ম্যাচটি প্রীতির। কোনো প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ নয়। তবুও ব্রাজিল এবং ইংল্যান্ড মুখোমুখি মানেই ভিন্ন কিছু। এখানে থাকে টান টান উত্তেজনা, কিছু অসাধারণ ফুটবলীয় ক্যারিশমা দেখার দুর্লভ সুযোগ, ব্যক্তিগত নৈপুন্যে ভাস্বর হয়ে থাকার সঙ্গে দুই ফুটবল জায়ান্টের দ্বৈরথ। যে কোনো ধরনের প্রতিযোগিতার চেয়ে ব্রাজিল আর ইংল্যান্ডের এই প্রীতি ম্যাচটি কম আকর্ষণীয়।
লন্ডনের বিখ্যাত ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে তেমনই এক দ্রুপদি লড়াইয়ে মুখোমুখি হচ্ছে ইংল্যান্ড এবং ব্রাজিল। মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় রাত ২টায় মুখোমুখি হবে লাতিন এবং ইউরোপিয়ান ফুটবলের দুই পরাশক্তি।
স্বাগতিক রাশিয়া ছাড়া বাছাই পর্ব থেকে বিশ্বকাপ নিশ্চিত করেছিল ব্রাজিল। ইউরোপ থেকেও সরাসরি বিশ্বকাপ নিশ্চিত হয়েছিল ইংল্যান্ডের। আগামী বিশ্বকাপের আগে সিরিজ প্রীতি, অন্য অর্থে প্রস্তুতিমূলক ম্যাচ খেলে বেড়াবে অংশগ্রহণকারী দলগুলো। তারই অংশ হিসেবে এই সপ্তাহে ওয়েম্বলিতে ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হচ্ছে ব্রাজিল।
সপ্তাহের শুরতেই অবশ্য জাপানের মুখোমুখি হয়েছিল নেইমারের দেশ। ফ্রান্সের লিলে শহরের কাছাকাছি একটি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ওই ম্যাচে জাপানকে ৩-১ গোলে হারিয়েছে নেইমার অ্যান্ড কোং। অন্যদিকে নিজেদের মাঠে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন জার্মানির মুখোমুখি হয়েছিল ইংলিশরা। ওই ম্যাচে বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের জিততে দেয়নি থ্রি লায়ন্সরা। গোলশূন্য ড্র করেছিল তারা।
সর্বশেষ খেলা পাঁচটি ম্যাচের মধ্যে ৪টিতেই জয় পেয়েছে ইংল্যান্ড। যদিও ওই ম্যাচগুলো ছিল অধিকাংশই বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের। জার্মানির ম্যাচটিছাড়া প্রতিটি ম্যাচেই জয় ইংলিশদের। অন্যদিকে ব্রাজিল আগের ৫ ম্যাচের মধ্যে জিতেছে তিনটিতে। ড্র করেছে দুটিতে। ওই ৫ ম্যাচের চারটিই আবার বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের। সব মিলিয়ে বোঝাই যাচ্ছে সাম্প্রতিক শক্তির হিসাব-নিকাশে ইংল্যান্ড এবং ব্রাজিল কেউ কারও চেয়ে পিছিয়ে নেই।
আবার দু’দলের মুখোমুখি হওয়ার সর্বশেষ পরিসংখ্যান ঘাঁটাঘাঁটি করলে দেখা যাচ্ছে- এখানেও কেউ কারও চেয়ে পিছিয়ে নেই। সর্বশেষ দু’দল মুখোমুখি হয়েছিল ২০১৩ সালে। ব্রাজিলের মাঠে অনুষ্ঠিত ওই ম্যাচটি ড্র হয়েছিল ২-২ গোলে। ওই বছরই শুরুর দিকে নিজেদের মাঠে ব্রাজিলকে ২-১ গোলে হারিয়েছিল ইংল্যান্ড।
২০০৯ সালের নভেম্বরে ইংল্যান্ডের মাঠ থেকেই ১-০ গোলের জয় নিয়ে ফিরেছিল ব্রাজিলিয়ানরা। এরআগে ২০০৭ সালে দু’দল মুখোমুখি ম্যাচটি শেষ হয়েছিল ১-১ গোলে সমতায়। ২০০৭ সালের আগে ব্রাজিল আর ইংল্যান্ড মুখোমুখি হয়েছিল ২০০২ বিশ্বকাপে। ওই ম্যাচে ব্রাজিলের কাছে ২-১ গোলে হেরেছিল ইংল্যান্ড। অথ্যাৎ সর্বশেষ ৫ ম্যাচের মধ্যে ২টিতে জিতেছে ব্রাজিল। ১টিতে ইংল্যান্ড। বাকি দুটি হয়েছে ড্র।
ফিফা র্যাংকিংয়ে অবশ্য অনেক এগিয়ে ব্রাজিল। তারা রয়েছে এখন দুই নম্বরে। ইংল্যান্ড সেরা ১০টির মধ্যেও নেই। তারা রয়েছে ১২ নম্বরে। আজ নিজেদের মাঠে তাই ইংল্যান্ডের শ্রেষ্ঠত্ব দেখানোর দিন। অন্যদিকে ব্রাজিলের সামনে চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, নিজেদের তারা বিশ্বকাপের জন্য কতটা প্রস্তুত করে এগিয়ে যেতে পারছে সেটা দেখানোর। অন্য একটা চ্যালেঞ্জ কোচ তিতের। দায়িত্ব নেয়ার পর একটি ম্যাচ ছাড়া তিনি এখনও পর্যন্ত আর পরাজয় বরণ করেননি। এখন দেখার বিষয়, আগামীকাল ওয়েম্বলিতে ব্রাজিল-ইংল্যান্ড দ্বৈরথ কতটা জমে ওঠে।