কালো তালিকাভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম প্রকাশ করবে ইউজিসি

লেখক:
প্রকাশ: ২ years ago

স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি কার্যক্রম শুরুর আগে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে কালো তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানের নাম প্রকাশের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। এরই মধ্যে এ কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। এ পর্যন্ত কালো তালিকায় ১৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম এসেছে। তালিকায় যুক্ত হতে পারে আরও বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম।

ইউজিসি সূত্রে জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে গণবিজ্ঞপ্তি আকারে কালো তালিকাভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হতে পারে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চিহ্নিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে কয়েকটির বিরুদ্ধে অবৈধ ক্যাম্পাস চালানোর অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া অননুমোদিত প্রোগ্রাম চালানো, শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধের নির্দেশপ্রাপ্ত, সনদ বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে। কয়েকটির বিরুদ্ধে মালিকানা পরিবর্তনের অভিযোগও রয়েছে। কিন্তু উচ্চ আদালত থেকে স্থগিতাদেশ নিয়ে সেগুলো পরিচালিত হচ্ছে।

অনুমোদনহীন ক্যাম্পাস পরিচালনা
তালিকায় থাকা কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদন ছাড়াই ক্যাম্পাস পরিচালনা করছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সেগুলোর মধ্যে রয়েছে- সাউথইস্ট, ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভ ও ভিক্টোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয়।

অনুমোদনহীন কোর্স পরিচালনা
গণবিশ্ববিদ্যালয়ে অনুমোদন ছাড়া বিবিএ এনভায়রনমেন্ট সায়েন্স, এমবিবিএস, বিডিএস এবং ফিজিওথেরাপি কোর্স অবৈধভাবে পরিচালিত হচ্ছে। হাইকোর্টের ছয় মাসের স্থগিতাদেশ নিয়ে তারা এসব কোর্স পরিচালনা করছে। নর্থ সাউথে বিবিএ-এর একটি প্রোগ্রামের অনুমোদন থাকলেও একাধিক বিবিএ কোর্স খোলা হয়েছে।

কালো তালিকায় সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, পাবনা ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ, দ্য পিপলস ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের নামও রয়েছে। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে ইউজিসির অনুমোদন ছাড়া নিজেরাই একাধিক কোর্স খুলে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হচ্ছে।

ট্রাস্টি বোর্ড সদস্যদের দ্বন্দ্ব
ব্রিটানিয়া ইন্টারন্যাশনাল, সিলেট ইন্টারন্যাশনাল, কুইন্স ইউনিভার্সিটি, ইবাইস ইউনিভার্সিটি নামও রয়েছে এ তালিকায়। আইন অনুযায়ী দ্য ইউনিভার্সিটি অব কুমিল্লার কার্যক্রম স্থগিত করা হলেও ইউজিসি থেকে তা শুরুর অনুমতি চাওয়া হয়। তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এখনো তাদের অনুমোদন দেওয়া হয়নি। এর বাইরে সাউদার্ন ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে।

ইউজিসি কর্মকর্তারা জানান, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে একজন শিক্ষার্থীর অনেক টাকা খরচ হয়। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা যাতে প্রতারিত না হয়, সেজন্য গণবিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়ে থাকে। তাতে ভর্তির আগে বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে তথ্য যাচাইয়ের নির্দেশনা থাকে। পাশাপাশি বিজ্ঞপ্তিতে কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বশেষ পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়। এটা অনেকটাই নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ। কিন্তু সতর্কতা দেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলে বা সনদ নিলে তা কাজে লাগে না।

জানতে চাইলে ইউজিসির পরিচালক (বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়) ওমর ফারুক বলেন, ‘কালো তালিকাভুক্ত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা ভর্তির ক্ষেত্রে যাতে সর্তক থাকে, সে কারণে এ সংক্রান্ত একটি গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের প্রস্তুতি চলছে। আগামী সপ্তাহে তালিকাভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নাম ও তাদের অবস্থা উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ইউজিসির গণতালিকা প্রকাশের পরও কেউ যদি সেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়, তবে তার দায়ভার আমাদের থাকবে না। বর্তমানে ওয়েবসাইটে যেগুলোর নাম রয়েছে, তার বাইরে আরও কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। তাদেরও তালিকাভুক্ত করার কাজ চলছে।’