এশিয়ান ইউনিভার্সিটিতে সনদ জালিয়াতির প্রমাণ পেয়েছে ইউজিসি

লেখক:
প্রকাশ: ৩ years ago

সনদ জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়ায় এশিয়ান ইউনিভার্সিটিতে তদারকি ও মনিটরিং বাড়ানোর নির্দেশনা দিয়েছে বিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।

একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়টির রেজিস্ট্রার ফারুক আহমেদের বিরুদ্ধে সনদ জালিয়াতিতে সম্পৃক্ত থাকার বিষয়টি প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়টির বাের্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যানকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।

জানা গেছে, কমিশনের পক্ষ থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর এ সংক্রান্ত চিঠি দেয়া হয়েছে।

ইউজিসির পরিচালক ওমর ফারুক স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, কমিশনের নীতিমালা অনুযায়ী মূল সনদে যৌথভাবে স্বাক্ষর করেন উপাচার্য ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এবং সাময়িক সনদে স্বাক্ষর করেন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক। বিশ্ববিদ্যালয়টির শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের যােগসাজস ব্যতিরেকে শুধুমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়টির রেজিস্ট্রার ফারুক আহমেদের একার পক্ষে সনদ জালিয়াতি করা সম্ভব নয়। যার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়টির শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা অনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িত মর্মে অনুমিত হয়।

চিঠিতে আরও বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়টি শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কোনাে কারণ ব্যতিরেকে ছাটাই, বহিষ্কার, ইউজিসির নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্বেও স্প্রিং সেমিস্টারের ব্যাকডেট দিয়ে অবাধে ছাত্র ভর্তি, সনদ বাণিজ্য, জঙ্গিবাদে মদদসহ আর্থিক, একাডেমিক ও প্রশাসনিক অনিয়মের মাধ্যমে এক অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে যা শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি।

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়টিতে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে উপ-উপাচার্য ও ট্রেজারার নেই। ২০১২ সালের পর থেকে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশে চ্যান্সেলর কর্তৃক নিযুক্ত ভাইস চ্যান্সেলরও নেই।

বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০১০ এর ৩১(৬) ধারা অনুযায়ী, চ্যান্সেলর কর্তৃক নিয়ােগপ্রাপ্ত ভাইস চ্যান্সেলর কোনো কারণে দায়িত্ব পালন করতে না পারলে সংশ্লিষ্ট বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাে-ভাইস চ্যান্সেলর অস্থায়ীভাবে উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরের দায়িত্ব পালন করবেন। তবে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাে-ভাইস চ্যান্সেলরের পদ শূন্য থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার ভাইস-চ্যান্সেলের দায়িত্ব পালন করবেন বলে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে।

সেই মােতাবেক বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ২০১২ সালের পর থেকে চ্যান্সেলর কর্তৃক নিয়ােগপ্রাপ্ত বৈধ কোনাে কর্তৃপক্ষ নেই। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়টির সাবেক উপাচার্য ড. আবুল হাসান এম সাদেক ২০১২ সাল থেকে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ এর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করছেন এবং শিক্ষার্থীদের মূল সনদসহ বিভিন্ন দাপ্তরিক ও একাডেমিক দলিলে স্বাক্ষর করছেন।

বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ অনুযায়ী ভাইস চ্যান্সেলর বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক প্রধান। তিনি একাধারে সিন্ডিকেট, একাডেমিক কাউন্সিল, শিক্ষক নিয়ােগ কমিটি, আইনে উল্লিখিত কর্মকর্তাদের নিয়ােগ কমিটিসহ
বিভিন্ন কমিটির সভাপতি। দীর্ঘ সময় ধরে চ্যান্সেলর কর্তৃক নিয়ােগপ্রাপ্ত বৈধ কোনাে কর্তৃপক্ষের অনুপস্থিতি বিশ্ববিদ্যালয়টিতে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রমে আইনগত বৈধতা, অচলাবস্থা ও শূন্যতা সৃষ্টি করেছে।

এ অবস্থায়, উপরােক্ত বিষয়াদির পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়টির স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখার স্বার্থে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ এর ৩৫(৭) ধারা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরােধ করা হলাে।