সাংবাদিক নির্যাতন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক (ডিসি) সুলতানা পারভীনকে প্রত্যাহার করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করা হয়েছে। সোমবার তার স্থলে কুড়িগ্রামে নতুন ডিসি নিয়োগ দেওয়া হবে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন রোববার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের এতথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, তদন্তে ডিসির বিরুদ্ধে অনেকগুলো অনিয়ম পাওয়া গেছে। এখন তার নামে বিভাগীয় মামলা হবে। মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তিনি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়েই থাকবেন। এখানে থেকে তার বিষয়ে আরও তদন্ত করা হবে। এরপর চূড়ান্ত রায় হবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের প্রত্যকের ব্যাপারে পুরোপুরি তদন্ত করতে হবে। সেক্ষেত্রে প্রত্যেকটি অনিয়মের জন্য কে কী রকম ভুমিকা রেখেছেন সেই ভূমিকা যদি নিজের চিন্তা-ভাবনা মতে করে থাকেন আইনবহির্ভূতভাবে, অবশ্যই তিনি দোষী সাব্যস্ত হবেন। সেই অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, অধীনস্তদের কাজগুলো সাধারণত তাদের বসের নির্দেশনায় হয়ে থাকে। আমরা দেখব যারা অধীনস্ত ছিলেন তারা কাজে কোনো গাফিলতি করেছেন কি-না, সমস্যা করেছেন কি-না। বিষয়গুলো নিয়ে আরও কিছু পর্যালোচনা করা হবে।
সাংবাদিককে শাস্তি দেওয়ার ঘটনায় ইতোমধ্যে অনেকগুলো পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সাংবাদিক আরিফুল মুক্ত হয়েছেন। সরকারের যে ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে, এখন সেই বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া অপরিহার্য। সেই বিষয়গুলোর জন্য এগোচ্ছি। অল্প সময়ের মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
ফরহাদ হোসেন বলেন, সরকারি চাকরি বিধিমালা অনুযায়ী প্রথম ডিসিকে প্রত্যাহার করা হয়েছে, এরপর বিভাগীয় মামলা হবে। সেই অনুযায়ী তার যে বিচার সেটি হবে। যে কোন বিষয়ের সিদ্ধান্ত সরকারের বিধিসম্মত ভাবেই করতে হয়। তবে তার কর্ম অনুযায়ী তিনি শাস্তি পাবেন। তিনি যদি দোষী সাব্যস্ত হন, বিচার না হলে তো আমরা বলতে পারি না তার কী হবে। এটার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। যেহেতু তিনি ইতোমধ্যে বিতর্ক সৃষ্টি করেছেন, সেজন্য কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার মধ্যরাতে বাংলা ট্রিবিউনের জেলা প্রতিনিধি আরিফুল ইসলাম রিগ্যানকে কুড়িগ্রাম শহরের চড়ূয়াপাড়ার বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। একই সঙ্গে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
রাতের বেলা এভাবে সাংবাদিককে বাড়ি থেকে তুলে এনে ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাজা দেওয়ার ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। মানুষ এতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।