি হতো। আমি সেটা পরিবর্তন করে দিইনি? তিনি আরও বলেন, আপনাদের সাংবাদিকেরা যাঁরা নির্যাতিত হয়েছিলেন, তাঁদের জন্য কী করতে পেরেছেন? আর এখন আপনারা এটা (ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন) নিয়ে খুব উদ্বিগ্ন। আমি জানি, যারা উদ্বিগ্ন হয়ে আছে, তারা একটার পর একটা লেখা আমার ওপর চালাবে, আমার দলের বিরুদ্ধে-আমার বিরুদ্ধে চালাবে, তারা উদ্বিগ্ন হতে পারে। আপনাদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কিচ্ছু নেই। অন্তত আমি যত দিন আছি, এই পর্যন্ত উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই।’

একটা জোট হচ্ছে, আমি তাতে খুশি
বিএনপি, যুক্তফ্রন্টসহ জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে সৃষ্ট জোটের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘একটা জোট হচ্ছে, আমি তাতে খুশি। তাদের জোট করার জন্য যা যা সহযোগিতা করা লাগে, আমি তা-ও করতে রাজি। কারণ আমি জানি, বাংলাদেশে ভোট আছে দুইটি। একটি হলো আওয়ামী লীগ, আরেকটি হলো অ্যান্টি আওয়ামী লীগ। অ্যান্টি আওয়ামী লীগ ভোটটা তো একটি জায়গায় যেতে হবে। এখন জোট একটি হচ্ছে, বড় হচ্ছে এবং সেখানে কিন্তু বড় বড় মানুষ আছে। ভালো ভালো বড় বড় মানুষই আছে। জোট হওয়া তো ভালো কথা। আমার কথা হচ্ছে, শত ফুল ফুটতে দিন। এটা নির্বাচনের জন্য ভালো। শেষ পর্যন্ত তারা নির্বাচনে আসবে কিনা, তারপর পারবেন কিনা, সেই সাহস তাদের আছে কিনা—এটা একটা প্রশ্ন। কিন্তু জোট যখন হচ্ছে, আমি সাধুবাদ জানাচ্ছি।’

জোটের বিষয়ে ভয়ের কিছু নেই জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রক্রিয়াটা চলতে থাক। এটা নিয়ে আমার কোনো ভয়ের কিছু নেই। ভয় থাকে তার, যার হারাবার কিছু থাকে। আমার হারাবার কিছু নেই। আমি আমার বাবা-মা সব হারিয়েছি। দুটো বোন আছি। ছেলে-মেয়ে মানুষ আছে। তারা তো আপনাদের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। প্রত্যেকেই কিন্তু একটা না একটা কাজ করছে। তারা যে কাজ করছে, সেটা দেশের ভালোর জন্যই করছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ বলেন, অটিজম বলেন বা একজন তো ব্রিটিশ পার্লামেন্টের এমপি। একজন তো কাউন্টার টেররিজমের ওপরে মাস্টার ডিগ্রি করে সে সেখানে কাজ করে যাচ্ছে। আমি বলেছি যে, আমাদের এখানে এসে একটা বক্তৃতা দিয়ে যাও, কাউন্টার টেররিজমের ওপর সে এক্সপার্ট। কাজেই আমাদের ছেলেমেয়েরা দেশের ও জনগণের স্বার্থে কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের হারানোর কিছু নেই।’

সাবেক প্রধান বিচারপতি সম্মানজনকভাবে পদ ধরে রাখতে পারেননি
সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশে প্রথম একজন মাইনরিটি থেকে আমরা প্রধান বিচারপতি বানিয়েছিলাম। এখন তিনি সেই পদটাকে সম্মানজনকভাবে ধরে রাখতে পারেননি। এর মধ্যে আমাদের কিন্তু কিছু করার ছিল না। কারণ আপনাদের নিশ্চয় মনে আছে, তাঁরই সহকর্মীরা অ্যাপিলেট ডিভিশনের কয়েকজন বিচারপতি, উনি বাদে (এস কে সিনহা) রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করেন। দেখা করে তাঁরাই কিন্তু তাঁর নামে অভিযোগগুলো পেশ করেন। তাঁরা এ কথা বলেছিলেন, উনি (এস কে সিনহা) কোর্টে থাকলে তাঁরা আর বসবেন না। সমস্যাটা কিন্তু ওখান থেকে সৃষ্টি, এখানে কিন্তু আমরা কিছু করিনি। এই জিনিসটি বোধ হয় অনেকে ভুলে গেছেন। তাঁর মন্তব্যের বিষয়ে নিজের কোনো মন্তব্য নেই বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। শেষ পর্যন্ত কী করেন (এস কে সিনহা) বিষয়টা আমি অবজার্ভ করছি। বই যেটা লিখেছেন, ঠিক আছে বই পড়ে দেখেন কী লিখেছেন।’

সংবাদ সম্মেলনে রোহিঙ্গা বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কক্সবাজারে যেসব স্কুল-কলেজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেসব প্রতিষ্ঠান মেরামত করা হচ্ছে। এ জন্য বিদেশি সংস্থাগুলোও সাহায্য করছে। রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে নেওয়ার জন্য প্রক্রিয়া এগিয়ে চলছে। তিনি বলেন, ‘মিয়ানমার হচ্ছে সব কথায় হ্যাঁ হ্যাঁ বলে, কাজের বেলায় করে না। মিয়ানমারের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে নেপালে দেখা হলো, তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম তিনি বললেন আমরা তো রেডি। যেই আমরা পাঠাতে চাই, তখন কোথায় যেন একটা বাধা তাদের। তবে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।’

জাতির পিতার হত্যাকারীকে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার হত্যাকারীদের ফিরিয়ে আনার জন্য আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে আমার দেখা হয়েছে। সেখানে তাঁকে আমি বলেছি। সেখানে তিনি নোট নিলেন। আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গেও তাদের আলোচনা হয়েছে। এ ব্যাপারে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। নূর চৌধুরীর ব্যাপারেও তাই। সেখানে (কানাডা) কোর্টে একটা মামলা চলছে, আশা করি এখানেও আমরা ভালো একটা কিছু করতে পারব। বাকিদেরও খোঁজ করার চেষ্টা করছি। আমি বসে নেই। এদের যে করেই হোক, আনতে হবে। বাংলাদেশকে অভিশাপমুক্ত করতে হবে।’

নিউইয়র্কে ছয় দিনের সফরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৩তম অধিবেশনে ভাষণ দেওয়া ছাড়াও বিভিন্ন উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এবং যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর সঙ্গেও শেখ হাসিনার দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হয়।

রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার পাশাপাশি এ সংকট সামাল দিয়ে দূরদর্শী ভূমিকার জন্য নিউইয়র্কে দুটো সম্মাননা পান শেখ হাসিনা। জাতিসংঘের উচ্চপর্যায়ের বিভিন্ন বৈঠকে অংশ নিয়ে রোহিঙ্গা সংকটের সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানোর পাশাপাশি বিভিন্ন প্রস্তাব তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। নিউইয়র্কে সফরের দ্বিতীয় দিন ২৪ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সদর দপ্তরে শরণার্থী সংকট নিয়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে শেখ হাসিনা এক বছরের বেশি সময় ধরে চলমান রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে তিনটি প্রস্তাব বিশ্বনেতাদের সামনে তুলে ধরেন।

সাধারণ পরিষদে ভাষণের আগে ২৭ সেপ্টেম্বর দুপুরে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে জাতিসংঘ মহাসচিব ‘পূর্ণ সমর্থন ও সব ধরনের সহযোগিতার’ প্রতিশ্রুতি দেন। ঢাকা থেকে গত ২১ সেপ্টেম্বর রওনা হয়ে দুদিন লন্ডনে কাটিয়ে ২৩ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। গত সোমবার তিনি দেশে ফেরেন।